মনিরুল ইসলাম: [২] আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের বিচার করতেন।
[৩] শনিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সংসদ অধিবেশনে বিল পাসের প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ও ওই ঘটনার বিচার কার্যক্রম বন্ধে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি’র বিষয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশিদের বক্তব্যের জবাবে তিনি একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশ শুরু হয়।
[৪] আইন মন্ত্রী বলেন, বিএনপিকে আমার প্রশ্ন, যদি খুনি জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা হতেন, কেউ কি তার হাতটা চেপে ধরেছিলো যে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাবে না? কেউ কি তার হাতটা চেপে ধরেছিলো যে ২৬ সেপ্টেম্বর এই ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স পাস করা হয়েছে, এই অর্ডিন্যান্স বাতিল করা যাবে না? এরকম তো কেউ করেনি। উনি এই বিচারটা করলেন না কেন?
[৫] তিনি বলেন, যতোক্ষণ পর্যন্ত আপনারা বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে গ্রহণ না করবেন, ততোক্ষণ তর্ক-বিতর্ক বন্ধ হবে না।
[৬] মন্ত্রী বিএনপির সদস্যকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা গ্রহণ করেন, আর না করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তাতে কিছু যায় আসে না। তার কারণ তিনি সত্যি সত্যিই জাতির পিতা। বাঙালি জাতি সেটা জানে এবং বাঙালি জাতি সেটা ধরে রাখবে। সেখানে এই বিতর্ক চলবেই, যতোক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতিকে পাকিস্তানিকরণে বিএনপির যে উদ্দেশ্যে ছিলো, সেটা ধুয়ে মুছে শেষ হয়ে না যাচ্ছে।
[৭] আনিসুল হক বলেন, সেদিন সুপ্রিমকোর্ট বার এসোসিয়েশনের সম্পাদক, বিএনপি সমর্থিত একজন ভালো ক্যাডার। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, কালুরঘাটে সেদিন যদি খুনি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিতো এবং যদি গুলি না করতো পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর ওপরে তাহলে স্বাধীনতা কোথায় থাকতো সেইটা তিনি উল্লেখ করেছেন। ইতিহাস নাকি অন্যরকম হতো। আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি, সেখানে যারা এরকম মিথ্যা কথা বলার ধৃষ্টতা দেখায় তাদের কি কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে কেউ মনে করবে?
[৮] এর আগে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, হানাহানি ও প্রতিহিংসার রাজনীতির মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালনা করা হচ্ছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছে।
[৯] তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, ১৫ আগষ্টের সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কোথায় ছিলো। ওই সময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিলো। পার্লামেন্ট ছিলো আওয়ামী লীগের। বঙ্গবন্ধুর লাশকে সৎকার না করে সংসদ বহল রেখে নতুন মন্ত্রীসভা শপথ নিয়েছে। যারা শপথ নিয়েছিলেন তারা সকলেই আওয়ামী লীগের। আমরা ৪৫ বছর আগের ওই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক করতে চাই না। আমরা বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানাতে চাই। জাতীয় নেতাদের সম্মান জানাতে চাই। যারা যেটা প্রাপ্ত, সেটা দেওয়ার মাধ্যমে জাতির কল্যাণ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।