শোয়াইব সর্বনাম: ঢাকার সবচেয়ে কম উপার্জনকারি লোকেরা সম্ভবত আজিজ মার্কেটের সেলসম্যান ধরনের লোকেরা।
সকাল দশটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ডিউটি করে কয় টাকা পায় তারা? আজিজমার্কেটে ব্যবসা করেন এমন কিছু পরিচিত দোকান মালিক বলেন, ৪-৫ হাজার টাকা হইলেই এইরকম লোক পাওয়া যাবে।
তারা আরও বলেন, কর্মীদের বেশিরভাগই নারী, আশেপাশের মেসে হয়তো রুম ভাড়া করে থাকেন তারা।
এদের অনেকে আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনাও করে। উপার্জন কম হলেও গার্মেন্টসে চাকরি করার চেয়ে সেলসগার্লের চাকরি সম্মানজনক বলে মনে করা হয় সমাজে।
দেশের সবচেয়ে জমকালো ইভেন্ট বইমেলা কিংবা বানিজ্যমেলার শোরুমগুলাতে যে পার্টটাইম জব দেয়া হয়, তাদের স্যালারী কত? ঈদ কিংবা পূজাতে আড়ং ইত্যাদি বড় বড় ব্যবসায়িরা যাদের পার্টটাইম নিয়োগ দেয়, তাদের পার আওয়ার কত টাকা দেয়া হয়?
দুঃখের বিষয়, এইটা এতটাই ভাসমান পেশা যে এই পেশাজীবিদের কোন সংগঠন হইতে পারে নাই। যেন এদের কোন দাবীদাওয়া নাই।
মাত্র চার হাজার টাকায় ঢাকা শহরে কারো একমাস তিনবেলা ডালভাতের সংস্থান হয়? সে থাকে কই? জামাকাপড় কেনার টাকা পায় কই? অসুখ বিসুখ হয় না? এমন দুর্নীতিগ্রস্থ দেশ, এত এত এত বৈষম্য, রাতারাতি তা পালটানোর কোন সুযোগ নাই। তবে উদ্যোগ নেয়ার সুযোগ আছে।
আমি ভাবি, এদের জন্য বখশিশ ধরনের চর্চা চালু করা যায় কিনা। বারে রেস্টুরেন্টে যেমন দেয়া হয় আরকি। মাসে অন্তত একজন সেলসওয়ার্কারকে তো দেয়া যেতেই পারে, হয়তো একদিন একটা আইসক্রিম কিনে খাবে, কিংবা দুইটা হিস্টাসিন কিনতে হবে। হয়তো ফোনে টাকা ভরে প্রেমসম্ভাব্য কাউরে কল দিবে, এদের মধ্যে কেউ হয়তো সেকেন্ডহ্যান্ড স্মার্টফোন কেনার টাকা জমাচ্ছে। মাস ছয়েকের মধ্যে দেখা যাবে তারা অনলাইনে জব সাইটগুলোতে সিভি ড্রপ করে ফিয়ান্সেকে টেক্সট দিবে, বাবু খাইছ?
আমি বিশ্বাস করি, এতটুকু বৈষম্য কমায়ে আনা ঢাকার মধ্যবিত্তের জন্য খুব কঠিন কাজ না।