জাকির হোসেন: [২] উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে একসময় রূপশ্রী, মৌসুমী, বলাকাসহ ১২টি সিনেমা হল ছিলো। বর্তমানে এর সব কটিই বন্ধ। বেশির ভাগ হল ভেঙে বসতবাড়ি কিংবা মার্কেট করা হয়েছে। দু-একটি হল কোনোমতে পুরনো কাঠামো নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও সেখানে চলছে অন্য ব্যবসা। সব মিলিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলাসহ পীরগঞ্জ,রাণীশংকৈল, হরিপুর, বালিয়াডাঙ্গী, রুইহা, নেকমরদে অবস্থিত সিনেমা হল এখন বিলুপ্তির পথে।
[৩] একটা সময় ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ ছবিটি দেখার জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মিনিবাস, ট্রাক্টর, পিকআপ বা ভ্যান ভাড়া করে ঠাকুরগাঁওয়ের বলাকা সিনেমা হলে আসত দর্শকরা। উপচে পড়া দর্শকের টিকিট পাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতা চলত। বলাকার পাশাপাশি শহরের সব কটি হল সারা বছর জমজমাট থাকত। এখন ঠাকুরগাঁওয়ের সিনেমার সোনালি অতীত ইতিহাসমাত্র।
[৪] সদর উপজেলার বলাকা সিনেমা হলের পরিচালক ও ম্যানেজার আতাউর রহমান বলেন, ‘হল ব্যবসায় দীর্ঘদিন ধরে লোকসান চলছিল। তাই চার বছর আগে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। মাঝেমধ্যে ঈদ উপলক্ষে সপ্তাহ দু-একের জন্য এটি চালু করা হয়। কারণ বছরের অন্য সময় দর্শক না থাকলেও ঈদের সময় ভরপুর থাকত। কিন্তু এ বছরে ঘটেছে উল্টো চিত্র।
[৫] এবারের ঈদে ছবি চালিয়ে আমাদের অনেক টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। তাই আগামী দিনে হয়তো বা ঈদেও হলটি আর চালু করা হবে না।’
[৬] বন্ধ হয়ে যাওয়া মৌসুমী হলের সাবেক কর্মচারী মেহের আলী বলেন, ‘একসময় হলে চাকরি করে আমাদের সংসার চলত। ধীরে ধীরে হল ব্যবসায় ধস নামে। দর্শকরাও হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। একটা পর্যায়ে হল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন মালিক। এখন হলের পরিবর্তে সেখানে চালকল বসানো হয়েছে।’
[৭] সিনেমা প্রেমীরা বলেন, ‘বিনোদনের একটি বড় মাধ্যম হচ্ছে চলচ্চিত্র। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলো, এ জেলায় কোনো সিনেমা হল এখন আর চালু নেই। ঈদ উপলক্ষে যে একটি হল চালু করা হতো, তা-ও এখন বন্ধ। তাই চলচিত্রশিল্পের বিকাশ ও মানুষের সুস্থ বিনোদনের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও হল মালিকদের এগিয়ে আসা উচিত। দ্রুত এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া না হলে একসময় এ শিল্প একেবারেই হারিয়ে যাবে।’ সম্পাদনা: হ্যাপি