আনোয়ার হোসেন: [২] ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে মৌসুমি আকতার (২০) নামে এক গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে। ২৬ দিন বয়সী ওই গৃহবধূর এক পুত্র সন্তান রয়েছে। তবে মৌসুমি আকতারের শ্বশুরবাড়ির লোকজন অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলছে, গৃহবধূ নিজেই নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
[৩] জানা গেছে, সোমবার ভোররাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের লালাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধূকে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রংপুরে মেডিকেলে রেফার্ড করে। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভর্তির জন্য রেফার্ড করা হয়।
[৪] বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহাবুব আলম জানান, কেরোসিনের আগুনে গৃহবধূর শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে। হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় তাঁর জ্ঞান ছিল না। আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করি।
[৫] অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের লালাপুর গ্রামের সাজেদুর রহমানের স্ত্রী। ও আমজানখোর ইউনিয়নের মমিনটলা গ্রামের সমির উদ্দীনের মেয়ে। দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে মৌসুমি আকতার ও সাজেদুর রহমানের বিয়ে হয়েছিলো।
[৬] মেয়ের বাবা সমিরউদ্দীন মঙ্গলবার মোবাইলে জানান, বাচ্চা প্রসবের সময় মেয়ের জামাই ও তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছিলো। বাচ্চা প্রসবের পর মেয়ে আমার বাড়ি ছিলো। এক সপ্তাহ হলো তাকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েছি। সেই কথা কাটাকাটির জের ধরেই জামাই ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়ের উপর কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
[৭] তবে লালাপুর গ্রামে গৃহবধূর বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিয়ের পর থেকেই সংসার করবে না বলে মৌসুমি ও তাঁর স্বামীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকত। কিন্তু কি কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তা কারওই জানা নাই।
[৮] স্থানীয় ইউপি সদস্য রাশেদুজ্জামান বলেন, ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। কিন্তু গৃহবধূর পরিবার চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত থাকায় বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।
[৯] মৌসুমি আকতারের স্বামী সাজেদুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
[১০] বালিয়াডাঙ্গী থানার তদন্ত অফিসার আব্দুস সবুর বলেন, ঘটনাস্থলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শন করেছেন। এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সম্পাদনা: হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :