চৌধুরী হারুন: [২] পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাই-বোনসহ স্বজনদের হামলায় গুরুত্বর আহত তিন সন্তানের জনক আব্দুল মজিদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন।
[৩] বুধবার রাতে শহরের রিজার্ভ বাজারের মহসিন কলোনী এলাকায় এই নির্মম হামলার ঘটনা ঘটে। এই হামলায় নিহত আব্দুল মজিদ এর ১৫ বছর বয়সী বড় ছেলে ইব্রাহিম আলভীন পিয়াল ও স্ত্রী নুর বানু বেগম(৩৫) গুরুত্বর আহত হয়। আহত মা-ছেলে উভয়েই রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
[৪] শুক্রবার দুপুরে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবস্থার অবনতি ঘটলে আব্দুল মজিদকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আর এমও ডাঃ শওকত আকবর খান।
[৫] এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতেই আব্দুল মজিদ মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে তার আহত পুত্র পিয়াল। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ডান হাতের কব্জি কেটে যাওয়া নুর বানু জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানিয়েছেন, তাহার মরহুম শ^শুর জীবিত থাকাকালে সামান্য খাস জমি তার স্বামীর নামে লিখে দিয়ে যায়।
[৬] কারন আব্দুল মজিদই তার বৃদ্ধ বাবাকে খেদমত করতো এবং ভরন-পোষণ চালিয়েছিলো। উক্ত জায়গায় বসবাস করে আসছিলো নুর বানু ও আব্দুল মজিদ। কিন্তু এই জায়গা অন্যান্য ভাই ও বোনরা নিজেদের পৈত্রিক অংশ হিসেব করে ভাগ বাটোয়ারার দাবি করছিলো। এতে আব্দুল মজিদ বাধা দেওয়ায় তাদের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো দীর্ঘদিন ধরে।
[৭] তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার সন্ধ্যারাতে আব্দুল মজিদের বড় ভাই আব্দুল গফুর, আব্দুল লতিফ ভুট্রো(৪০)(মজিদের মেজ ভাই), মোঃ আরজু (৩৫)(মজিদের বড় ভোনের ছেলে), মোঃ খোকন(৪০)(মজিদের ভাগ্নীর জামাই), মোঃ রায়েদ(১৯)(মজিদের বড় বোনের বড় মেয়ের ছেলে), মোঃ আসিফ(১৯)(মজিদের বড় ভাইয়ের ছেলে), মিনু আক্তার(৩৫)(মজিদের বড় ভোনের মেয়ে), নাসিমা বেগম(৪০)(মজিদের বড় ভাইয়ের বউ) উপরোক্ত সকলে মিলে আব্দুল মজিদের ঘরে প্রবেশ করে লোহার রড, গাছের বাটাম ও ইট দিয়ে বেদড়ক পেঠাতে থাকে।
[৮] এসময় মজিদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তার বড় ছেলে পিয়াল(১৫) ও স্ত্রী নুর বানু এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা চালিয়ে বেদড়ক পেঠানো হয়। এসময় পিয়ালের মাথা ফেটে যায় এবং চোখে-মুখে আঘাত পায়স এবং নুর বানুর হাতের কব্জি মধ্যাংশ কেটে দেয়া হয়। খবর পেয়ে আব্দুল মজিদের শশ^র বাড়ির লোকজন এসে মুমুর্ষ অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে বুধবার মধ্যরাতে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে আব্দুল মজিদ রক্ত বমি করতে থাকলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
[৯] এদিকে হামলা পরবর্তী নিহতের ঘটনায় কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে নাসিমা বেগম নামের একজনকে আটক করেছে এবং এই মর্মান্তিক ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কবির হোসেন।
[১০] সামান্য একটুকরো খাস জমির ভাগ-বাটোয়ারার জন্য ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়ে (এক বছর বয়সি ও ৫ বছর বয়সী দুইটি কন্যা সন্তান ও ১৫ বছর বয়সী এক ছেলের জনক) নিজ আপন ভাইকে এভাবে পিঠিয়ে মেরে ফেলার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
[১১] উল্লেখ্য রাঙামাটি শহরে স্থানীয় তথাকথিত জনপ্রতিনিধির আশ্রয়ে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট । এই সিন্ডিকেট এর উস্কানীতে শহরে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের খাস এবং রের্কডীয জায়গা দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে । দখল ও দুষণের কবলে রাঙামাটি শহরে সংশ্লিষ্ট দৃশ্যমান কিছুই করতে পারছে না ।
আপনার মতামত লিখুন :