আব্দুল্লাহ মামুন: [২] করোনা সংক্রমণ রোধে দ্বিতীয় দিনে লকডাউন বেশ কঠোর ভাবে পালিত হচ্ছে। জরুরি কোনো কারণ ছাড়া যারা বাইরে বের হয়েছেন তারা শাস্তি ও জরিমানার সম্মুখীন হচ্ছেন। ঢাকার প্রায় সবসড়কেই এমন চিত্র দেখা গেছে।
[৩] রাজধানীর সড়কগুলোতে একমাত্র রিকশা ও ভ্যান ছাড়া আর কোনো যানবাহন ছিনো না। তাও সংখ্যায় খুবই কম। এই সুযোগে রিকশা চালকেরা ভাড়া দেন বাড়িয়ে । সদরঘাট টু মিরপুর ভাড়া হাঁকেন ৯০০ টাকা। আবার গাবতলী টু বংশাল ৮০০ টাকা । আর সদরঘাট টু বসুন্ধরা দুই হাজার টাকা। তাই অনেকেই পায়ে হেঁটে যে যার গন্তব্যে রওয়ানা দেন। গতকাল দুপুর পর্যন্ত তাই ঢাকার সড়কগুলোর দুই পাশে ছিলো পথচারীদের লম্বা লাইন।
[৪] আকাশ কর্মজীবী একজন যুবক, তিনি প্রতিদিন কল্যাণপুর থেকে নিউমার্কেট কর্মক্ষেত্র (সিএনজি পাম্প) আসেন বাসে বা রিক্সায়। কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন বাসা থেকে বের হয়ে রিক্সা ঠিক করতে গেলে ভাড়া (৩০০ টাকা) শুনে আকাশ থেকে পড়তে হয়!
[৫] রিকশা চালকের ভাষ্য মতে, এমনিতেই লোকজন কম। তার ওপর রাস্তাঘাট ভাঙা তাই একটু ভাড়া বেশি। আরেকজন রিকশা চালক অভিযোগ করেন যাত্রী না থাকলে, মাস্ক না থাকলে পুলিশ রিকশা উল্টে দেয়।
[৬] শনিবার তাই রাস্তাঘাটে সাধারণ চলাচলের লোকজন তেমন ছিল না। জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহনও দেখা যায়নি। রিকশা চলাচলে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না। রাজধানীর প্রবেশপথ ও গরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপোস্ট ছাড়া পুলিশ গলির ভিতরেও অভিযান চালাচ্ছে। যাতে কেউ দোকানপাট খুলতে না পারে, আড্ডা জমাতে না পারে। রাস্তায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব তৎপর আছে। আছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন বিভাগের মোট ৫৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে।
[৭] ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আউয়াল জানান, সরকারের যে নির্দেশনা আছে সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা লকডাউন কার্যকর করছি। কোনো ছাড় দেয়া হচ্ছে না। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বাইরে বের হবেন তারাই আইনের আওতায় আসবেন। জরুরি প্রয়োজনে যারা বের হবেন তাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। রিকশা চালকেরা রিকশা চালাতে পারবেন, কিন্তু মাস্ক পরতে হবে। ডয়েচে ভেলে।
[৮] ১ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত এই বছরে প্রথম দফা কঠোর লকডাউন দেয়া হয়। ঈদের জন্য এক সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার শুক্রবার থেকে লকডাউন শুরু হল, যা চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত।
[৯] করোনা সংক্রমণ কমছে না। এখন সংক্রমণের হার ৩১.৫ ভাগ। ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ১৬৬ জন। এপর্যন্ত মারা গেছেন ১৮ হাজার৮৫১ জন। ২৪ ঘন্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ছয় হাজার ৩৬৪ জনের। মোট শনাক্ত ১১ লাখ ৪৬ হাজার ৫৬৪ । গত শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মো. খুরশিদ আলম বলেছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে পারব কিনা তা এখনো বুঝতে পারছি না। তবে সরকারের ব্যবস্থাপনা যথেষ্ট ভালো।
[১০] ট্রাফিক ইনচার্জ আরিফ বলেন, গাড়ী একইবারে নেই বললে চলে সঙ্গে মানুষের আনাগোনাও কম। গতকাল যে মানুষগুলো ঢাকার বাইরে থেকে এসেছে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। অনেকে ছোট বাচ্চা কোলে করে, ব্যাগ-বস্তা মাথায় নিয়ে রাস্তায় হাটছেন এই বিষয়গুলো মানবিক দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। প্রথমদিন দেখে উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের নির্দেশে এই সহমর্মিতা দেখানো হয় তবে আজ লোক নেই বললে চলে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয় জিরো টরালেন্স।