সুজন কৈরী : [২] ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম কিউকমের হেড অব সেলস (কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) অফিসার আরজে নীরবকে (হুমায়ুন কবির নীরব) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ভোর রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ। শুক্রবার আদালত তার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
[৩] ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এডিসি হাফিজ আল ফারুক বলেন, বৃপহস্পতিবার রাতে আব্দুল্লাহ খান শৈশব নামের একজন ভুক্তভোগী গ্রাহক তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় কিউকমের এমডি রিপন ও তার স্ত্রী সৈয়দা তাসমিনা তারিনসহ ৭জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫জনকে আসামী করে মামলা করেন। মামলার চার নম্বর আসামি নীরব। এরই প্রেক্ষিতে শুক্রবার ভোররাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। শুনানি শেষে আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
[৪] দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, মামলার আসামীরা ফোস্টার পেমেন্টের মাধ্যমে ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ৬৮৯ টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করেন। মামলার বাদি ও তার পরিচিত কয়েকজন পণ্য কেনার আশায় টাকাগুলো ফোস্টার পেমেন্টের মাধ্যমে কিউকমে জমা দিয়েছিলেন।
গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে গ্রাহকের অর্থ লোপাটের ভয়াবহ চিত্র। অভিযোগ রয়েছে, ই-অরেঞ্জ ১ হাজার ১০০ কোটি, ইভ্যালি ৯৫০ কোটি, ধামাকা ৭৫০ কোটি, নিরাপদ ৭৮ কোটি, এসপিসি ২৬৮ কোটি, দালাল প্লাস ২০০ কোটি, কিউকম ৪০০ কোটি এবং সিরাজগঞ্জ শপ গ্রাহকের ৪৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
[৫] পল্টন থানার একটি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় ৩ অক্টোবর কিউকমের সিইও রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, রিপন মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন- কিউকম প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করে পণ্য অনলাইনে কেনাবেচা করছিলো। তাদের নিজস্ব ব্রান্ডিং করার জন্য তারা ব্যাপকভাবে মোটরসাইকেল বিক্রি করে। বিভিন্ন অফারের মাধ্যমে কিউকম লোভনীয় দামে মোটরসাইকেল বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছিল।
[৬] বাজারে যে মোটরসাইকেলের দাম ১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, সেটি তারা ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দিত। বিপুল সংখ্যক ক্রেতা অর্ডার করে মোটরসাইকেল না পেয়ে হতাশায় ভোগেন। এ ছাড়া রিপন মিয়া গ্রাহকদের পণ্য ডেলিভারির আরও ২৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।