লিহান লিমা: [২] বৃহস্পতিবার দ্য ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ২০১৯ সালে মাত্র ৯টি দেশে ৩ লাখ ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ চরম তাপদাহের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন। এতে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়, চরম আবহাওয়াজনিত মৃত্যুসংখ্যা অপ্রতিরোধ্য, উপরুন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এটি আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিএনএন
[৩] তাপদাহের ফলে স্ট্রোক, অঙ্গ এবং মস্তিস্কের ক্ষতি হতে পারে এটি পূর্বে জানা থাকলেও ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন ধরণের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনির দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, ফুসফুসের জটিলতার মতো নির্দিষ্ট রোগের জন্য দায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট চরম তাপমাত্রা।
[৪] সংখ্যার ভিত্তিতে, ১৯৮০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তীব্র তাপদাহজনিত মৃত্যু ৭৪ শথাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বের উষ্ণ অঞ্চলগুলোতে তাপদাহজনিত মৃত্যুহার পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। এই সময়ে ঠান্ডাজনিত কারা মারা গিয়েছেন ১৩ লাখ মানুষ, যা ১৯৯০ সালের পর ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
[৫] একটি গবেষণায় ৯টি দেশে সাড়ে ৬ কোটি মৃত্যু বিশ্লেষণ করা হয়েছে- যা বৈশ্বিক তাপমাত্রার পরিসরের ৯৫ শতাংশ এবং বিশ্ব জনসংখ্যার ২৯ শতাংশ।
[৬] ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট অফ হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের সহ লেখক ক্যাটরিন বুকার্ট এক বিবৃতিতে বলেছেন, বেশিরভাগ অঞ্চলে ঠান্ডা তাপমাত্রা স্বাস্থ্যের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে। তবে আমাদের বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, তীব্র তাপদাহের ক্ষতি ঠান্ডার চেয়ে অনেক বেশি বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার অনেক অংশে যে অঞ্চলগুলো কি না ইতোমধ্যেই উষ্ণ।
[৭] তাপদাহের সময় হাসপাতালে ভর্তি এবং জরুরী কক্ষের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায় এবং এটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, গর্ভাবস্থার বিরুপ প্রতিক্রিয়া, জন্মগত ত্রুটি এবং স্বাস্থ্যের যত্নের ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রাপ্তবয়স্ক এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের সার্মথ্য এই এমন মানুষরা সহজেই স্বাস্থ্যের ওপর তাপদাহের প্রভাব বুঝতে পারেন।
[৮] চরম তাপদাহ বিশ্বজুড়ে আরো সাধারণ, গুরুতর এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠছে এবং গবেষণায় দেখা গেয়ে এটি মনুষ্যসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত। উষ্ণতা ভূ-স্তরের ওজন ঘনত্ব, দাবানল এবং দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির মতো চ্যালেঞ্জকে বাড়িয়ে তুলেছে।
[৯] গবেষকরা বলেছেন,বাস্তবতা হলো পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের গতি কমিয়ে আনার কৌশল গ্রহণ, পরিবেশবান্ধব আচরণ এবং টেকসই পরিবর্তন আনার সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণ বিশ্বের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ারও প্রয়োজন হবে।
আপনার মতামত লিখুন :