শিরোনাম
◈ নিউইয়র্কে জোহরান মামদানির জয়: কেন ক্ষুব্ধ মোদি সমর্থকেরা? আল–জাজিরার প্রতিবেদন ◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা

প্রকাশিত : ১৭ জুলাই, ২০২১, ০৬:৩১ সকাল
আপডেট : ১৭ জুলাই, ২০২১, ০৬:৩১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এক টাকায় মিলত গরু! কেমন ছিল সেকালের কোরবানি

নিউজ ডেস্ক: এটা আজ বিশ্বাস করা কষ্টকর যে, এই ৫০ বছর আগেও ৫০০ টাকায় গরু কিনলে তাতে চার-পাঁচ মণ মাংস হতো। আজকের বাজারে পাঁচ মণ ওজনের একটি গরুর দাম কমপক্ষে ১ লাখ টাকা। আর যদি আঠারশ শতকের দিকে তাকাই, দেখা যাবে এক টাকায় মিলত গোটা গরু! সেইসব দিন তো এখন রূপকথার মতো শোনায়।

রাজধানী আর শহরাঞ্চলে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গরু-খাসি কেনার চল রয়েছে। তবে গ্রাম এলাকায় কোরবানির গরু কেনার চল কমই ছিল। গ্রামে যাদের সামর্থ্যে কুলাত তারা কোরবানির পশু কেনার চাইতে বাসায় পালা গরু, বলদ বা ছাগল কোরবানি দিতেই বেশি পছন্দ করতেন। যারা কিনতেন তারাও কয়েক মাস আগেই কিনে ফেলতেন কোরবানির পশু। তবে আধুনিককালে এসে গ্রামের এই চিত্রও পালটে গেছে অনেকটাই। শহর বা গ্রামে সবসময়ই হাট বসত কোরবানির। তবে সেই হাট ১০-২০ গ্রাম মিলে একটি। পাঁচ থেকে ১০ ক্রোশ হেঁটে কোরবানির পশু নিয়ে আসা হতো। এরপর সেই পশুকে ঘিরে ছোট শিশুদের হুটোপুটি। গ্রামের মাঠে, নদীর পাড়ে সেই গরু চরানোর স্মৃতি আজও অনেককেই নস্টালজিক করে তোলে।

কোরবানির হাটে যেতেন পরিবারের বয়স্ক শক্ত-সমর্থ সদস্যরা। সঙ্গে বাড়ির প্রধান ব্যক্তি। পরিবারের সবাই যখন মিলিতভাবে কোরবানি দেন তখন প্রতিটি পরিবারের এক জন নিয়ে সবাই মিলে হাটে যেতেন গরু কিনতে। সেই অভিজ্ঞতাও কম মজার নয়। কোন গরু ভালো, কোন গরুর মাংস বেশি, কয় দাঁতের গরু কেনার জন্য আদর্শ, পেট মোটা গরু কেনা কেন যাবে না এমনি হাজারও ফর্মুলা রয়েছে কোরবানির গরু কেনার জন্য। এর মধ্যে কেউ মনে করেন কালো গরুর মাংস ভালো হয়, কারো পছন্দ লাল গরু। এদিকে কোরবানির জন্য মীর কাদিমের ধবধবে সাদা গরু নিয়ে তো বাংলাদেশে ক্রেজ রয়েছে। বিশেষ করে পুরান ঢাকার মানুষের মধ্যে মীর কাদিমের গরু কেনার প্রতিযোগিতার চল রয়েছে। অবশ্য সেসব গরু বিত্তবান ছাড়া অন্য কারোর পক্ষে কেনা সম্ভব নয়।

উনিশ শতকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা খুব সীমাবদ্ধ থাকায় কোরবানিও সীমাবদ্ধ ছিল। অনেক দূরে দূরে দু-একটি পশুর হাট বসত। উচ্চবিত্ত হাতে গোনা অল্পসংখ্যক মানুষ একা একটি গরু কোরবানি দিতেন। সাধারণত মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো সাত জন মিলে সাত ভাগে গরু কোরবানি দিত। কোনো কোনো কৃষক নিজের হালের বলদটিকে বয়স হয়ে কর্মক্ষমতা হারালে কোরবানি দেওয়ার জন্য নিয়ত করতেন। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের পশু কোরবানির তালিকায় সাধারণত ছাগল বা ভেড়া থাকত। ২০ থেকে ৫০ টাকায় ছাগল অথবা ভেড়া পাওয়া যেত। বিশ শতকের শুরুতেও ৫০ থেকে ১০০ টাকায় ভালো মানের ছাগল পাওয়া যেত।

যারা গ্রামে বেড়ে উঠেছেন অথবা যাদের গ্রামের বাড়িতে কোরবানি দেওয়ার স্মৃতি এখনো অমলিন তাদের কাছে শহরের এই কোরবানি দেওয়াটা নিছক নিয়ম রক্ষা ছাড়া আর কিছু মনে হবে না। ঈদের এক দিন আগে হাটে গিয়ে কোরবানির পশু কেনা। কোরবানির দিন সকালে ‘হুজুর’ এসে কোরবানি দেওয়ার পরে কসাইয়ের দল পুরো গরু সুচারুভাবে কেটে ভাগ করে দিয়ে চলে যায়। শহুরে এই কোরবানির মধ্যে গ্রামের সেই আনন্দ কি আর আছে! গ্রামে পশু জবাই করতেন বাড়ির গৃহকর্তা। এরপর বাড়ির সব পুরুষ সদস্য মিলে গরুর চামড়া ছাড়ানো থেকে শুরু করে মাংস কাটার কাজ করতেন। আর অন্দর মহলে মেয়েরা মসলা বেটে তৈরি থাকতেন। মাংস বণ্টন হলেই লাকড়ির চুলায় চড়ানো হতো মাংস। সূত্র: ইত্তেফাক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়