রাজু চৌধুরী : [২] চট্টগ্রাম নগরীতে পুলিশ এমন এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে যিনি পেশায় স্কুল শিক্ষক হলেও প্রকৃতপক্ষে ইয়াবা ক্রয়-বিক্রয়ের গডফাদার।
[৩] বুধবার (১১ আগস্ট ) সিএমপির ডবলমুরিং মডেল থানা পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে এই ছদ্মবেশী ইয়াবা কারবারিকে দুই সহযোগী সহ গ্রেপ্তার করা হয় এই সময় বিপুল ইয়াবা ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।
ইয়াবা সাম্রাজ্যে 'দুলাভাই' নামে পরিচিত এই মাদক কারবারির প্রকৃত নাম মোঃ জয়নাল আবেদীন (৪২)। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবেই পরিচিত এলাকায়।
[৩] মঙ্গলবার গভীর রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানার দেওয়ানহাট মোড় এলাকা থেকে ইয়াবার এই গডফাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে আটক করা হয় তার আরও দুই সহযোগীকে। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও নগদ টাকা।
[৪] গ্রেপ্তার হওয়া জয়নাল কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া থানার জুলহারপাড়া গ্রামের মোঃ সিদ্দিক আহমেদের ছেলে। অন্য দুইজন হলেন, তার শ্যালক মোঃ মোবারক হোসেন (২৭) ও মোঃ রেজাউল করিম দিদার (৩১)।
[৫] চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (পশ্চিম) পংকজ দত্ত বলেন, 'গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দেওয়ানহাট মোড়ের মুম্বাই সুইটস দোকানের সামনে থেকে জয়নাল আবেদীন প্রকাশ দুলাভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে তার দুই সহযোগী এবং ২১, ৭০০ পিস ইয়াবা ও সাড়ে আট লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়। '
[৬] ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, জয়নাল আবেদীন ইয়াবার গডফাদার। তাকে সবাই চেনে দুলাভাই নামে। চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবার অন্যতম প্রধান যোগানদাতা এই কথিত দুলাভাই। তার নাম কেউ জানেনা, কেউ কখনও দেখেওনি তাকে। শুধুমাত্র একটি মোবাইল নাম্বারই ছিল নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তার পরিচয়। সেই নাম্বারে ফোন করলেই তিনি ইয়াবা নিয়ে হাজির হতেন।
[৭] ইয়াবা দিয়ে সেই নাম্বার আবারও পাল্টে ফেলতেন। দুইদিন আগে প্রায় ২২ হাজার পিস ইয়াবাসহ চালক-হেলপারকে গ্রেপ্তারের পর উঠে আসে এই দুলাভাইয়ের নাম। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে দেওয়ানহাট মোড়ে ১,৭০০ পিস ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
[৮] পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বায়েজিদ বোস্তামি থানাধীন হাজীরপূল এলাকায় তার বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে তার বাসার আলনার নীচে লুকিয়ে রাখা একটি শপিং ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয় আরও ২০ হাজার ইয়াবা। গ্রেপ্তার করা হয় তার দুই সহযোগী মোঃ মোবারক হোসেন ও মোঃ রেজাউল করিম দিদারকে।
[৯] ওসি মহসীন বলেন, ইয়াবার গডফাদার হলেও তার ইয়াবা কারবারের ঘটনা এলাকাবাসী জানেনা। এলাকায় তিনি স্কুল শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। তিনি কুরুসকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। কিন্তু এর আগেও একবার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হন তিনি।
[১০] প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জয়নাল আবেদীন প্রকাশ দুলাভাই জানান, তিনি মূলত কক্সবাজার থেকে ইয়াবা এনে নিজের কাছে মজুদ করেন। এরপর তা সারাদেশে বিক্রি করেন। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান ওসি মোহাম্মদ মহসীন।