মো. আল-আমিন: [২] শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস থেকে জাজিরা-নাওডোবা-কাঠালবাড়ী পদ্মা সেতুর এপ্রোচ পর্যন্ত মহাসড়কে ফোর লেন সড়কের দরপত্র আহ্বান করেও জমি অধিগ্রহণ না থাকায় সড়ক ও কাজিরহাট ব্রীজের কাজ করতে পারছে না সড়ক ও জনপথ বিভাগ। একই সড়কের প্রেমতলা (কোটাপাড়া) ব্রীজের কাজ চলমান থাকলেও জমি অধিগ্রহণ না থাকায় এপ্রোচের কাজ বন্ধ রয়েছে। তড়িৎ গতিতে জমি অধিগ্রহণ করা না হলে সময়সীমার মধ্যে কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা। এতে করে জন ভোগান্তি চরম আকার ধারন করার আশংকা রয়েছে।
[৩] শরীয়তপুর সড়ক জনপথ বিভাগ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস থেকে জাজিরা-নাওডোবা কাঠালবাড়ী পদ্মা সেতুর এপ্রোচ পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়কে চলতি অর্থ বছরে ১৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজ ও প্রেমতলা কীর্তিনাশা নদীর উপরে ব্রীজ এবং জাজিরায় কাজিরহাট ব্রীজ নির্মাণের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কাজিরহাট ব্রীজ ও প্রেমতলা ব্রীজের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। প্রেমতলা ব্রীজের কাজ চলমান রয়েছে। ব্রীজের দু’পাশে জমি অধিগ্রহণ করতে দেরী হওয়ায় জমির মালিকরা কাজ করতে দিচ্ছে না। জমির মালিকরা জমির অধিগ্রহণ টাকা না পেতে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঘর সরিয়ে নিবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। প্রেমতলা ব্রীজ জনগণের সহায়তায় মূল সেতুর কাজ চলমান থাকলেও জাজিরা কাজিরহাট ব্রীজের জমি অধিগ্রহণ না থাকায় জমির মালিকরা কাজ শুরু করতেই দিচ্ছে না। এ কারণে ঠিকাদার সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবেনা বলে আশংকা করছে। পাশাপাশি তাদের ক্ষতি (লোকসান) গুনতে হচ্ছে।
[৪] এদিকে মূল সড়কে শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস এর নিকট ১নং প্যাকেজটি গত ২ আগস্ট দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ১০৫ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ গত রমজান মাসে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব বিভাগের কাছে ২২টি প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এ সড়কে জমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে একটি প্রস্তাবের (জমাদ্দার বাড়ির নিকট) একটি প্রস্তাবের মাত্র জমি অধিগ্রহণ যৌথ তদন্ত শেষ হয়েছে এখনো জমির মালিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে শরীয়তপুর থেকে জাজিরার দিকে। জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে জমদ্দার বাড়ির নিকট থেকে শরীয়তপুরের দিকে। এতে কাজের বিলম্ব হবে। এছাড়া অন্যান্য প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই হয়ে ভূমি অধিগ্রহণের মিটিং হয়েছে মাত্র। এখনো বেশীর ভাগ জমির ৪ ধারা, ৬ ধারা, ৭ ধারা, ৮ধারা বাকি। এসব কাজ শেষ হলেই কেবল চুড়ান্ত হবে অধিগ্রহণের কাজ। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করতে না পারলে আগামী জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতু চালু হলে এ সড়কে যানবাহন চলাচল করা সম্ভব হবে না। ফলে শরীয়তপুর-ঢাকা মহাসড়কপথে জনসাধারণের চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
[৫] এ ব্যাপারে মেসার্স জামিল ইকবাল জয়েন্ট বেঞ্চার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী মো. হাসান আলী বলেন, আমরা কার্যাদেশ পেয়ে কোটাপাড়া ব্রীজের কাজ শুরু করেছি। আমাদের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। দুপাশের এপ্রোচের জমি অধিগ্রহণ না থাকায় কাজ করতে পারছি না। এ কারণে ব্রীজের কাজের বিলম্ব হচ্ছে। এছাড়া কাজিরহাট ব্রীজের জমি অধিগ্রহণ না থাকায় কাজ শুরু করতে দিচ্ছে না জমির মালিকরা। আমরা যতো দ্রুত জমি পাব ততো কাজ দ্রুত এগিয়ে যাবে।
[৬] শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেদোয়ানুর রহমান ভূইয়া বলেন, আমরা গত রমজান মাসেই ২২টি প্রস্তাবের সকল কাগজপত্র জেলা প্রশাসকের রাজস্ব শাখায় জমা দিয়েছি। ইতিমধ্যে শরীয়তপুর থেকে শুরু করে সড়কের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। দুটি ব্রীজের কার্যাদেশদেয়া হয়েছে। জমি পেলেই কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে।
[৭] শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী কমিশনার আছাদুল হক বলেন, শরীয়তপুর-জাজিরা নাওডোবা ফোর লেন সড়কের ২২টি প্রস্তাবের মধ্যে একটি প্রস্তাবের যৌথ তদন্ত শেষ হয়েছে। ৪টি প্রস্তাবের ৪ ধারা হয়েছে। আগামী ২০ আগষ্ট ১৭টি প্রস্তাবের ৪ ধারা হবে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে যৌথ তদন্ত শেষ করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জমির মালিকদের সকলের পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হবে। সম্পাদনা: হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :