মোহাম্মদ এ আরাফাত: জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কিছু উশৃঙ্খল ছেলেরা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও বিএনপির সমালোচনার জন্য প্রতিকূল পরিণতির হুমকি দিয়েছে। তারেক রহমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আসামি এবং উচ্চ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত। এর আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষক ড. মাহবুবুল্লাহও কয়েক বছর আগে একই কারণে ছাত্রদলের কিছু সন্ত্রাসী দ্বারা শারীরিকভাবে পিটুনির শিকার হয়েছিলেন। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং অধ্যাপক মাহবুবুল্লাহ দুজনই বিএনপিপন্থী ও বিএনপির শুভাকাক্সক্ষী হিসেবে পরিচিত। ছাত্রদলের সেই উশৃঙ্খল ছেলেরা তাদের শুভাকাক্সক্ষীদের কাছ থেকেও কোনো গঠনমূলক সমালোচনা শুনতে রাজি নয়। এর মানে কি?
বিএনপি এবং ছাত্রদলের সেই ছেলেরা কি মনেকরে যে তারেক রহমান সমালোচনার ঊর্ধ্বে? এরপরেও আমাদের মানতে হবে, তারেক রহমান এবং তার সন্ত্রাসী ছেলেরা বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজ ও রাষ্ট্রের গণতন্ত্রায়ণে অবদান রাখতে সক্ষম? যাদের হাতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রক্ত, যারা নিজেরাই স্বৈরাচারী এবং সন্ত্রাসী আচরণ করে, তারা কোন মুখে গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে?
আমি যদিও ছাত্রদলের সেই উশৃঙ্খল ও সন্ত্রাসী ছেলেদের আচরণের দায় পুরো ছাত্রদলের ওপর চাপাতে চাই না। যারা অন্যায় করেছে, দায় শুধু তাদেরই। যদিও বিএনপি-জামায়াতপন্থী অন্ধ সমর্থকরা এবং কিছু সুশীল গং, ছাত্রলীগের কোনো ছেলেরা বিচ্ছিন্নভাবে কোনো উশৃঙ্খলতা করলে পুরো সংগঠন ধরেই টান দেয়। যেন ছাত্রলীগ সংগঠন হিসেবেই সেই অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছে! ছাত্রলীগের যেকোনো ছেলের কোনো উশৃঙ্খলতাকে ছাত্রলীগ কখনো সংগঠন হিসেবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়নি, বরং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে।
যতোটুকু জানা যায় ছাত্রদলের যে সন্ত্রাসীরা অধ্যাপক মাহবুবুল্লাহর ওপর শারীরিকভাবে আক্রমণ করেছিলো, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি ছাত্রদল। এখন দেখার বিষয় ছাত্রদলের সেই উশৃঙ্খল ছেলেরা যারা দিনে-দুপুরে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে হুমকি দিল তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রদল কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয় কিনা? না হলে, এই অন্যায়ের দায় শুধু যারা অন্যায়ের সাথে সম্পৃক্ত ছিল তাদেরই থাকবে না, সংগঠন হিসেবে ছাত্রদলকেও নিতে হবে সে দায়।
একইসঙ্গে বিএনপিপন্থীদের দেশের গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলার আগে একটু লজ্জাবোধ করা উচিত এবং বিশেষ করে ছাত্রলীগের কোনো উশৃঙ্খল ছেলের/ছেলেদের বিচ্ছিন্নভাবে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার নৈতিক অধিকার হারাবে তারা। লেখক: চেয়ারম্যান, সুচিন্তা ফাউন্ডেশন