শাহীন খন্দকার : [২] করোনাভাইরাস সংক্রমণ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া রোধেই রাজশাহীর সব যাত্রীবাহী ট্রেন সাত দিন বন্ধ থাকবে। মধ্যরাতে বাংলাদেশ রেলওয়ে অধিদপ্তরের পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ সফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
[৩] এতে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় করোনাভাইরাস (কেভিড-১৯) সংক্রমণের বিস্তার রোধকল্পে ১১ জুন শুক্রবার মধ্যরাত হতে ১৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত রাজশাহী থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলকারী যাত্রীবাহী সব ট্রেন বন্ধ থাকবে। এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রাজশাহীতে সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে ১৭ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন।
[৪] বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত রাজশাহীর সার্কিট হাউসে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জরুরি বৈঠকে এ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে এ বিষয়ে ব্রিফ করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবীর।
[৫] এ সময়কালে পাঁচটি আন্তঃনগর ও একটি মেইল ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণরুপে বন্ধ থাকবে। সেসঙ্গে চারটি আন্তঃনগর ট্রেনের রুট পরিবর্তন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে লকডাউনের সময়কালে সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে ঢাকা-রাজশাহী রুটের পদ্মা এক্সপ্রেস, রাজশাহী-চিলাহাটি-রাজশাহী রুটের তিতুমীর এক্সপ্রেস, রাজশাহী-বীমুসিই-রাজশাহী রুটের বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস, রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটের বনলতা এক্সপ্রেস এবং ঢালারচর- রাজশাহী-ঢালারচর রুটের ঢালারচর এক্সপ্রেসের যাত্রা।
[৬] রুট সংক্ষিপ্ত করে রাজশাহী-খুলনা-রাজশাহী রুটের সাগরদাড়ী এক্সপ্রেস, ঈশ্বরদী-খুলনা-ঈশ্বরদী, রাজশাহী-ভাঙা-রাজশাহী রুটের মধুমতি এক্সপ্রেস, ঈশ্বরদী-ভাঙ্গা-ইশ্বরদী, চিলাহাটি রাজশাহী-চিলাহাটি রুটের বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, চিলাহাটি-আব্দুলপুর-চিলাহাটি এবং রাজশাহী- গোবরা - রাজশাহী রুটের টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী- গোবরা-ঈশ্বরদী রুটে চলাচল করবে। এর পাশাপাশি রহনপুর-খুলনা-রাজশাহী ও পার্বতীপুর-রাজশাহী-পার্বতীপুর রুটের মেইল ট্রেনও বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও শুক্রবার (১১ জুন) রাজশাহী স্টেশন হতে মধুমতি, সাগরদাঁড়ী ও মহানন্দা এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো সঠিক সময়ে ছেড়ে যাবে৷ যা ফিরতি পথে ইশ্বরদী এসে যাত্রা শেষ করবে। পরবর্তী দিন হতে ট্রেনগুলো ঈশ্বরদী হতে পরিচালিত হবে।
[৬] এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে রাজশাহীর আটজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয়জন ও নাটোরের একজন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময় তারা মারা যান বলে জানান হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস।
[৭] তিনি জানান, মৃত ১৫ জনের মধ্যে সাতজন করোনা শনাক্ত হওয়ার পর মারা যান। বাকিরা মারা যান নমুনা পরীক্ষার আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। আর করোনা শনাক্ত সাতজনের মধ্যে রাজশাহীর চারজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুজন ও নাটোরের একজন। গত ১১ দিনে (১ জুন সকাল ৬টা থেকে ১১ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১০৮ জন। এর মধ্যে ৬৩ জনই মারা গেছেন করোনা শনাক্ত হওয়ার পর। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। সম্পাদনা: মেহেদী হাসান