দীপু তৌহিদুল : করোনার প্রাণঘাতী আঘাতে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল শুয়ে পড়েছে আর বাংলাদেশের লোকজনের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে তারা অমরত্বের গোটা খেয়ে নিশ্চিন্তে আছে। বেশির ভাগ মানুষই শপিং করছে, ব্যক্তিগত পর্যায়ে ইফতার পার্টি করছে, সাহিত্য বাসর চলছে ধুমছে। এর ওপর লকডাউনের বিপক্ষেও অনেকে সোশাল মিডিয়ায় সোচ্চার। তারা সবাই তারস্বরে সব খুলে দাও গরিব বাঁচাও স্লোগান তুলে চিৎকার করছে। বাংলাদেশে বহু মানুষ এই সাধারণ ছুটিতে আর্থিকভাবে খুব কষ্ট আছে, এটাও যেমন সত্যি তেমনি এর পাশাপাশি এটাও সত্যি বাংলাদেশে না খেয়ে এখনো মরে যাচ্ছে এমন কথা শোনা যায়নি। এই ছুটিটা আসলে ফুর্তির ছুটি না, এটা প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা মাত্র। এটা করা ছাড়া এদেশের আর কোনো পথই খোলা নেই। যদি থাকে, সেটা পরামর্শ হিসেবে রাষ্ট্রকে দিন। অথচ এই দায়সারা গোছের লকের নামে সাধারণ ছুটির কারণেই এখনো বাংলাদেশে করোনার ডেথ রেট কমে আছে। পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্র করোনা নিয়ন্ত্রণে যা যা করে যাচ্ছে বাংলাদেশকে এখন সেটা অনুসরণ করে যেতে হবে, এর বিকল্প নেই। আজকে যারাই সব উদাম করে খুলে দাও বলে চিৎকার জুড়েছে, ভারত-নেপালের মতন করোনা বোমার প্রাণঘাতী বিস্ফোরণটা ঘটে গেলে, তাদের কাউকে সার্চ লাইট মেরেও সোশাল মিডিয়াতে খুজেও পাওয়া যাবে না।
তারা সবাই যে যার খাটের নিচে ট্রেঞ্চ কিংবা গর্ত করে সেঁধিয়ে যাবে। সরকারের ভুল কাজের সমালোচনাগুলো অবশ্যই করতে হবে, কিন্তু সেটা যুক্তিসঙ্গত পথে করতে হবে। আবেগ দিয়ে পাহাড় ঠেলে কোনো লাভ নেই। আমি আপনি সোশাল মিডিয়ায় অনেক কথাই বলতে পারি, কিন্তু সেটার উপর দিয়ে গোটা জাতির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমাদের সবার দেখা উচিত, জীবিত মানুষরা একের পেছনে আরেক লাইন ধরে দাড়ায় আর সেখানে ভারত-নেপালে করোনায় মৃত লাশেরা জ্বলে যাবার জন্য লাইন ধরে শুয়ে থাকছে। এর চাইতে মর্মান্তিক ঘটনা আর কি আছে? বাংলাদেশে অচিরেই ভারত এবং নেপালের মতন করোনার খুব খারাপ চিত্র যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে। এমনটা ঘটে যেতে খুব বেশি না দিন পাঁচেকের করোনা ঝড় যথেষ্ট হবে, একবার শুরু হয়ে গেলে সেই ঝড় থামানো মুশকিল ঠিক না, অসম্ভব হবে। বলি না এটা ঘটবে, তবে যে ভাবে বাংলাদেশ এখন চলছে, তাতে করে দ্রুততম সময়ে খারাপ কিছুর আশঙ্কা করছি। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :