শিরোনাম
◈ পরিচয় জানা গেল পুরান ঢাকায় ভূমিকম্পে নিহত ৩ জনের  ◈ মৃত্যুদণ্ড, নিষেধাজ্ঞা ও পলাতক নেতৃত্ব, নেই অনুশোচনাও—কোন পথে ফিরবে আওয়ামী লীগ? ◈ ঢাকার পুরোনো ভবনগুলোর ৯০ ভাগই বিল্ডিং কোড মানে নাই: রিজওয়ানা হাসান ◈ নরসিংদী কেন ভূমিকম্পের কেন্দ্র? ◈ ১০০ বছর বড় কম্পন নেই—আজকের ভূমিকম্প বড় বিপদের ইঙ্গিত, বলছেন বিশেষজ্ঞরা ◈ বাংলাদেশ ম্যাচের আগে জার্মানিকে উড়িয়ে দিলো থাইল্যান্ড  ◈ আয়ারল‌্যান্ডের বিরু‌দ্ধে বিশাল লিড নেওয়ার পথে বাংলাদেশ  ◈ ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন স্থগিত করলেন বিচারক ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপার্সনের সৌজন্য সাক্ষাৎ ◈ বেনাপোল সীমান্তে বিপুল পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রাসহ ভারত ফেরত যাত্রী আটক

প্রকাশিত : ০২ জুলাই, ২০২১, ০৪:৫৩ সকাল
আপডেট : ০২ জুলাই, ২০২১, ০৫:২৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফারাহ দোলন: এই সব ভোরের রাতের বৃষ্টির নাম 'মন খারাপের' বৃষ্টি

ফারাহ দোলন:  এই সব ভোরের রাতের বৃষ্টির নাম 'মন খারাপের'' বৃষ্টি।

আমার নানীর বাসার উত্তর দিকে, টিনের চালের ঘর ছিলো। বৃষ্টির শব্দ শোনার জন্য কান পাততে হতো না। বৃষ্টির ধ্বনি নিজ দায়িত্বেই কানে এসে পৌঁছাতো। বাসার পশ্চিম পাশে ছিলো অনেক বড় খোলা মাঠ। মাঠ ভর্তি গাছ। সোদামাটির গন্ধের জন্য তখন ব্যাকুল হয়ে থাকতে হতো না। সোদামাটির ঘ্রাণ আপনাআপনিই নাকে এসে লাগতো। দিন-হোক, কিংবা রাত— বৃষ্টি এলেই ছাদে ছুটতাম। রাতের বেলা বৃষ্টিতে খেজুর গাছ, আম গাছ, কদম গাছ, নারকেল গাছের পাতা চিকচিক করতো। অপলক তাকিয়ে থাকতাম। পাতায় চিকমিক করা ঝিকিমিকি আলো দেখতাম। খেজুর গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে চাঁদ আর বৃষ্টি একত্রে দেখতাম।
অনেক বড় বাগান ছিলো। আমার আর আম্মুর হাতে গড়া। প্রতি বর্ষায় আমি আর আম্মু আরও কতো নতুন নতুন গাছ লাগাতাম, কলম বানাতাম!! ছাদ থেকে ফুলগুলোর ঘ্রাণ আমার চারতলার বারান্দায় এসে লুটে পড়তো। বর্ষায় বাগানের ভরা যৌবন আমি আর মা দু'চোখ ভরে দেখতাম। গাছগুলোকে আদর করতাম। আলতো করে হাত বোলাতাম।

আমাদের জানালা দিয়ে কদম ফুল ছোঁয়া যেতো। সেই কদম গাছে কাকের বাসা ছিলো একটা। ওরা মাঝেমধ্যে আমার জানলায় এসে বসতো। আমরা পরিচিত হয়ে উঠেছিলাম। ওরা আমাকে চিনতো। ভয় পেতো না। উড়াল দিয়ে পালিয়ে যেতো না। মাঝেমধ্যে খাবার ছড়িয়ে রাখতাম জানলায়। ওরা নির্ভয়ে এসে বসতো। কাকও মায়া বোঝে?— অবাক হতাম।

ছেড়ে আসলাম। একদিন সব ছেড়ে আসলাম। এখন সোদামাটির ঘ্রাণ পাবার আশায় নাকে বেশি বেশি করে স্টেরয়েড স্প্রে দিকে থাকি। নিজেকে বুঝ দেই, 'নাকের সমস্যার জন্য তুমি সোদামাটির ঘ্রাণ পাও না দোলন।' বুঝে কতোটুকু কাজ হয় জানি না।

আগে যখন তখন বৃষ্টি গায়ে মাখতাম। পানিতেই যে আমার সুখ। এখন বৃষ্টির জল গায়ে লাগলেও ৩/৪ দিন শুয়ে কাটাই। বৃষ্টি কি অভিশাপ দিলো তবে? প্রকৃতি অভিশাপ দেয়?? দেয় না। প্রকৃতি মানুষের বিচার করে। সেই বিচারে আমার দণ্ড হয়েছে। সোদামাটির ঘ্রাণ নাকে এসে লাগে না। বৃষ্টির শব্দ ঠিকঠাক কানে এসে পৌঁছায় না। কতো বছর হয়ে গেলো কদম ছোঁয়া হয় না। আমার এখন হাত বোলাবার মতন কোনো গাছ নেই।

এই সব ভোর রাতের নির্জন বৃষ্টিতে এখন আর বিষণ্ণতা ধুয়ে যায় না। বরং বিভিন্ন রঙের বিষণ্ণতা রেখে যায় বৃষ্টি...

ফেসবুক থেকে

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়