মো.রাইসুল ইসলাম : [২] আসন্ন ঈদ-উল আযহাকে ঘিরে পশু মোটাতাজা করতে শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার গরু মোটাতাজাকরণের পেশায় নিয়োজিত সাধারণ খামার মালিক ও পালনকারীরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত করোনার প্রভাব বিস্তার করায় গত বছরের মত এ বছরেও বাজারদর ও বিক্রি নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন গবাদিপশু খামারী ও পালনকারীরা।
[৩] সরেজমিনে খামারগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে গবাদি পশুগুলো নিয়ে গবাদি মোটাতাজাকরণের সকল কার্যক্রম চলমান রেখেছে খামারিরা। গো-খাদ্যের সংকট ও দাম বৃদ্ধির পরও এ বছর উপজেলার চার ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার ৯৭০ জন গবাদি পশু খামারি ও পালনকারী প্রায় ১২ হাজার ৬শ’ ৪৭টি গরু-ছাগল প্রস্তুত করেছেন কোরবানির পশু হাটগুলোতে বিক্রির জন্য। যার বাজার মূল্য অর্ধশত কোটি টাকা ছাড়িয়ে।
[৪] যেখানে কামারখন্দের পশু কোরবানির চাহিদা সব মিলে প্রায় ৬ হাজারের মত । অনেকে বাজার যাচাইও করেছেন। উপজেলায় কোরবানীর জন্য মোটাতাজাকরণ গবাদি পশুর উপজেলায় এর চাহিদা রয়েছে ৪৫ ভাগ আর ৫৫ ভাগ পশু দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী করা হয়। দুর দুরান্তের ব্যাপারীরা না আসলে অনেক পশু অবিক্রির আশঙ্কা করছেন খামারীরা।
[৫] করোনা কালে এ সমস্ত প্রান্তিক গবাদিপশু পালনকারী ও খামারিদের এখন দুশ্চিন্তার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পশুর মূল্য কেমন হতে পারে। লাভজনক হবে নাকি লোকসান গুনতে হবে। জামতৈল, চৌবাড়ী, দশসিকা, চর দশসিকা, চর কামারখন্দ, শাহবাজপুর, গাড়াবাড়ী, বলরামপুর, হায়দারপুর, চর নুরনগর, এলাকা গরু ও ছাগল পালনকারী ও খামারের জন্য খ্যাতি পেয়েছে।
[৬] উপজেলার আলোকদিয়ার গ্রামের গরু খামারী অর্নব সরকার জানান, কোরবানী ঈদকে উদ্দেশ্য করে কিছুটা লাভের আশায় খামারে ৩০টি গরু মোটাতাজা করেছি। উপজেলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেপারীরা এসে এই এলাকার পশু কিনে নিয়ে যান। কিন্তু এবছর করোনার কারণে দুর-দুরান্তের কোন বেপারীদের এখন পর্যন্ত দেখা পায়নি। এলাকার দু’একজন ব্যাপারি এসে দেখে গেছে । আমি খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি এ কারণে, গরুগুলো এবছর আশানুরুপ দামে বিক্রি না করতে পারলে আমাকে লোকসান গুনতে হবে।
[৭] খামার মালিক ও গবাদি পশু পালনকারীরা জানান, করোনার কারণে আমরা পশু নিয়ে ভয়ে আছি, যদি লকডাউন হয় তাহলে যদি দূরের বেপারীরা না আসে তাহলে আমাদের বড়ো ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
[৮] উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু ছাঈদ জানান, এ বছর কামারখন্দ উপজেলায় কোরবানির পশু চাহিদার তুলনায় দিগুন উৎপাদন হয়েছে । আশা করছি এখানকার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের চাহিদা পূরণে অংশিদার হতে পারবো । তারপরও যেহেতু করোনার থাবা চারিদিক সেহেতু ঈদের আগে লকডাউন হলে খামারিদের লোকশান গুনতে হবে ।
[৯] তবে প্রাণী সম্পদেও অনলাইন গবাদি পশু ক্রয় বিক্রয় হাট, কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ হাট নামে একটি ওয়েবসাইট চালু রয়েছে, কোন খামারি চাইলে এখান থেকে গরু কেনাবেচা করতে পারবে । এতে করে ক্রেতা বিক্রেতারা করোনা ঝুঁকি থেকে রেহাই পাবে পাশাপাশি আমাদের যে উদ্দেশ্য সেটাও সফল হবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