শিরোনাম
◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৭ ফুটবলারসহ ৭৮৫ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের মৃত্যু ◈ পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলিদের সাথে তাদেরই সেনা জড়ালো সংঘর্ষে! (ভিডিও) ◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি ◈ বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স: কীভাবে পাবেন, কী কী শর্ত মানতে হবে?

প্রকাশিত : ০২ অক্টোবর, ২০২১, ০৪:০৩ সকাল
আপডেট : ০২ অক্টোবর, ২০২১, ০৪:০৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: গরিবের সন্তানদের কেবল কেরানি, পিয়ন, মিস্ত্রি ইত্যাদি বানানোর এই কাররিকুলাম

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: বাংলা মাধ্যমের নতুন প্রস্তাবিত কাররিকুলামের উদ্যেশ্য কী? উদ্যেশ্য হলো বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত, দেশপ্রেমিক, উৎপাদনমুখী, অভিযোজনে সক্ষম সুখী ও বৈশ্বিক নাগরিক হিসাবে গড়ে উঠে। এই উদ্যেশ্যে তারা ‘ভালো থাকা’ এবং ‘জীবন ও জীবিকা’ নামক দুটি বিষয়কে সংযোজন করছেন। এইসব বিষয়তো থাকবে কারিগরি বোর্ডের অধীনে শিক্ষা মাধ্যমে। অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ে যারা এমন কিছু পড়তে চাইবে যাতে আর দুই বা তিন বছর পড়লে প্লাম্বার, মিস্ত্রি, ইলেক্ট্রিসিয়ান ইত্যাদি কিছু হয়ে কিছু একটা করে খেতে পারে। আবার ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি’ নামক একটি বিষয় ঢুকিয়ে এটিকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট পর্যায়ে নামিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব। অথচ অষ্টম শ্রেণী পড়ার পর কেউ যদি কর্ম নির্ভর লেখাপড়া করতে চায় তার ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আছে যেমন কারিগরি স্কুল, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ইত্যাদি।

উচিত ছিলো এই কর্মমুখী শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে, ভালো শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে উন্নতমানের করা। তা না করে এখন মূল স্ট্রিমের শিক্ষার্থীদের কর্ম নির্ভর শিক্ষা দেওয়ার অর্থ হলো আমরা চাচ্ছি না আমাদের শিক্ষার্থীরা বড় বিজ্ঞানী, বড় ডাক্তার, বড় ইঞ্জিনিয়ার হউক। সরকার চাচ্ছে শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষিত না হয়ে স্কুল কলেজেই এমন কিছু শিখুক যেন তারা কলেজ পাশ করেই পরিবারের হাল ধরতে পারে। সেই জন্য নবম শ্রেণীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান আর রসায়নের মতো বিষয়কে দুই-তৃতীয়াংশ করে কমিয়ে একটি বিষয় বানানোর প্রস্তাব। ওদিকে উচ্চতর গণিত একদম উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিহাস নামক কোনো বিষয়ই রাখা হচ্ছে না। অথচ ইতিহাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সময়ের অক্ষ ধরে হাঁটতে পারে।

দেশে কিন্তু শিক্ষার আরেকটি সমান্তরাল মাধ্যমে আছে যেখানে উচ্চবিত্তের সন্তানরা পড়ে। এখন কথা হলো তাদের কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত, দেশপ্রেমিক, উৎপাদনমুখী, অভিযোজনে সক্ষম সুখী ও বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজন নেই? এই ইংরেজি মাধ্যমে কোনো সরকারই কখনোই হাত দেয়নি। ওখানে যারা পড়বে তারা যেন বিশ্বমানের শিক্ষা পায় সেটা নিশ্চিত করা হয়। কেন তাদের বুঝি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত দেশপ্রেমিক, উৎপাদনমুখী, অভিযোজনে সক্ষম সুখী ও বৈশ্বিক নাগরিক হওয়ার দরকার নেই? যতো দরদ আর খেলামেলা সব গরিবের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে? এই কাররিকুলাম কার্যকর হলে দেশের সর্বনাশ ঘটবে। আমাদের গরিবের সন্তানদের কেবল কেরানি, পিয়ন, মিস্ত্রি ইত্যাদি বানানোর এই কাররিকুলাম অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়