আখিরুজ্জামান সোহান: [২] আমরা জানি, জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ। তাই এই কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে গোটা বিশ্বের মোড়লেরা তোদের নিজেদের দেশে বিভিন্ন উদ্যেগের পাশাপাশি নানান পন্থা অবলম্বন করছেন। তবে বরাবরের মতো এই তালিকার বাইরেই থেকে যায়, মানব জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ আমাদের যৌন জীবন।
[৩] অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, যৌন ক্রিয়ায় ব্যবহৃত কনডম, লুব, টয় পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনছে দিনকে দিন। যার ফলে, দূষিত হচ্ছে মাটি এবং পানি, বাড়ছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা। মূলত, রি-সাইক্লিং এর সুযোগ না থাকায় গলার কাটা হিসেবে যৌন বর্জ্য হিসেবে পরিবেশে ছড়িয়ে পরছে এসব বস্তু।
[৪] ভাবতে পারেন, যৌনতাকে কিভাকে কার্বনমুক্ত করা যায় বা পরিবেশ রক্ষায় আমাদের করনীয়ই বা কি?
এই বিষয়টি আলোচনা করতে আমাদের প্রথমেই জানতে হবে ইকো ফেন্ডলি সেক্স বা পরিবেশ বান্ধব যৌনতা সম্পর্কে। নাইজেরিয়ার একজন পরিবেশ বিজ্ঞানী ডক্টর আডেনিকে আকিনসেমোলু ব্যাখ্যা করেন, ইকো ফেন্ডলি সেক্স হলো যৌন ক্রিয়ায় পরিবেশ বান্ধব লুব, টয়, কনডম, বেড সিট ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশের যথাসম্ভব কম ক্ষতি করা।
[৫] বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর পুরুষদের জন্য ১০০ কোটি লেটেক্স কনডম উৎপাদন করা হয়। যার প্রায় পুরো অংশই একবার ব্যবহারের পরেই ফেলে দেওয়া হয়।
[৬] বেশিরভাগ কনডম সিন্থেটিক ল্যাটেক্সের পাশাপাশি অন্য রাসায়নিকের সংমিশ্রণে তৈরি হওয়ায় এটি পুনর্ব্যবহৃত করা যায় না। তবে, ল্যাম্বস্কিন নামে ভেড়ার অন্ত্র থেকে তৈরীকৃত কনডমটি পৃথিবীর একমাত্র পরিবেশবান্ধব কনডম হিসেবে বিবেচনা করা যায়, যার ব্যবহার সেই রোমান আমল থেকে হয়ে আসছে।
[৭] সঙ্গমের সময় লুবের ব্যবহার পুরোনো হলেও হাল আমলের বেশিরভাগ লুব পেট্রোলিয়াম জাতীয়। এসব উৎপাদনে জীবাশ্ব জ্বালানীর ব্যবহারের ফলে প্রচুর পরিমানে কার্বন বাতাসে যুক্ত হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিককালে ওয়াটার বেইজড অর্গানিক লুবের ব্যবহার ব্যাপক হারে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
[৮] টিকটকে যৌন স্বাস্থ্য নিয়ে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরী করা ডা. টেসা কমার্সের ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। তার করা কর্নস্টার্চ এবং পানি দিয়ে তৈরী লুবের রেসিপির ভিডিওটি প্রায় ৮০ লাখ দর্শক দেখেছে।
[৯] পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের পাশাপাশি যৌন জীবনেও পরিবর্তন আনা এখন সময়ের দাবী। যৌন জীবনে অযাচিত ব্যয় কমিয়ে অর্গানিক সামগ্রীর ব্যবহার এবং রি সাইক্লিং করা গেলেই শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব।
(বিবিসির হ্যারিয়েট ওরেলের প্রতিবেদন অবলম্বনে)