শরীফুল ইসলাম অপু : পত্রিকায় তাঁর প্রায়ই কলাম পড়তাম, উনার ক্রিকেট বিশ্লেষণী জ্ঞান ছিলো বিশ্বমানের। জালাল আহমেদ চৌধুরী ব্যক্তিতে আটকে না থেকে ঘটনায় ঢুকতেন, পাঠকদের জানাতে চেষ্টা করতেন উনার পাখির চোখে যা দেখছেন তাই। উনার লিখায় ক্রিকেট শিল্প আকারে সামনে আসতো, কত খুঁটিনাটি ব্যাপার গুলোকে তিনি অন্যরূপ দিতেন, যা সাধারণের চোখে দেখার সুযোগ নেই। আমার মতো আরো অনেকে সেসব পড়ে সমৃদ্ধ হতো, এরমধ্যে ক্রীড়ালেখকের সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়। ঢাকাপোস্ট
একজন ক্রিকেট প্রশিক্ষক হিসেবে তিনি ছিলেন ‘প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষক’, শুধু খেলোয়াড় সৃষ্টিই নয়, খেলোয়াড়ের আপাদমস্তক দেখতেন তিনি। জাতীয় পর্যায়ে সহ দেশের আনাচে-কানাচে ক্রিকেটার সৃষ্টিতে কাজ করছে অসংখ্য কোচ, এই কোচদের গড়ে তুলতে এই মানুষটির অবদান ‘জাতীয় পুরস্কার পাবার’ মতোই। উনার জগতের সবাইকে তিনি ধারণ করতে জানতেন, নিজের মতো করে ভাবতে পারতেন। ভুল করলে ধরিয়ে দিতেন, অসংলগ্ন কিছু দেখলে বুঝিয়ে দিতেন। বিনয় ও যোগাযোগ দক্ষতায় তিনি অনুকরণীয়। তিনি ছিলেন আজন্ম মাঠের মানুষ, সত্যিকারের কিংবদন্তি।
মৃত্যু অনিবার্য জিনিস, কিন্তু কিছু মানুষের বেঁচে থাকায় শুধু মানুষ নয়, দেশ সমৃদ্ধ হয়। জালাল আহমেদ চৌধুরী তেমনি একজন, এদেশের ক্রিকেটকে তিনি সমৃদ্ধ করে গেছেন আমৃত্যু। উনার মতো শুদ্ধ চোখে এদেশের ক্রিকেটকে আর কেউ দেখেছে কিনা, জানা নেই।
আমরা ছোট্ট শহরে ছোট্ট ভাবে ক্রিকেটের সাথে সম্পৃক্ত,উনার সান্নিধ্য খুব একটা পাইনি বললেই হয়। তবুও দূর থেকে আমাদের কাছেও তিনি ‘স্যার’, পরম শ্রদ্ধেয়। এটি তিনি তাঁর ব্যক্তিত্ব ও জ্ঞান দিয়ে অর্জন করেছেন। ভালো থাকবেন স্যার, এদেশের ক্রিকেট আজ যতটুকু, এতে আপনার নামটা অম্লান হয়ে আছে, থাকবে চিরদিন।
লেখক : ক্রীড়া লেখক ও সার্টিফায়েড ক্রিকেট আম্পায়ার, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড