রাজিব ইসলাম: [২] আমাদের দেশের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যাই নারী। অথচ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে নারীরা হয়ে আসছে অবহেলিত। নারীর শ্রম এবং মেধাকে যদি যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায়, তাহলে দেশ এবং সমাজ একই সাথে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
[৩] মালয়েশিয়া প্রবাসী শারমিন রহমান নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য কাজ করছেন। তিনি মালয়েশিয়ান কোম্পানি আকুরা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করছেন।
[৪] এছাড়া, পাশাপাশি নিজের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ও তার স্বামী শেখ আরিফ রব্বানি জামির প্রতিষ্ঠিত জ্যাশ ইন্টারন্যাশনাল রপ্তানি করছে মালদ্বীপসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশে।
[৫] অর্থনৈতিকভাবে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের স্বাবলম্বী হওয়া উচিত। আমরা যতই বলি না কেন, পরিবারকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বামী-স্ত্রীর দুজনের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ।তাই সব কাজ ভাগাভাগি করে করা উচিত দুজনারিই। ছেলেদের যেমন ঘরের কাজে মা এবং স্ত্রীকে সাহায্য করতে পারে,তেমনি মেয়েরাও সংসারের খরচ চালানোর জন্য একইভাবে পাশে দাঁড়াতে পারে।
[৬] মালয়েশিয়ার বিভিন্ন সংস্থার সাথে কাজ করছেন শারমিন। সেখানেও নারীদের উন্নয়নে কাজ করছেন, আছেন রোটারি ক্লাব এর ভোকেশনাল ডিরেক্টর পদে।
এ বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে দিয়েছেন বক্তব্য মালয়েশিয়ান এসএমই মহিলা উদ্যোক্তাদের।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এনে দেয় সম্মান। আশেপাশের মানুষ অনেক কথা বলবেই কি যায় আসে, যাই করেন না কেন কিছু মানুষ দোষ ধরবেই, আবার অনেকেই পাশে দাঁড়াবে।৷ নিজের লক্ষ্য কি সব সময় মাথায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
একজন মহিলা যখন স্বাবলম্বী হয়, সে তার পরিবার, সন্তানকে আরো ভালো জীবন দেয়ার চেষ্টা করে। আমার মা থেকেই সেটা দেখেছি সবার প্রথমে।
আবার স্বাধীনতা মানে এই না যে জীবনে পুরুষের প্রয়োজন আর নেই। এর মানে খাবার টেবিল আরো কিছু খাবারের সংযোজন হওয়া মাত্র।
যেসব নারীরা একা সংসার চালান, এবং বিশেষ করে যারা শহরের বাইরে থাকেন তাদের কে ভিন্নভাবে কর্মক্ষেত্র তৈরি করার চেষ্টা করছেন তিনি এবং তার টিম। এরই মধ্যে সিরাজগঞ্জ, পাবনা,নওগাঁ,কুমিল্লা,ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং ফেনীতে কিছু পরিবারকে কাজের কিছু মাধ্যম যোগাড় করার চেষ্টা করেছেন তিনি।
[৭] শারমিন রহমানের কিছু কথা -
"বাংলাদেশে এখনও অনেক ভালো মানুষ আছে। অনেকেই আছেন যারা সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে চান, কিন্তু সময়ের অভাবে তাদের পক্ষে সরাসরি অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয় না। আমরা শুধুমাত্র একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করছি, সঠিক মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য।"
[৮] "অল্প কিছু মানুষ চেষ্টা করলে বড় কিছু হবে না, সবাইকে মিলে সামনে আগাতে হবে।বাংলাদেশে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা জানেনই না তাদের ব্যাংকে কত টাকা, আবার এমনও মানুষ আছেন যাদের মাটির ব্যাংকে দশটা টাকাও হয়তো নেই। এই বৈষম্যের শিকড় অনেক গভীরে, যা এক টান দিয়ে উপরে ফেলা যাবে না। সবাইকে যার যার জায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব কাজ করে যেতে হবে। "
[৯] এছাড়াও নারীদের শিক্ষার কোন বিকল্প নেই বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, "যত কষ্টই হোক না কেন ছেলে মেয়েকে পড়ানো উচিত। আমার বাবা মা অনেক আত্মত্যাগ করলেও আমার এবং আমার অতি আদরের ছোট বোন সাবরিনা রহমানের পড়ার ক্ষেত্রে কখনো কোন আপোষ করেননি। আজ আমরাই আমাদের বাবা-মার ঢাল।
কষ্ট হবে- ক্ষুধার কষ্ট, আমি তা বুঝি। বনরুটি-চা, খেয়ে সারাদিন পার করেছি। যারা খাওয়ার কষ্ট পায়নি তারা কখনো এর জ্বালা বুঝবে না।"
[১০] কিন্তু এর জন্য থেমে গেলে চলবেনা। সৎ পথে কঠিন পরিশ্রম করে যেতে হবে,আর নিজেকে উন্নত করতে হবে প্রতিমুহূর্তে নতুন নতুন কাজ শেখার মাধ্যমে। হার মানা যাবে না।