শিরোনাম
◈ মুরাদনগরে ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে যা বললেন র‌্যাব (ভিডিও) ◈ বেনাপোল বন্দরে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ ভারতীয় ট্রাকচালক আটক ◈ ভারত- ইংল‌্যান্ড টেস্ট সি‌রি‌জে বাংলা‌দে‌শের  সৈকতের আম্পায়ারিং বিতর্ক ◈ প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, অ্যাসিড নিক্ষেপে শিশুসহ দগ্ধ ৩ ◈ বাংলাসহ বিশ্বের ৩৫ ভাষায় শোনা যাবে মক্কার জুমার খুতবা ◈ শাজাহানপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশ কনষ্টেবলকে গণধোলাই  ◈ বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন হুমকির মুখে: শিল্প, বিষ, পর্যটন ও জলবায়ুর প্রভাবে বিপন্ন জীববৈচিত্র্য ◈ উচ্ছেদের ৪৫ দিনের মাথায় ফের গজিয়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা: বাগেরহাটে সড়কপথে আবারও বিশৃঙ্খলা ◈ যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লাইটে ধস্তাধস্তির ভিডিও ভাইরাল, ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবক গ্রেপ্তার ◈ মুরাদনগরে নিখোঁজের একদিন পর বড় ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার, মাটিচাপা অবস্থায় মিলল ছোট ভাইয়ের ঘরে

প্রকাশিত : ২৯ অক্টোবর, ২০২১, ০৪:৪৫ দুপুর
আপডেট : ২৯ অক্টোবর, ২০২১, ০৪:৪৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] র‌্যাবের অভিযানে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আটক ৬

সুজন কৈরী: [২] ঢাকার সাভারের পশ্চিম রাজাশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পোশাক পরিহিত ভুয়া পুলিশসহ ৬ ডাকাত সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব-৪। আটকরা হলো- শামীম রেজা, হেলাল উদ্দিন, পারভেজ, ওয়াসিম ইসলাম, নাইম খান ও ফেরদৌস আহমেদ রাজু।

[৩] র‌্যাব জানায়, আটকরা পুলিশের ইউনিফর্ম, পিস্তল, হ্যান্ডকাফ, ওয়াকিটকি, পুলিশ জ্যাকেট, পুলিশ বেল্ট ও পুলিশের ভুয়া আইডি কার্ড দিয়ে সড়কে গাড়ি থামিয়ে ডাকাতি করতো। দীর্ঘ তিন থেকে চার বছর ধরে পুলিশের ইউনিফর্ম পড়ে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও দামি জিনিসপত্র নিয়ে লুট করেছে। আটকদের মধ্যে ডাকাত দলটির মূলহোতা হচ্ছে শামীম রেজা। তিনি মাদককারবারী, এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, অস্ত্র ও মাদক মামলার আসামি। আটক হেলাল একজন গাড়িচালক, পারভেজ মেকানিক, ওয়াসিম ইলেক্ট্রিশিয়ান। এছাড়াও বাকি দুজন সহকারী হিসেবে কাজ করতো।

[৪] বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক করাকালে চক্রটিকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, একটি নকল পিস্তল, একটি পিস্তল টাইপ লাইটার, একটি কভারসহ হ্যান্ডকাফ, একটি ওয়াকিটকি, দুই সেট পুলিশ ইউনিফর্ম, পুলিশ জ্যাকেট, পুলিশ বেল্ট, ভুয়া পুলিশ আইডি কার্ড, দুটি রামদা, একটি ডেগার, একটি চাপাতি, দুটি ছুড়ি, দুটি টর্চলাইট, দুটি রশি, ৪৬৭ পিস ইয়াবা, ৩০ বোতল ফেন্সিডিল, দেড় কেজি গাঁজা, সাত গ্রাম হেরোইন, পাঁচ লিটার চোলাই মদ, ১৯টি মোবাইল ও ৪৪ হাজার ৫৭০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

