শিরোনাম
◈ যুদ্ধ বন্ধের শর্তেই ইসরায়েলি জিম্মিদের ছাড়বে হামাস ◈ হরলিক্স আর স্বাস্থ্যকর পানীয় নয়  ◈ বাংলাদেশে চিকিৎসা সুবিধায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী ◈ থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে  প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা ◈ যে কোনো ভিসাধারী পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারবেন  ◈ পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফে'র গুলিতে বাংলাদেশি নিহত ◈  কমবে তাপমাত্রা, মে মাসেই কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির সম্ভাবনা ◈ বাংলাদেশ-চীন সামরিক মহড়া মে মাসে, নজর রাখবে ভারত ◈ দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু: চুয়েটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, যান চলাচল শুরু ◈ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ভারত, চীন বা রাশিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত নয়: মার্কিন কর্মকর্তা

প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর, ২০২১, ০৬:১৭ বিকাল
আপডেট : ২৪ অক্টোবর, ২০২১, ০৭:৪৫ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘হাইপারইনফ্লেশন’ মার্কিন অর্থনীতিকে তছনছ করে দিতে পারে

রাশিদ রিয়াজ : টুইটারের সিইও জ্যাক ডরসে এধরনের সতর্কতা দিয়ে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রে যে দ্রুত হারে মুদ্রাস্ফীতি ঘটছে তা অর্থনীতির সবকিছু পরিবর্তন করে দিতে পারে। তিনি বলেন শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয় বরং মুদ্রাস্ফীতি বিশ্বের অন্যান্য দেশে ঘটবে। হাইপারইনফ্লেশন বলতে সাধারণত খুব বেশি এবং ত্বরিত মুদ্রাস্ফীতিকে বুঝায়। দ্য ইকোনমিস্ট বলছে বিপ্লব পরবর্তী ফ্রান্সে ১৭৯৫ থেকে ১৭৯৬ সালের মধ্যে প্রথম রেকর্ডকৃত পর্বের সাথে গবেষকরা ২০১৮ পর্যন্ত হাইপারইনফ্লেশনের সঙ্গে সাদৃশ্য এমন ৫৭টি ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। ফক্স নিউজ

