মোজাফ্ফর হোসেন : পিঁপড়ের বেঁচে থাকার ভেতর একধরনের নির্মল আনন্দ আছে। নির্ঝঞ্ঝাট স্বাধীন মনে বেঁচে থাকার সুখ তাদের চেনা। কথায় কথায় আশেপাশের হাতিঘোড়াদের সালাম ঠোকার দায় থাকে না। [১] পিঁপড়ের সালাম গ্রহণ করার মতো সূ² ও আন্তরিক দৃষ্টি হাতির থাকে না। [২] পিঁপড়ে এতো ছোট যে হাতি পিষে মেরে ফেলতে পারে না। সমস্যা যতো হাতির আশেপাশের গরু-ছাগলদের। হাতিকে স্মরণ ও সমীহ করতে করতে তাদের বেঁচে থাকার আনন্দ চলে যায়। পিঁপড়ের কোনো কিছুর দায় নেই।
তখন আমি প্রাইমারিতে পড়ি। স্কুলের সামনের রাস্তার এপাশ-ওপাশ হচ্ছিলো একপরিবার পিঁপড়ে। লাইন ধরে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই, যেন অনন্ত উদ্বাস্তু-যাত্রা। কিন্তু কী নিশ্চিন্ত, কী নির্লিপ্ত! সেদিন কী মনে করে পিঁপড়ে-দলের সর্দারকে আমি সম্মান জানিয়ে পথ ছেড়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। মনে হচ্ছিলো, এক পৃথিবী মানুষের ভেতর নগন্য একজন হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে পিঁপড়েদের সর্দার হওয়া অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। লেখক : কথাসাহিত্যিক