শিরোনাম
◈ ডিবি হারুন-অর-রশিদের ‘মুখোমুখি ইউনূস’ ভিডিও ভুয়া: যুক্তরাষ্ট্রে তিনি প্রকাশ্যে আসেননি ◈ জুলাই সনদে সই করেছেন যেসব দলের নেতারা ◈ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন ৪ কর্মকর্তার রদবদল ◈ আমেরিকায় গ্রিন কার্ড লটারি থেকে ৩ বছরের জন্য বাদ ভারত ◈ অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে রেকর্ড রাজস্ব আদায় ◈ আবারও জেন জি’দের বিক্ষোভ, এবার উত্তাল পেরু, পদত্যাগে অস্বীকৃতি প্রেসিডেন্ট হোসে জেরির, জরুরি অবস্থা জারি (ভিডিও) ◈ আসামে সেনা ক্যাম্পে উলফা জঙ্গিদের গুলিবর্ষণ, তিন সেনা সদস্য আহত ◈ জুলাই সনদ স্বাক্ষরের দিনে ‘জুলাই যোদ্ধাদের রাস্তায় নামা লজ্জাজনক’, মন্তব্য জামায়াত আমির শফিকুর রহমানের ◈ আসলে জুলাই যোদ্ধা কারা, গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের নিয়ে কেন বিতর্ক? ◈ ফুটবল নি‌য়ে তৃণমূ‌লে অসাধারণ কা‌জের জন‌্য এএফসির পুরস্কার পেলো বাফুফে

প্রকাশিত : ২৮ জুন, ২০২১, ০১:৩৩ দুপুর
আপডেট : ২৮ জুন, ২০২১, ০১:৩৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কামরুল হাসান মামুন: গত ১০০ বছরেও যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তেমন কোন পরিবর্তন ঘটেনি সেখানে মান কিভাবে বৃদ্ধি পাবে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নয়: সলিমুল্লাহ খান
এই যে খান সাহেব এই কথা বললেন তাতে কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়নি? আসলে রোগ হলে সেই রোগের ডায়াগনসিস যে করে তাকে দোষ না দিয়ে রোগটা যার বা যাদের কারণে হয়েছে তাকে দোষারুপ করা উচিত। এই কথা কি এই প্রথম কেউ বলল বা উপলব্ধি করল? মোটেও না। প্রতিদিন নানা জন নানাভাবে আলোচনা করছে। এইটা না বলা মানে সমস্যাকে ম্যাট্রেসের নিচে চাপা দিয়ে রাখা। তাতেতো আরো খারাপ হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে গত জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসে একটি করে স্বতন্ত্র বিষয়ের উপর তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার আয়োজন করে আসছে। এর শেষ ধাপে ‘উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যৎ’ বিষয়ে ওয়েবিনারের দ্বিতীয় দিনের আয়োজনে ড. খান এই কথা বলেন। সেই ওয়েবিনারে শত শত সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে তিনি এই কথা বলেন। কেউতো আপত্তি বা প্রতিবাদ করেননি। আর প্রতিবাদ করলেই রোগটা নাই হয়ে যায় না। প্রতিবছর বিশ্ব রেঙ্কিং-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অবনমন ঘটছে তার চেয়ে আর বড় প্রমানতো নাই।
যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পদ্ধতি, শিক্ষক নিয়োগ ও প্রমোশন পদ্ধতি গত ১০০ বছরেও তেমন কোন পরিবর্তন ঘটেনি সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মান কিভাবে বৃদ্ধি পাবে? সময়ের সাথে যুগোপযোগী পরিবর্তন আনা টিকে থাকার প্রথম শর্ত। পৃথিবীর বড় বড় যেই টেক কোম্পানিগুলো আছে সেগুলো যদি গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ দিয়ে গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন মডেল না তৈরী করে তারা কি টিকে থাকবে? হউক জীব কিংবা প্রতিষ্ঠান সেটার যদি সময়ের সাথে পরিবর্তন না ঘটে তার উন্নয়ন অসম্ভব। এই ১০০ বছরে পৃথিবী কত এগিয়ে গেল অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে যোগোপযোগী করার জন্য তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি।

ড. সলিমুল্লাহ খান একদম ঠিক বলেছেন যে, "বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর গণতন্ত্রের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে।" একাডেমিয়া গণতন্ত্র দিয়ে চলে না। জনপ্রিয়তার মাপকাঠি দিয়ে অনুষদের ডিন নির্বাচিত হবেন, ভিসি নির্বাচিত হবেন এটাই হলো ৭৩ এর অধ্যাদেশের সবচেয়ে খারাপ দিক। যেখানে প্রতিনিয়ত উৎকর্ষতা সাধন হলো ব্রত সেখানে গণতন্ত্র একদম যায় না। কারণ নির্বাচনে সেই জিতবে যে ভোটারদের কম কষ্টে দ্রুত প্রমোশানের নিয়ম করার প্রতিশ্রুতি দিবে যা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির বিরুদ্ধে। মানুষের স্বভাবজাত চরিত্র হলো ফাঁকি দেওয়া। ভোট মানেই হলো mediocrity-র জয়জয়কার কারণ mediocre দের অহমবোধ কম থাকে। তারা দলবদ্ধ হয়ে তাদের চেয়ে বেটারদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করে। একাডেমিয়া এমন একটি জায়গা যেখানে সবাইকে সব সময় আরো ভালো করার চাপে রাখতে হয়।

এই যে বিশ্ব রেঙ্কিং-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর খারাপ করছে তার জন্য কি কাউকে জবাবদিহী করতে হচ্ছে? এখানেই লুকিয়ে আছে সকল সমস্যা সমাধানের প্রাণভ্রমরা।

লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়