আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের মিনেয়াপোলিসের রাস্তায় গত বছর আফ্রিকান-আমেরিকান নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার দায়ে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনের ৩০ বছর কারাদণ্ড চেয়েছেন কৌঁসুলিরা।
বুধবার মার্কিন আদালতে কৌঁসুলিরা বলেন, ফ্লয়েডের হত্যা পুরো পৃথিবীর জাতির বিবেককে স্তব্ধ করে দিয়েছে। জর্জ ফ্লয়েড হত্যার কারণে বর্ণবৈষম্য এবং পুলিশি শক্তি প্রয়োগের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা তার দীর্ঘমেয়াদি ৩০ বছর জেলের সাজা দাবি করছি।
অন্যদিকে প্রতিপক্ষ কৌঁসুলি মনে করছেন, এটা ডেরেক শভিনের ভালো কাজগুলোর মধ্যে একটা ত্রুটি মাত্র। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনকালে তিনি ফ্লয়েডকে গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত অপরাধী ভেবেছিলেন। এ সময় ফ্লয়েডের মৃত্যুটা ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত। তাই শভিনের শাস্তির মেয়াদ সীমিত করার আবেদন করছি।
বিচারক পিটার চাহিল বলেছেন, শভিন তার হাঁটু ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর ৯ মিনিট ধরে চেপে ধরে বসে থাকে। এ সময় দম বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান। এমন নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডের শাস্তি ১৫ বছরের বেশি হতে পারে। তবে, শভিনকে ৩০ বছর মেয়াদি শাস্তি প্রদান করে ভুক্তভোগীর পরিবার এবং কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের প্রতি সম্মান জানানোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে কৌঁসুলিরা বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না, আইনের নিচেও না। আদালতকে শাস্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এটার প্রমাণ দিতে হবে।
২০২০ সালের ২৫ মে মিনেয়াপোলিসের একটি দোকান থেকে এক প্যাকেট সিগারেট কিনেছিলেন ৪৬ বছর বয়সি জর্জ ফ্লয়েড। দোকানের কর্মী মনে করেছিলেন যে, তিনি ২০ ডলার মূল্যের একটি নকল বিল ব্যবহার করছিলেন এবং মি. ফ্লয়েড যখন সিগারেটের প্যাকেটটি ফেরত দিতে চাননি তখন তিনি পুলিশ ডাকেন। পুলিশ পৌঁছানোর পর তারা ফ্লয়েডকে তার পার্ক করে রাখা গাড়ি থেকে নামতে বলেন এবং তার হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের গাড়ি তোলার সময় মি. ফ্লয়েড চিৎকার করার চেষ্টা করলে ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। এ সময় শভিন তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। শভিন তার হাঁটু ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর ৯ মিনিট চেপে ধরে বসে থাকেন। এ সময় ফ্লয়েড অন্তত ২০ বার বলেছিলেন যে, তিনি শ্বাস নিতে পারছেন না। ফ্লয়েড বলছিলেন, ‘দয়া করুন, দয়া করুন, দয়া করুন।’ যখন অ্যাম্বুলেন্স এসে পৌঁছায় ততক্ষণে ফ্লয়েড নিথর হয়ে গেছেন। এর এক ঘণ্টা পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনার পর বিশ্ব জুড়ে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়।
আপনার মতামত লিখুন :