[৫] শুক্রবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, আটক শামীম কিশোর বয়স থেকেই অপরাধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। তিনি গ্রামের স্কুল থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। ২০০৫ সালে ঢাকায় আসেন। একপর্যায়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন এবং মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে যান। পর্যায়ক্রমে তার নেতৃত্বে একটি ডাকাত বাহিনী গড়ে তোলেন। সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটি রাতের আধারে পুলিশের ভুয়া ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় টর্চ লাইট দিয়ে গাড়ি থামিয়ে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল এবং দামি জিনিসপত্র তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে লুটপাট করতেন।

[৬] শামীম ২৫-৩০টি অটোরিকশা ও সিএনজির মালিক। তার নামে অস্ত্র, মাদক ও ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি নিজেকে পুলিশ বাহিনীর একজন সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে পরিচয় দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র, নকল আগ্নেয়াস্ত্র, নকল আইডি কার্ড, ইউনিফর্ম, ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে বিভিন্ন মানুষের সাথে প্রতারণা ও চাঁদাবাজি করতেন। তিনি সাভার এলাকায় একটি সক্রিয় ডাকাত বাহিনী গড়ে তুলেছেন।
এছাড়া শামীম বিভিন্ন সময় ভুয়া পুলিশ অফিসার সেজে তার বাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করতেন। আটকদের নামে সাভারসহ বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

[৭] এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, এর আগেও শামীম রেজা একাধিকবার চুরি, ছিনতাই, প্রতারণা ও মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জামিনে বের হয়ে এবারই প্রথম হুবহু পুলিশের ইউনিফর্ম পরে অভিনব প্রতারণায় নামেন। পুলিশের ইউনিফর্মের পাশাপাশি একজন পুলিশের যা যা প্রয়োজন সবকিছুই শামীম সংগ্রহ করেছিলেন। ৩/৪ বছর ধরে ডাকাতদল পরিচালনা করছেন। নিজেকে এসআই পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করছে দুই বছর। এরমধ্যে তিনি ৮/৯টি ডাকাতি করেছে বলে তথ্য মিলেছে। নিজের এলাকা রাজশাহীতে তিনি জমি-জমা করেছেন।

[৮] পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি ও পুলিশের ইউনিফর্ম সংগ্রহের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-৪ সিও বলেন, সুনির্দিষ্ট পরিচয় ছাড়া পুলিশের পোশাক বিক্রির সুযোগ নেই। এরপরও কোনো ফাঁকে পুলিশের পোশাক সংগ্রহ করেছেন শামীম। এসআই পরিচয়ে পুলিশের পোশাক পড়ে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। পুলিশের পোশাক সংগ্রহের ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনী বা অন্য কারো যোগসাজশ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।

[৯] পুলিশের আইডি কার্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ হেডকোয়ার্টারস থেকে যেভাবে তৈরি করা হয় ঠিক সেভাবেই তারা তৈরি করেছিলো। তবে পুরোপুরি তারা বানাতে পারেনি। তবে যারা এই আইডি কার্ড তৈরি করেছে তারাও আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। তাদেরকেও গ্রেপ্তার করে এই মামলায় আসামি করা হবে। বিভিন্ন টেইলারস আছে যারা পুলিশের ইউনিফর্ম তৈরি করে। তাদের উচিত আসলেই পুলিশ কিনা এবং পরিচিত দেখে যাচাই-বাছাই করে ইউনিফর্ম দেয়া। ঢাকাসহ জেলাগুলোতেও ইউনিফর্ম তৈরি করা হয়।
সাধারণ মানুষ কীভাবে বুঝবে আসল পুলিশ আর নকল পুলিশ? এমন প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে সদস্য পরিচয় দিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা তাদের পরিচয় দেখতে চাইবেন অথবা স্থানীয় থানা পুলিশ কিংবা র‌্যাবকে জানালেও আসল নকল পুলিশ সম্পর্কে জানতে পারবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়