কিছু মার্কিন অর্থনীতিবিদ বলছেন করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালীন লকডাউন এবং প্রচুর স্বাস্থ্যবিধিনিষেধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন পুনরুদ্ধার শুরু হলেও শ্রমিক সংকটসহ বিভিন্ন কারণে উৎপাদনশীলতা আকাঙ্খিত পর্যায়ে আনা যায়নি। এছাড়া চীনের সঙ্গে দীর্ঘসময় ধরে মার্কিন নীতিনির্ধারকদের শুল্কহার বৃদ্ধি সহ পাল্টাপাল্টি বেশকিছু সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে। তবে হাইপারইনফ্লেশন অতিমুদ্রাস্ফীতির উদাহরণ বলতে এতদিন ভেনেজুয়েলা ও জিম্বাবুয়ের অর্থনীতির হালচাল বুঝাত। ব্লুমবার্গ বিজনেসউইক এই বছরের শুরুতে এধরনের সাবধান বাণী উচ্চারণ করেছিল। একই সঙ্গে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দর উল্কাগতিতে বৃদ্ধির বিষয়টিও অর্থনীতিবিদদের উদ্বেগে ফেলেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের মহামারী ত্রাণ পরিকল্পনার কারণেও মুদ্রাস্ফীতি ঘটছে বলে অনেকে মনে করছেন। প্রকৃতপক্ষে, গ্রীষ্মের শুরু থেকে রিপাবলিকানরা মুদ্রাস্ফীতির বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়েছিল যখন গ্যাসের দাম প্রথমে উর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে এবং এর কিছুদিনের মধ্যে ভোক্তাপণ্যের মূল্যস্ফীতি ১২ মাসের মধ্যে ৫ শতাংশ বেড়ে যায়। যা ছিল ২০০৮ সালের মহামন্দার পর সবচেয়ে বড় মুদ্রাস্ফীতির ঘটনা। বিশেষ করে গ্যাসের উচ্চ মূল্য ও পণ্য সরবরাহে সংকট মার্কিন নাগরিকদের ঘাবড়ে দিয়েছে। তারা বলছেন একদিকে ঐতিহাসিক বৈশ্বিক শিপিংজটের কারণে পণসামগ্রী যোগান এবং পরিষেবা বিলম্বিত করছে ফলে টয়লেট পেপার থেকে খেলনা পর্যন্ত সবকিছুর দাম ধীরে ধীরে বাড়ছে যা একপর্যায়ে উর্ধ্বমুখী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাইডেন প্রশাসন বলছে কর্মকর্তারা পণ্যসংকট দূর করতে কাজ করছেন। এমূহুর্তে ৮০ হাজার ভারীট্রাক চালক প্রয়োজন যার অল্পই ব্যবস্থা করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি ২.৮ ট্রিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে যা এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় বৃহত্তম সংখ্যা। বার্ষিক ঘাটতি গত বছরের তুলনায় ৩৬০ বিলিয়ন ডলার কম রয়েছে। এছাড়া আগামী দশ বছরে অবকাঠামো খাতে ঘাটতি পৌঁছে যাবে ২৫৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হওয়ায় আগের বছরের তুলনায় সামান্য চলতি বছর সার্বিক পরিস্থিতির সামান্নই উন্নতি হয়েছে বলে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ শুক্রবার বলেছে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের মাঝখানে রয়েছে। তবে রিপাবলিকানরা বাইডেন প্রশাসনের ওপর এধরনের পরিবর্তন নিয়ে বেশ বিরক্ত। গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি রেকর্ড ৩.১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে কারণ কোভিড মহামারী অর্থনীতিকে থমকে দেয় এবং দেশব্যাপী লকডাউনে বাইডেন প্রশাসনকে বাধ্য করে। এর আগে মার্কিন অর্থনীতিতে ঘাটতির রেকর্ড ছিল ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার। তবে বাইডেন প্রশাসন কর রাজস্ব ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি আদায় করেছে। যা এর আগে অনুমিত ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত এবং কর্পোরেট আয়কর থেকে প্রত্যাশিত বেশি আদায়ের জন্য এই বৃদ্ধি আংশিকভাবে দায়ী। সরকারি রাজস্ব বেড়েছে ১৮.৩ শতাংশ।

মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বলছে একটি চীনা প্রাইভেট ইক্যুইটি ফার্ম দ্বারা ম্যাগনাচিপ সেমিকন্ডাক্টর কর্পোরেশন অধিগ্রহণ করার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে, যা চীনা কোম্পানিগুলি সমালোচনামূলক প্রযুক্তি শিল্পে বিদেশে বিনিয়োগ করার চেষ্টা করছে এবং এটি মার্কিন অর্থনীতিতে আরেকটি বড় বাধা সৃষ্টি করেছে। এদিকে বাইডেনের সামাজিক ব্যয় বিল সম্পর্কে ক্যাপিটাল হিলে চলমান বিতর্কের মধ্যে ঘাটতির পরিসংখ্যান ঘোষণা করা হয়েছিল, যার জন্য প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ব্যয় হবে। রিপাবলিকানরা বলছেন বাইডেন প্রশাসনের এধরনের সামাজিক সহায়তা ফেডারেল ঘাটতিকে বৃদ্ধি করবে। তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলছেন পরিকল্পনাটি ধনী মার্কিনীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কর আদায়ের মাধ্যমে ভারসাম্য সৃষ্টি করবে। রিপাবলিকানরা বলছেন যে এই পরিকল্পনাটি মুদ্রাস্ফীতিকে বরং বাড়িয়ে তুলবে। কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস প্রস্তাব করেছে যে চলতি অর্থবছরের জন্য ঘাটতি শেষ পর্যন্ত ১.১৫ ট্রিলিয়ন ডলারে নেমে আসবে এবং পরবর্তী তিন বছরে তা ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়