সুজন কৈরী: [২] অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি টোয়েন্টিফোর টিকেটি ডট কমের (২৪টিকেটি ডটকম) বোর্ড অব ডিরেক্টরের একজন সদস্য এম মিজানুর রহমান সোহেলকে রোববার গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের একটি টিম। কাফরুল থানায় সিআইডির করা অর্থপাচার আইনের মামলায় ‘টোয়েন্টিফোর টিকেটি ডটকমের এই পরিচালককে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটির চার নম্বর আসামি তিনি।
[৩] এর আগে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠান আরেকজন পরিচালক রফিবুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সিআইডি জানিয়েছে, প্লেনের টিকিট বিক্রির নামে প্রতারণা করে ভ্রমণপিপাসুদের প্রায় ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সিটি।
[৪] সোমবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার সাইবার টিমের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, ২০১৯ সালের মে মাসে অনলাইন টিকিটিং এজেন্সি টোয়েন্টিফোর টিকেটি ডটকম যাত্রা গুরু করে। গ্রেপ্তার দুইজন ফেসবুক ও ওয়েবসাইটে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে অর্থ আত্মসাৎ ও ডিজিটাল প্রতারণা করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এ পর্যন্ত তারা প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
[৫] সিআইডি জানায়, সাধারণত এয়ারলাইন্সগুলো টিকিটের নির্ধারিত মূল্যে ৭ শতাংশ ছাড় দিয়ে থাকে। সেখানে ‘২৪টিকেটি ডটকম’ ছাড় দিত ১২ শতাংশ। এ ছাড়ের কারণে অনেক এজেন্ট তাদের কাছ থেকে টিকিট কিনে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করতো। তাদের টিকিট নিয়ে গ্রাহক বিমানবন্দরে এসে জানতে পারেন, টিকিটটি বিক্রি হয়নি।
[৬] এদিকে রোববার বিকেলে আইডি খোলা এবং আয়ের নানা প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রিং আইডির অন্যতম এজেন্ট মো. রেদোয়ান রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
[৭] এ বিষয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে রেদোয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ২০১৮ সাল থেকে রিং আইডিকে ইউজার হিসেবে কাজ শুরু করে। গত ৭-৮ মাস আগে রিং আইডিতে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ পান। এই সময়ের মধ্যে তিনি প্রায় ছয়শতাধিক মানুষের কাছে আইডি বিক্রি করে প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
[৮] প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রেদোয়ান জানিয়েছেন, প্রতিটি সিলভার আইডি ১২ হাজার, গোল্ড আইডি ২২ হাজার, প্রবাসী গোল্ড আইডি ২৫ হাজার, প্রবাসী প্লাটিনাম আইডি ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন।
[৯] কামরুল আহসান জানান, বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটের মতো তারাও অস্বাভাবিক ডিসকাউন্টে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রি এবং ক্রেতাদের কাছ থেকে ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে লেনদেন পরিচালনা করে গ্রাহকদের বিভিন্নভাবে প্রতারণা করছিলো। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
গত ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের হওয়া একাধিক মামলা তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।