নিউজ ডেস্ক : তবে বিধিনিষেধে শিথিলতা থাকবে কি না, সেটি পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। এ বিষয়ে আগামী মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে, যা চলবে ১৪ জুলাই পর্যন্ত।
এর আগে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কভিড- সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি সুপারিশ দিলে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়তে পারে। বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে, তাতে পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার মতো জায়গায় পৌঁছানো যায়নি। ঈদের আগে গণপরিবহন চলবে কি না- জানতে চাইলে খালিদ বলেন, যদি বিধিনিষেধ চলমান থাকে, তাহলে সেই সুযোগ নেই। আর যদি বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হয়, তাহলে সীমিত আকারে গণপরিবহন চলবে। তিনি বলেন, আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আমরা সফল হব। জীবনে অনেক ঈদ আসবে। বেঁচে থাকলে অনেক ঈদ করতে পারব।
ঢাকার গরুর হাট স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। গুলশানের নগর ভবনে কোরবানির পশুর হাট মনিটরিং কমিটির সদস্যবৃন্দ ও ইজারাদারগণের সঙ্গে এক সমন্বয় সভায় মেয়র বলেন, হাটগুলোতে সামাজিক দূরত্ব যথাযথভাবে বজায় রাখতে হবে। ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়া হাটগুলোর প্রবেশ ও বাহির পথ আলাদা থাকতে হবে এবং নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করা হবে। কোরবানির হাটের পশুগুলো সর্বসাধারণের জন্য অনলাইনে প্রদর্শনের ব্যবস্থাও করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনার যে সংক্রমণ পরিস্থিতি, সেটি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের দিকেই সরকার বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সংক্রমণ এবার এমনভাবে ছড়িয়েছে, সেটা খুবই আশঙ্কাজনক। ১৪ জুলাইয়ের পরের সময়ও আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা এ সংক্রমণ কমাতে চাই, তাহলে এ প্রক্রিয়া কিন্তু অব্যাহত রাখতে হবে, বিভিন্ন পর্যায়ে।
তিনি বলেন, যেহেতু ঈদ এবং কোরবানির হাট আছে, এ দুটিকে কীভাবে করলে সংক্রমণটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, সেটিই আমাদের মূল লক্ষ্য। হাটগুলোকে কত সুনিয়ন্ত্রিতভাবে করতে পারি সেটা নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, হাটগুলো যাতে নিরাপদ জায়গাতে হয়, খোলা জায়গায়, যেখানে তিনটি গেট থাকতে পারে। একটি দিয়ে ক্রেতারা ঢুকবেন, তারা পশু কিনে নিয়ে আসবেন। আরেকটি দিয়ে পশু ঢোকানো হবে।
তিনি বলেন, হাটে যাতে নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রেতা ঢোকে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। অবশ্যই হাটে এলে একা বা বেশি সংখ্যক না এসে সঙ্গে একজন যাতে থাকে। সংক্রমণ ও মৃত্যু মাথায় রেখেই হাটে আসতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, অতিরিক্ত মানুষ যাতে না ঢোকে সেটি নিয়ন্ত্রণ করা এবং দ্রুত যাতে বেরিয়ে যেতে পারে, সে ব্যবস্থা রাখা। তবে এর ওপর আমরা চাইছি যে, গতবার যেহেতু ২৫ শতাংশ সাকসেসফুল করেছি ডিজিটাল হাটকে... অনলাইনের যে হাটগুলো, সেগুলো যাতে আরও জনপ্রিয় করা যায়, সেটিতে এবার আরও জোর দিচ্ছি।
এদিকে, যত দিন যাচ্ছে কঠোর লকডাউন ততই শিথিল হয়ে যাচ্ছে। নগরীর রাস্তাঘাটের চিত্র অনেকটাই স্বাভাবিক। কিছু দোকানপাট, থ্রি হুইলার এবং লঞ্চ-বাস বন্ধ থাকা ছাড়া লকডাউনের তেমন কোনো প্রভাব ছিল না। রাস্তায় চলাচল করেছে প্রচুর সংখ্যক মানুষ এবং যানবাহন। নানা প্রয়োজনে, নানা অজুহাতে রাস্তায় বের হয়েছেন তারা।
দেশে করোনার সবশেষ পরিস্থিতি :
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রেকর্ড ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৮৭৪ জন। এটিও একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড।
এ নিয়ে করোনায় দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬ হাজার ৪১৯ জনে। আর মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ লাখ ২১ হাজার ১৮৯ জনে।