স্বপন দেব: [২] বিশ্বব্যাপি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে চরম উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় রয়েছে বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় যখন নেওয়া হচ্ছে নানান পদক্ষেপ, বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি সেসময় নির্বিচারে নিধন করা হলো দেশের সর্ববৃহৎ জলাভুমি হাকালুকি হাওরের মালাম বিলের কান্দির ৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী ২০ হাজার জলজ বৃক্ষ হিজল, করচ ও বরুন।
[৩] যা প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অর্থায়নে সৃজিত। হাওরের গাছ কেটে পরিবেশের এতো বড় ক্ষতির পরও রহস্যজনক কারণে নির্বাক জীববৈচিত্র ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগ। কিন্তু এখনও পরিবেশ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোনো আইনি ব্যবস্থা। এতে হাওরপাড়ের সাধারণ মানুষ ও পরিবেশবাদীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
[৪] অবশেষে উক্ত জলজ বনের পাহারাদার আব্দুল মনাফ গত ৩০ মে ৭ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইউএনও নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যার অনুলিপি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী, পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসককে দেয়া হয়েছে।
[৫] অভিযোগ সূত্র জানা গেছে, হাকালুকি হাওরের অর্ন্তভুক্ত বড়লেখা উপজেলার মালাম বিলের (মৎস্য জলাশয়) আয়তন ৪২৮.৯২ একর। ১৪২৭ বাংলা হতে ১৪৩২ বাংলা সন পর্যন্ত সময়ের জন্য ভুমি মন্ত্রণালয় থেকে ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৪৩ টাকায় মালাম বিলটি ইজারা নিয়েছে বড়লেখা উপজেলার মনাদি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি।
[৬] মালাম বিলের কান্দির (পাড়ে) সরকারী ভুমিতে পরিবেশ অধিদপ্তর ২০০৩ সাল হতে বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থায়নে হিজল, করচ, বরুনসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ বৃক্ষ রোপন করে। এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো জলজ বৃক্ষের রক্ষনাবেক্ষন করে। বর্তমানে প্রাকৃতিক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সৃজিত জলজ উদ্ভিদগুলো ১০-১৫ ফুট উচ্চতার হয়েছে। যা হাকালুকি হাওরের ইসিএ এলাকার জীববৈচিত্র রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধে বিশেষ অবদান রাখছে।
[৭] গত মে মাসের প্রথম দিকে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ইজারাদারের লোকজন বিলের বাঁধ নির্মাণের নামে পরিবেশ অধিদপ্তরের ও প্রাকৃতিক জলজ বনের প্রায় ২০ হাজার গাছ অবৈধভাবে কেটে নিয়েছে। এতে হাওরের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র মারাত্মক হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়েছে।
[৮] বড়লেখার ইউএনও খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী জানান, হাকালুকির মালাম বিলের পাড়ের ব্যাপক জলজ বৃক্ষ কেটে ফেলার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্পাদনা: হ্যাপি