শাহীন খন্দকার: [২] বিশ্ব ব্যাংক বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে।
[৩] বিশ্ব ব্যাংকের এক গবেষণায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবসংক্রান্ত এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এ গবেষণার ফল তুলে ধরা হয়।
[৪] বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় প্রচুর বৃষ্টি হয়েছিল। ৪৫ বছরে এমন বৃষ্টি আর হয়নি। পরবর্তী মাসগুলোতেও অনেক বেশি বৃষ্টি ছিল। যার কারণে মশার উপদ্রব বেড়েছিল। তখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ মারা যায়।
[৫] ডেঙ্গু জ্বর একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা এডিস ইজিপ্টি মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। শরীরে তীব্র ব্যথা সৃষ্টির কারণে এর ডাকনাম ‘ব্রেকবোন ফিভার’।
[৬] ২০১৯ সালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের সব বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়। তবে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ১৭৯। ডেঙ্গুতে ১৮ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এবার।
[৭] বিশ্ব ব্যাংক বলছে, সা¤প্রতিক এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের ১৬ শতাংশ মানুষ বিষণ্নতায় আক্রান্ত। আর ৬ শতাংশের মধ্যে উদ্বেগ লক্ষ করা গেছে। এ বিষণ্নতা ও উদ্বেগের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের সম্পর্ক রয়েছে।
[৮] প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশে গণ তাপমাত্রা বেড়ে গেছে শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ধীরে ধীরে লোপ পাচ্ছে ঋতুভেদে আবহাওয়ার বৈচিত্র্য।
[৯] সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে গড় বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় দীর্ঘায়িত হচ্ছে বর্ষাকাল। অথচ যে সময়টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হত আগে, সেই জুন-অগাস্ট মৌসুমে গড় বৃষ্টিপাত কমে যাচ্ছে। ১৯৯০ সালের পর থেকে পুরো বিশ্বেই এইডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রতি এক দশকে দ্বিগুণ হচ্ছে।
[১০] বর্ষাকালের তুলনায় শুকনো মৌসুমে সংক্রামক রোগের প্রবণতা ১৯দশমিক ৭ শতাংশ কমে আসে। ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার মত মশাবাহিত রোগের ক্ষেত্রে এটা আরও বেশি প্রযোজ্য। এসব রোগে প্রতিবছর যে পরিমাণ মানুষ আক্রান্ত হয়, তার ২৫ শতাংশ হয় বর্ষাকলে, আর শীতকালে হয় ১৪ শতাংশ।
[১১] অনুষ্ঠানে সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা। নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে এ গবেষণা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
[১২] আলোচনায় অংশ নিয়ে পরিবেশবিদ সেলিমুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যেসব গবেষণা হয়, তাতে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর গবেষকদের ভূমিকা কম। এ ধারায় পরিবর্তন আনতে হবে। সম্পাদনা : খালিদ আহমেদ