অপূর্ব চৌধুরী: [২] জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক ছাত্রীকে মেসে আটকিয়ে মারধর ও পরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডেকে এনে ধর্ষণ এবং গুম করার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সেই ছাত্রী সোমবার (১১ অক্টোবর) তার বিভাগের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক বরাবর একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন।
[৩] অভিযোগপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য ফৌজিয়া আফরিন প্রিয়ন্তীর বিরুদ্ধে মারধর এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও মনোবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিথুন বরাই এর বিরুদ্ধে ধর্ষণের হুমকির অভিযোগ আনা হয়েছে।
[৪] অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী ছাত্রী উল্লেখ করেন, দীর্ঘ চার মাস ধরে বিভিন্নভাবে আমাকে রাজনৈতিক ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এমনকি চড় থাপ্পড়সহ আমার উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। অবশেষে ছাত্রলীগের নেতা দিয়ে আমাকে ধর্ষণ ও গুম করার হুমকি দেয়া হয়। ক্যাম্পাসে আটকিয়ে রেখে তার ভিডিও ধারণ করা হয়েছে।
[৫] অভিযোগকারী শিক্ষার্থী বলেন, আমাকে মেসের তুচ্ছ ঘটনায় চড় মারে প্রিয়ন্তি আপু। পরে আমাকে রাজনৈতিকভাবে ভয় দেখানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের সিট সে বাকি মেয়েদের দিবে বলেও জানায়। মেসে মারধরের ঘটনার পরের দিন ক্যাম্পাসে গিয়ে আমি ভয়ে মাফ চাইলেও আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এছাড়া উনার সাথে থাকা মিথুন বরাই আমাকে ধর্ষণ করার হুমকি দেয়। আমি নিরাপত্তাহীনতায় এ অভিযোগ করেছি।
[৬] এদিকে এ অভিযোগের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে ফৌজিয়া আফরিন প্রিয়ন্তী বলেন, অভিযোগকারী রাতে পাঁচ-ছয়জন পুরুষ এনে আমাকেসহ সবাইকে অকথ্য ভাষায় থ্রেট দেয়। রাতে মেয়েদের পোশাক কেমন থাকে সবাই জানে। এটা আমাদের জন্য খুবই বিব্রতকর।
[৭] তিনি আরও বলেন, মেয়েটির পক্ষে মেসের কোন সদস্য নেই। তার বিরুদ্ধে পুরাতন মেস ব্যবসার অভিযোগ আছে।
[৮] মিথুন বরাই বলেন, আমি কাউকে কোন হুমকি দেইনি। আমাকে কেন এঘটিনায় টানছে বুঝতে পারছি না। তবে শুনেছি মেয়েটি একজন মেস ব্যবসায়ী।
[৯] এদিকে অভিযোগকারী সেই ছাত্রী আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ দেয়ার পর আমাকে আবার সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনের সামনে মিথুন বরাই ধর্ষণের হুমকি দেয়। কিন্তু মিথুন বরাই তা অস্বীকার করে বলেন, মেয়েটি বাইরের একটা ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এনে আমাকে হুমকি দিয়েছে।
[১০] এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমি একপক্ষের (প্রিয়ন্তী) অভিযোগ পেয়েছি। তবে ঘটনাটি ক্যাম্পাসের বাইরের। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের সাথে কথা বলতে বলেছি।
[১১] এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বলেন, আমি এক পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। আমরা শিক্ষার্থী সহ দুই বিভাগ ও প্রক্টর স্যার সহ বসে এটি সমাধানের চেষ্টা করব।
আপনার মতামত লিখুন :