মাজহারুল ইসলাম: [২] খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ছোটবন্ড গ্রামের তরুণ কৃষক মৃত্যুঞ্জয় মন্ডল কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় প্রথমবারের মত তরমুজের গুড় উৎপাদন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোছাদ্দেক হোসেনের সহযোগিতায় মৃত্যুঞ্জয় ২০১৯ সাল থেকে পরপর তিন বছর তরমুজ চাষ করে সফল চাষী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
[৩] বরাবরই তরমুজ উচ্চ মূল্যের ফসল, তবে কিছু কিছু তরমুজ সাইজে কিছুটা ছোট হয় বা আকার আকৃতিতে কিছুটা কম থাকে, ফলে গ্রেডিং এ টেকে না, যা ক্যাট নামে পরিচিত। এগুলো বিক্রি হয়না এবং অনেক সময় মাঠেই থেকে যায়। কোন কোন সময় বৃষ্টিতে পঁচে এগুলোর দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। মৃত্যুঞ্জয় ঐ সমস্ত ক্যাট নিয়ে কোন রকম মেশিন ছাড়া একেবারে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে তরমুজ কেটে এর লাল অংশ বের করে, নেট দিয়ে ছেঁকে জুস বের করে চুলায় জালিয়ে তোগুড় তৈরি করছেন। প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি এ গুড় অত্যন্ত সুস্বাদু এবং অনেক দিন সংরক্ষণ করা যায়।
[৪] মৃত্যুঞ্জয় বলেন তরমুজের রস মিষ্টি এবং পাতলা, এজন্য আমার মনে হয়েছিল এর থেকে গুড় করা সম্ভব এবং আমি শুরু করে সফল হয়েছি। প্রায় তিন কেজি গুড় তৈরি করে আমি নিজে, পাড়া প্রতিবেশী, উপজেলা কৃষি অফিসার স্যারসহ অনেককেই খায়য়েছি। সকলে প্রশংসা করেছে। অনেকেই ৩০০ টাকা কেজি দরে কিনতে চেয়েছে। আগামীতে এর উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করব।
[৫] উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, এটি কৃষিতে এক দারুণ অর্জন। আমাদের দেশের গুড় শিল্প দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। একদিকে তাল, খেজুর গাছের সংখ্যা অপরদিকে গাছির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে গুড় শিল্প হুমকির দিকে চলে যাচ্ছে।
[৬] আমাদের উপক‚লীয় লবণাক্ত এলাকা তরমুজ চাষের অত্যন্ত উপযোগী। আমাদের সিজনে কৃষক অনেক সময় ন্যায্যমূল্য পায় না এবং তরমুজের ক্যাটগুলো বিক্রি হয়না। আমার বাণিজ্যিকভাবে ঐ তরমুজ নিয়ে গুড় তৈরি করলে কৃষক একদিকে যেমন তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাবে, অপরদিকে ফসল অপচয় রোধ হবে।
আপনার মতামত লিখুন :