শিরোনাম
◈ রাতে বাংলামোটরে জুলাই পদযাত্রার গাড়িতে ককটেল হামলা (ভিডিও) ◈ যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক মোকাবেলায় বাংলাদেশের চার দফা কৌশল ◈ বিআরটিএর মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে কঠোর নির্দেশনা ◈ সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে বাংলাদেশ হার‌লো ৭৭ রা‌নে ◈ ২০ বছরেও অধরা এমআই-৬'র ভেতরের রুশ গুপ্তচর! (ভিডিও) ◈ নারী ফুটবলের এই অর্জন গোটা জাতির জন্য গর্বের: প্রধান উপদেষ্টা ◈ প্রবাসীদের জন্য স্বস্তি: নতুন ব্যাগেজ রুলে মোবাইল ও স্বর্ণ আনার সুবিধা বাড়লো ◈ একযোগে ৩৩ ডেপুটি জেলারকে বদলি ◈ 'মধ্যপ্রাচ্যে সিলেট-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকেরা ঘোষণা দিয়ে মারামারি করে' (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৩ জুলাই, ২০২১, ০৩:৩৯ রাত
আপডেট : ১৩ জুলাই, ২০২১, ০৩:৩৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হাসান মামুন: মুনাফার জন্য জিভ লম্বা করে ফেলা পুঁজির মালিকদের কাছে ‘দায়িত্ববোধ’ আশা করার সারল্য থেকে বেরিয়ে আসুন দয়া করে

হাসান মামুন: কার্ল মার্কসকে ভুলে গেলে হবে? কতো শতাংশ মুনাফার সুযোগ থাকলে পুঁজিপতি ফাঁসিতে যাওয়ার মতো কাজও করবে। তার ওই পর্যবেক্ষণ তো এখনো সত্য। সত্য বিশেষত আমাদের মতো দেশগুলোয়, যেখানে প্রায় যা খুশি করে উৎপাদন ও ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ এখনো, এতো কিছুর পরও বিদ্যমান। একেকটা দুর্ঘটনা (পড়ুন হত্যাকাণ্ড) ঘটে আর তারপর জানা যায়, ওখানে ছিলো এই অনিয়ম আর সেই অব্যবস্থাপনা! আমরা তখন আওয়াজ তুলি উদ্যোক্তা আর ম্যানেজারকে গ্রেপ্তারের। জনমতের চাপে সেটা করাও হয়। কিন্তু ওদের কী দোষ? তারা তো চাইবেই ‘প্রফিট ম্যাক্সিমাইজ’ করতে। আরো, আরো, আরো! এর কি কোনো শেষ আছে? আর নেই বলেই তো রাষ্ট্রের আছে দায়িত্ব এদের স্বাভাবিক মুনাফায় তুষ্ট রাখার। মুনাফার একটা অংশ যাতে শ্রমিক কল্যাণে ব্যয় করে, সেটায়ও বাধ্য করার। আর মুনাফা অটোমেটিক ‘স্বাভাবিক’ হয়ে আসবে যদি তারা কাজের পরিবেশ ঠিকঠাক রাখে, উপযুক্ত মজুরি সময়মতো দেয়, সার্ভিস চার্জ, কর ইত্যাদি ফাঁকি দিতে না পারে, ব্যাংকের সঙ্গে সদাচরণে অভ্যস্ত হয়, জনগণের অর্থ থেকে প্রণোদনা হাতাতে না পারে ইত্যাদি। আর এ সমস্ত কিছুর উল্টোটা তারা, বিশেষত একশ্রেণির পুঁজিপতি ও ব্যবসায়ী করতে পারে, এদের কাজকর্ম মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মচারিদের সহায়তায়। ঠিক এই কারণে শেষোক্ত লোকদের আগে ধরা দরকার। মানে, সবশেষ ক্ষেত্রে যারা রূপগঞ্জের কারখানাটি এমনিভাবে চলতে দিয়েছিলো তাদের।

তালাবদ্ধ করে জেলখানা বানিয়ে না রাখলেই নাকি ওই অগ্নিকাণ্ড থেকে সিংহভাগ শ্রমিক (যাদের একাংশ শিশু শ্রমিক) বেরিয়ে যেতে পারতো। একজন লিখেছেন, হয়তো দু-চারজন গেইটম্যান রাখার খরচ বাঁচাতেই তালা মেরে রাখার ওই ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। স্মরণ করতে হয়, অতীতেও এমনি ধারার ঘটনা আমরা ঘটতে দেখেছি। জনগণের করের টাকায় মাইনে পাওয়া রাষ্ট্রের কর্মচারিরা তারপরও এর প্রতিবিধান করেনি। গার্মেন্টস খাতে শ্রমিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির নাকি অনেক উন্নতি হয়েছে ইতোমধ্যে। কিন্তু সেটা তো হয়েছে বিদেশি ক্রেতাগোষ্ঠীর চাপে। নইলে মালিকপক্ষ ওইভাবেই চালিয়ে যেত কাজকারবার। প্রশাসন ওদের কিছু বলতো বা করতো বলে মনে করেন কি? করতো যে না, তার প্রমাণ তো রূপগঞ্জের সেজান জুস কারখানায় কমপক্ষে ৫২ জনের কয়লা হয়ে যাওয়ার সবশেষ ঘটনাটি। নিশ্চিত মৃত্যু দেখে ওদের কেউ কেউ নাকি নিজের নামটি কাগজে লিখে ছুড়ে দিয়েছিলো উপর থেকে। সেসব নামও হয়তো পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে রাষ্ট্রযন্ত্রের ধারাবাহিক উদাসীনতার আগুনে। এর পক্ষ থেকে যারা দায়িত্ব নিয়েছিলো বা পেয়েছিলো এ সমস্ত কারখানা ও ব্যবসা ক্ষেত্রে শ্রমিক নিরাপত্তা দেখার, সবার আগে তাই ওদের চিহ্নিত করে ধরা চাই। মুনাফার জন্য জিভ লম্বা করে ফেলা পুঁজির মালিকদের কাছে ‘দায়িত্ববোধ’ আশা করার সারল্য থেকে বেরিয়ে আসুন দয়া করে। আর এদের মধ্যে যারা সত্যিই ব্যতিক্রম, তারা আশা করি এ পোস্ট পড়ে মন খারাপ করবেন না। লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়