বন্যা আহমেদ : কোভিড-১৯ যেন আমাদের বর্তমান বিশ^-ব্যবস্থার দেউলিয়াত্বকে চোখের সামনে তুলে ধরছে দিনের আলোর মতো। বাইডেন মানে আমেরিকার সরকার, বহু চাপের পরে, শেষ পর্যন্ত করোনা ভ্যাক্সিনের ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি সংরক্ষণের নীতি থেকে সরে এসেছে। এতে বাহবা দেওয়ার কিছু নেই। কারণ এরকম একটা ভয়াবহ অতিমারির সময়ে এতোদিন ধরে যে এটা আটকে রাখা হচ্ছিল সেটাতেই বরং লজ্জিত হওয়া উচিত আমাদের সবার। এতে করে যে রাতারাতি কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন তৈরির ফরমুলা ওপেন হয়ে গেলো বিশ্বের অন্যান্য দেশের ওষুধ কোম্পানিদের হাতে তাও কিন্তু নয়, তবে সেদিকে একধাপ এগুলো- এই আর কী। পুরোপুরিভাবে ওপেন হতে আন্তর্জাতিকভাবে আরও বহু স্তর পেরুতে হবে। ইউ এবং ব্রিটেন এখনো তাদের আপত্তি বহাল রেখেছে। কিন্তু এতেই অস্থির হয়ে উঠেছে বড় বড় ওষুধ কোম্পানিগুলো, প্রবল আপত্তি জানাছে তারা- এতে করে নাকি ভবিষ্যতের ইনোভেশন করার উৎসাহ নষ্ট হয়ে যাবে, ভ্যাক্সিন তৈরির ফরমুলায় এবং কাঁচামালে তাদের একক অধিকার চলে গেলে নাকি বিশাল বিপর্যয় ঘটে যাবে।
ফাইজারের এবারের কোয়াটার্লি ফাইনান্সিয়াল রিপোর্ট বলছে তারা ইতোমধ্যেই কয়েক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে ফেলেছে ভ্যাক্সিন বিক্রি করে। কিন্তু তাতে কী? আজকে যে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে, নতুন করে দ্বিতীয়-তৃতীয় ওয়েভ ছড়িয়ে পড়ছে, তাতেই বা কী? তারা খুব ভালোভাবেই জানে যে, শুধু তাদের নিজের নিজের দেশগুলোতে এই প্যান্ডেমিক সামাল দিলেই আমেরিকা-ইউরোপবাসীরা এ থেকে রক্ষা পাবে না এবং সারা পৃথিবীজুড়ে কোভিড-১৯ এর লাগাম টেনে ধরতে না পারলে একে কিছুতেই দমন করা সম্ভব না- কিন্তু তাতেও কিছু এসে যায় না। এখানে মুনাফাই একমাত্র সর্বস্ব। এর জন্য পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেলেও আপত্তি নেই। দেখা যাক এই ধ্বংসের রাস্তা ধরে কতোদূর যেতে পারে আমাদের তথাকথিত ‘মানবতা’। ফেসবুক থেকে