শিরোনাম
◈ রাতে বাংলামোটরে জুলাই পদযাত্রার গাড়িতে ককটেল হামলা (ভিডিও) ◈ যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক মোকাবেলায় বাংলাদেশের চার দফা কৌশল ◈ বিআরটিএর মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে কঠোর নির্দেশনা ◈ সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে বাংলাদেশ হার‌লো ৭৭ রা‌নে ◈ ২০ বছরেও অধরা এমআই-৬'র ভেতরের রুশ গুপ্তচর! (ভিডিও) ◈ নারী ফুটবলের এই অর্জন গোটা জাতির জন্য গর্বের: প্রধান উপদেষ্টা ◈ প্রবাসীদের জন্য স্বস্তি: নতুন ব্যাগেজ রুলে মোবাইল ও স্বর্ণ আনার সুবিধা বাড়লো ◈ একযোগে ৩৩ ডেপুটি জেলারকে বদলি ◈ 'মধ্যপ্রাচ্যে সিলেট-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকেরা ঘোষণা দিয়ে মারামারি করে' (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২১ মে, ২০২১, ০২:৪৬ রাত
আপডেট : ২১ মে, ২০২১, ০২:৪৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আরিফুজ্জামান তুহিন: শ্রেণি সংগ্রামের ইমাম আছেন, আমরা শুধু সালাফিস্টদের দেখি!

আরিফুজ্জামান তুহিন: শ্রেণি সংগ্রামের ইমামকে আপনারা চিনেন না, ওয়ান ইলেভেনের সময় প্রায় সব বামপন্থী ছাত্র নেতারা বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে ছিলেন, আমিও পালিয়ে আমার মামা বাড়িতে ছিলাম। প্রবল প্রতাপশালী মামার বাবা ভয়াবহ কমিউনিস্ট বিরোধী মানুষ হওয়ার কারণ একাত্তর সালে নকশালরা তার গালে খুব কসে থাপ্পড় দিয়েছিলেন বাড়িতে থাকা দুটি বন্দুক ও ধানের জন্য। সেই থেকে আমার মায়ের বাবা মানে আমার নানাজান ও তার পুত্র-কন্যা এবং তাদের আওলাদরা ছিলেন কমিউনিস্ট বিরোধী। ওয়ান ইলেভেনের সময় আমি সেই কমিউনিস্ট বিরোধী মামা বাড়িতে আশ্রয় নিই, এ ঘটনার বহু আগে নানা মরে জৈব সার হয়ে গেছেন। মামাবাড়ির পাশে প্রকাণ্ড একটা মসজিদ। সে মসজিদের সভাপতি আমার রাগী ছোট মামা। আমি সারাদিন ঘুমাই, বাসায় বসে থাকি, সন্ধ্যা হলে বের হই।

সবাই যখন মসজিদের দিকে যায়, আমি উদাসমুখে বেনসন টানি মাঝে মধ্যে হাতে রেডবুক থাকে। গোধুলী আলোয় আমি আসলে রেডবুক পড়ি না, বেশির ভাগ সময় ধরে রাখি। মসজিদের ইমাম সাহেব আমাকে দেখে লম্বা সালাম দেন। আমি সালামের উত্তর দিই না। আরও উদাস হয়ে পশ্চিম আকাশের দিকে তাকাই। ভরা যৌবনের মতো বিলের বুকে পানি থই থই করে। বিলের আগাগোড়া নেই। একাত্তর সালে এই বিল ছিল নকশালদের দখলে। একদিন গ্রামের বাজারে ভাব হলো ইমামের সাথে। দুধ চায়ের সাথে ইমাম গোগ্রাসে টোস্ট বিস্কিট খান, ভাতের  মতো খান। ইমাম সাহেবের খাওয়া দেখে বুঝতে পারি তার পেটে ক্ষিদে থাকে। মাঝে মধ্যে হাদিস কোরআন থেকে আমাকে ওয়াজ নসিহত দেয় কমিউনিস্ট না হতে।

আমি সেসব শুনি না, হাতে ধরা থাকে রেডবুক। যেদিন চলে আসব তার আগের দিন মাগরিবের নামাজ শেষে আমার রুমে এলেন ইমাম সাহেব। যা বললেন, তাই তুলে ধরলাম। ‘আপনারাতো কমিউনিস্ট, ইমামদের খোঁজ রাখেন? আমি চুপ। তিনি বললেন,  মাসে বেতন পাই ছয় হাজার টাকা। বছরের ৩৬৫ দিন নামাজ পড়াতে হয়, কামাই গেলে চাকরি যাবে। পুরো টাকাটা দিই বাড়িতে। বাড়িতে মা ও স্ত্রী থাকেন। আমার স্ত্রী দেখতে শাবনূরের চেয়ে সুন্দর। সে  কতোবার কানের দুল ও লাল শাড়ি পরে শহরে ঘোরার আব্দার করেছে, টাকা না থাকায় নিতে পারিনি। বলেছি, ওসব বেদাত কাজ। তিনবেলা যাদের  বাড়িতে খেতে যাবো, তার তালিকা আপনার মামা করে দিয়েছেন। কারও বাড়ি খেয়ে বের হলে পাড়ার পোলাপান বলে, মোল্লা ফাউ খায়। আপনি বলেন, এই কী মানুষের জীবন? আপনারা কবে বিপ্লব করবেন? ক্ষিদের যন্ত্রণা আপনারা বুঝবেন না, বড়লোক কমিউনিস্ট আপনারা। আপনারা বুঝবেন না। আমি ইমামের প্রশ্নের জবাব দিই না।

চুপ করে বসে থাকি। ইমাম ফের বলেন, ওই লাল বই আপনারা খুব মানেন, না? ওখানে কি সব প্রশ্নের জবাব আছে? সেদিন আমার কাছে জবাব ছিল না, আজও নেই। মামা বাড়ির সেই ইমামের কোনো খোঁজ রাখিনি। ভেবেছিলাম, এটা নিয়ে সিনেমা বানাব। একটা ছোট গল্পও লিখেছিলাম, পিরিতের দরিয়ায় ভেসে যায় শরিয়তের নৌকা। সেদিন খবরে পড়লাম, মসজিদের চাকরি হারিয়ে একজন ইমাম আত্মহত্যা করেছে। শ্রেণি সংগ্রামের ইমাম আছেন, আমরা শুধু সালাফিস্টদের দেখি। কারণ পুঁজিবাদের এই যুগে বিজ্ঞাপন বড় সত্য, ইউটিউব আরও বড় সত্য। ইহাদের ভিড়ে তাহাদের খোঁজ মেলে না। মেলে না। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়