বিশ্বজিৎ দত্ত : [২] কোভিডের দেড় বছরে দেশে অনলাইন পেমেন্ট দ্বিগুণ হয়ে গেছে। গতকাল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ইকোনমির আলোচনায় এ তথ্য দেয় সিপিডি। তথ্যে বলা হয়, ২০১৬ সালে অনলাইনে পেমেন্ট ছিল পৌঁনে দুইশ কোটি টাকার। ২০১৯ সালে এটি বৃদ্ধি পয়ে ২০ বিলিয়ন ডলার হয়। অতিমারির কারণে অনলাইন পেমেন্ট বৃদ্ধি পয়ে ৪০০০ কোটি হয়েছে।
[৩] সিপিডির তথ্যে বলা হয়, দেশে বর্তমানে ২০০০ ওয়েবসাইট নির্ভর ব্যবসা উদ্যোক্তা ও ৫০ হাজার ফেসবুক কেন্দ্রীক উদ্যোক্তা রয়েছেন। সেখানে চাকুরি করছেন ৫ লাখ ব্যক্তি। এই চাকুরির মধ্যে মার্কেটিংয়ের লোকও রয়েছে।
[৪] আলোচনায় বক্তারা ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যবসার কিছু সমস্যাও তুলে ধরেন। তারা বলেন দেশে কম্পিউটার ব্যবহার এখনো কম। মোট জনসংখ্যার ৫.৬ শতাংশের কম্পিউটার রয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৩৭.৬ শতাংশ। এই হার বৃদ্ধির জন্য সরকারের ইনেশিটিভির কথা বলেন তারা।
[৫] রাইড শেয়ারিংয়ের বিষয়ে বলা হয়, দেশে ২৬০ মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে রাইড শেয়ারিংয়ে। প্রতিমাসে ৬ মিলিয়ন রাইড রাস্তায় নামছে। গত বছর প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার রাইড শেয়ারিংয়ের ব্যবসা হয়েছে। যার ৬০ শতাংশ সিএনজি, ২১ শতাংশ মোটর বাইক ও ১২ শতাংশ কারের মাধ্যমে ব্যবসা হয়েছে।
[৬] অর্থনীতিবিদ আসাদুজ্জামান বলেন, ডিজিটাল ইকোনমির ডাটা দেখে বলা যায় এই মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ব্যবসা হয়েছে ক্রিয়েটিভ মাল্টি মিডিয়ায়। অর্থাৎ গান, বাজনা ও সিনেমায়। এটির প্রকৃত অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্ক কম। তিনি বলেন, দেশে ডিজিটাল ব্যবস্থার উপরে নজরদারি একটি বিরাট সমস্যা। তিনি নজরদারিকে প্রায় হয়রানির পর্যায়ে চলে গেছে বলে মনে করেন। ডিজিটাল ব্যবসায় দক্ষলোকের সংকট রয়েছে বলেও মনে করেন। তার মতে ডিজিটাল মাধ্যমে যারা কাজ করছেন তাদের বেশির ভাগই স্বশিক্ষিত। তাদের দ্বারা আগামী দিনের ডিজিটাল প্রযুক্তি রপ্ত করা বা কাজ করানো সম্ভব নয় বলে মনে করেন।
[৭] সিপিডি ডিজিটাল ব্যবসার কিছু সমস্যার দিক চিহ্নিত করে। এরমধ্যে রয়েছে মানহীন বিদ্যুৎ, ধীরগতির ইন্টারনেট, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে দক্ষতার অভাব, ইংরেজি ভাষা না জানা, কার্ডে লেনদেন কম করা, সরকারের আইনি দূর্বলতা, এই খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগের অভাব।
[৮] ডিজিটাল উদ্যোক্তারা বলেন, এই খাতটি একবারেই নতুন। তাই এখনো বলা যাচ্ছেনা এটি অর্থনীতির কত অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে তারা বলেন, এখানে বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মসংস্থান হচ্ছে। সেটি এনআইডি কার্ড তৈরী করা থেকে শুরু করে কোভিডের টিকাকরণ পর্যন্ত সব জায়গায়। এই সেক্টরে দক্ষ লোকের অভাব হলেও কিছু ক্ষেত্রে সামান্য ট্রেনিংয়ের মাধ্যমেই রাইড শেয়ারিং বা পাড়ার ছোট দোকানদার ফুচকা ওয়ালা নিজেরাই ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের ব্যবসা চালাচ্ছেন।
[৯] বিদেশ থেকে আউট সোসিংয়ের মাধ্যমে আয় দেশে আনার ক্ষেত্রে সমস্যার কথা বলেন উদ্যোক্তারা। তারা বলেন, বিদেশিরা প্যাপলের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। কিন্তু দেশে প্যাপল একাউন্ট করা অনেক ঝক্কির কাজ। এখনো সরকার অনুমোদনই দেয়নি। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের একজন উদ্যোক্তা কিভাবে অর্থ পাবে তার কোন ব্যবস্থাই নেই।
[১০] আলোচনায় ডিজিটাল প্ল্যাট ফর্মে যারা শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন তাদের রাইটগুলো সংরক্ষিত হচ্ছে কিনা বা বর্তমান লেবার লয়ের সঙ্গে কতটুকু সংগতিপূর্ণ এ বিষয়ে আলোচনায় বেসিকে পক্ষ থেকে বলা হয় এ বিষয়ে সরকারের কাছে তারা একটি প্রস্তাবনা দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :