মো.ইউসুফ মিয়া : তবে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি।পানি কমতে শুরু করলেও রাজবাড়ীর বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানি কমতে শুরু করায় ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে পদ্মা পারের মানুষের মধ্যে। এছাড়াও পানিবন্দি রয়েছে জেলার ৬৭ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ।
কয়েকদিনের পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার বিস্তীর্ন চরাঞ্চল এলাকা প্লাবিত রয়েছে।ডুবে গেছে ঐ সব এলাকার চলাচলের একমাত্র যাতায়াতের রাস্তা।
সোমবার(৬ আগস্ট) রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো) তথ্য সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় রাজবাড়ীর তিনটি গেজ স্টেশন পয়েন্টের মধ্যে দুটি পয়েন্টে পদ্মার পানি কমেছে, এবং একটি পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু পানি কমলেও সব পয়েন্টেই পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। রাজবাড়ীর তিনটি গেজ পয়েন্টের মধ্যে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া গেজ পয়েন্টে পদ্মার পানি ৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাংশার সেনগ্রাম পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং সদরের মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ২৬ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে কয়েকদিনের পানি বৃদ্ধিতে জেলার ৫ টি উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের ৬৩ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।পানি বৃদ্ধিতে ঐ সব এলাকার অধিকাংশ ঘর-বাড়িতে পানি উঠে বসবাস করা যাচ্ছে না ।এতে মানবেতর জীবনযাপন করছে পানিবন্দি মানুষগুলো।দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকট ও গোখাদ্যের সংকট। জেলায় পানিতে তলিয়ে যাওয়া ১ হাজার ৪৫ হেক্টর ফসলি জমির মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩২৬ হেক্টর ফসলি জমি।
জানা গেছে, পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার নদী তীরবর্তী অঞ্চলের ১০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে। এতে করে সরকার ঘোষিত আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলেও শিক্ষার্থীদের পাঠদান কর্যক্রাম ব্যহত হবে।এতে করে হতাশ হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।
মিজানপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও আগামী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিন উদ্দিন টুকু মিজি বলেন, এই ইউনিয়নের পুরোটাই পদ্মা চর ঘেশে তাই বন্যার পানি দ্রুতই প্লাবতি হয়। পানি ওঠায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। প্রায় দেড় হাজারেরও বেশী পরিবার কিছুদিন যাবৎ ধরে পানিবন্দি রয়েছে। অধিকাংশ বাড়ির টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে আছে। ফলে চরের মানুষ বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছে।
জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদ বলেন,গত এক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকলেও আজকে থেকে পানি কমতে শুরু করেছে।আশা করছি এই সপ্তাহের মধ্যে পানি বিপৎসীমার নিচে চলে আসবে।
জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুল হক বলেন, এক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় জেলায় ১০ হাজর ১৩৭ টি পানিবন্দি পরিবারের তালিকা পাওয়া গেছে।ইতিমধ্যে সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি পরিবারকে ইতিমধ্যে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত ২৪৮ মেট্রিক টন চাল ও নগদ সাড়ে ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।