অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
আফগানিস্তান টিমকে তা-লি-বা-ন ওয়ার্ল্ড কাপে স্পনসর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বলে শুনেছি। তখন আফগান ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন এগিয়ে আসেন। নিজেই নিজের টিমের স্পনসর হন। কল্পনা করা যায়! হয়তো সকলে মিলেই নিজেদের স্পনসর নিজেরা হয়েছেন। শুধু তাই না, আফগান সুপার স্টার রশিদ খান একটি ক্রিকেট একাডেমী করেছেন। কী এমন তার বয়স আর কী এমন উপার্জন করেছেন? এইটাকে বলে দেশপ্রেম। এর প্রতিফলন খেলার সময় তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজেও প্রকাশ পায়।
এবার আমাদের প্লেয়ারদের খেলোয়াড়দের কথা ভাবুন। একজন গোস্বা করে ওয়ার্ল্ড কাপে খেলতে যাননি।
দেশে বসে বিজ্ঞাপনের মডেল হয়ে নামধাম দুটোই কামাচ্ছেন। প্লেয়ারদের মধ্যে কমিটমেন্টের প্রচণ্ড অভাব। খেলার মাধ্যমে এতো এতো অর্থ উপার্জন এবং একই সাথে তারকা খ্যাতি পেয়েছেন অনেকেই। এর মধ্যে একমাত্র মোহাম্মদ রফিক ব্যতীত আর কারও মধ্যে মানুষের জন্য কিছু করতে দেখিনি। শুনেছি মোহাম্মদ রফিক গরিব শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্কুল দিয়েছেন। আমাদের অন্য খেলোয়াড়রা রেস্টুরেন্ট দেন। দেশে কতো মানুষের কতো সমস্যা। দেশে কতো অন্যায় হচ্ছে। পূজায় মন্দিরে হামলা, মণ্ডপ ভাঙচুর সহ মানুষ মেরেছে। তাদের কাউকে প্রতিবাদ করতে দেখেছেন?
আসলে দেশ যখন সমস্যা সংকুল অবস্থায় থাকে মানুষ তখন একত্রিত হয়, দেশপ্রেমিক হয়। আফগান খেলোয়াড়দের মধ্যে এখন যা দেখছি তার কিছুটা দেখেছি আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধের আগে পরে। তখন কবিরা দেশাত্ববোধক কবিতা গান লিখতেন। শিল্পীরা দেশাত্ববোধক গান করতেন, নাটকে অভিনয় করতেন। রেডিও টিভিতে দেশাত্ববোধক গানের অনুশানের আলাদা স্লট থাকতো। এখন এ সব কিছুই হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। বড় বড় বিপর্যের পরই পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ দ্রুত উন্নতি লাভ করেছে। আমরাও এই সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি। লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়