জাহিদুল কবির: [২] শহরের শংকরপুরের শাওন ওরফে টুনি হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আরো তিন আসামিকে আটক করেছে পুলিশ। একই সাথে হত্যার কারণ উদঘাটন করা হয়েছে বলে, জানান পুলিশ।
[৩] ২৫ জুলাই গভীর রাতে শহর ও ঝিকরগাছা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ডিবি ও চাঁচড়া ফাঁড়ি পুলিশ সদস্যরা আসামীদের আটক করে। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, চাইনিজ কুড়াল, ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। সোমবার ২৬ জুলাই দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
[৪] আটককৃতরা হলো শহরের শংকরপুর আশ্রম রোড মুরগি ফার্মগেট এলাকার রবিউল ইসলাম সরদারের ছেলে ইয়াসিন হাসান রানা (২০), ঝিকরগাছা উপজেলার ইস্তা গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের বিশ্বাসের ছেলে হাফিজুর রহমান বিশ্বাস ভ্যাবো (৩০) ও শংকরপুর গোলপাতা মসজিদের সামনে ইসাহাক সড়ক এলাকার ভাড়াটিয়া আমিন মোড়লের ছেলে জয় (১৯)।
[৫] এর আগে পুলিশ আরো তিন আসামিকে আটক করে। আটককৃতরা হচ্ছে, শহরের শংকরপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২০) একই এলাকার মিন্টু শেখের ছেলে বিল্লাল হোসেন মৃদুল (২০) ও শংকরপুর এলাকার মৃত কটার ছেলে মানিক (২৬)।
[৬] যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসবি জাহাঙ্গীর আলম জানান, নিহত শাওন ওরফে টুনির বাবা শংকরপুর জমাদ্দারপাড়ার আব্দুল হালিম শেখ ২৩ জুলাই শুক্রবার রাতে ৮ জনকে আসামী করে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের দিন শুক্রবার দিবাগত রাতে তিনজনকে আটক করা হয়। এরপর পুলিশ সুপারের দিক-নির্দেশনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর রকিবুজ্জামান ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার এসআই মফিজুল ইসলাম ও এসআই শামীম হোসেনের সমন্বয়ে,ও কোতয়ালী থানা এলাকা ও ঝিকরগাছা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। শাওন হত্যার কারণ হিসেবে আটককৃত তিন জন পুলিশকে জানায়, শাওন কিছুদিন আগে তাদেরকে মারপিট করে এজন্য তাকে হত্যা করা হয়। এছাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মেয়েলি ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাওন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
[৭] সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁচড়া ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর রকিবুজ্জামান, এস আই মফিজুল ইসলাম, এস আই মোঃ শামিম হোসেন প্রমুখ।
[৮] আটককৃত তিনজনকে ২৬ জুলাই সোমবার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহাদি হাসানের আদালতে সোপর্দ করা হলে এদের মধ্যে ইয়াসিন হাসান রানা, শাওন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবান বন্দি দেয়। অন্য দুজন শাওন হত্যার দায় স্বীকার করেনি। জবানবন্দি শেষে তিনজনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
[৯] উল্লেখ্য ২২ জুলাই বৃহস্পতিবার ঈদের পরের দিন রাতে শহরের শংকরপুর জমাদ্দারপাড়া ছোটনের মোড় গলির নুরনবী মেম্বারের ফাঁকা জায়গায় নিয়ে শাওনকে ছুরিকাঘাত করে। শাওন প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে এসে ছোটনের মোড়ের কমিউনিটি পুলিশের অফিসে আশ্রয় নেয়। পরে আসামিরা অফিসের মধ্যে ঢুকে শাওনের গলা, চোয়াল, কাঁধ, বুক ও হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে ও নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।