শিরোনাম
◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক

প্রকাশিত : ০৭ মে, ২০২১, ০৬:০৫ সকাল
আপডেট : ০৭ মে, ২০২১, ০৬:২২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অর্থবছরের প্রথম নয় মাস: রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যের চেয়ে ঘাটতি ৩৫ হাজার কোটি টাকা

নিউজ ডেস্ক: করোনার প্রথম ধাক্কা সামলে গতি ফিরে পেয়েছিল অর্থনীতি। করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ শুরুর আগ পর্যন্ত কয়েক মাস ধরে আমদানি-রফতানি বেড়েছে, স্থানীয় উৎপাদন ও সরবরাহেও গতি আসে। ফলে রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এ রাজস্ব আহরণ ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম। যদিও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে রাজস্ব আহরণে। এনবিআরের সর্বশেষ প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে এনবিআরকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রথম নয় মাসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ১৩ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৬৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণ সম্ভব হয়েছে। এদিকে একক মাস হিসেবে চলতি অর্থবছরের মার্চে গত অর্থবছরের মার্চের তুলনায় প্রায় ৪ হাজার ৬৫১ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আহরণ করেছে এনবিআর। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। চলতি বছরের মার্চে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ২৫ হাজার ১৮৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা, গত বছরের মার্চে যা ছিল ২০ হাজার ৫৩৪ কোটি ১২ লাখ টাকা।

এদিকে কভিড-১৯ সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কা রোধে গত ১৪ এপ্রিল থেকে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ বা চলাফেরায় বিধিনিষেধ শুরু হয়ে এখনো তা চলমান রয়েছে। তিন দফা বাড়িয়ে এ লকডাউন ১৬ মে মধ্যরাত পর্যন্ত করেছে সরকার। এ সময় শিল্পপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এমন অবস্থায় লকডাউন কিংবা করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে আবারও শ্লথগতি দেখা দিতে পারে। এতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব আদায়ের কাঙ্ক্ষিত গতি কমে যাবে। ফলে আগামীতে বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে এনবিআরের কর্মকর্তারা বলেন, রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে গত অর্থবছরের তুলনায় এ অর্থবছরের নয় মাস ভালো ছিল না। তবে মাঝের কয়েকটি মাস ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য তুলনামূলক অনেকটা ভালো ছিল। এছাড়া রাজস্ব বাড়ার জন্য বেশকিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত যেমন ট্যাক্সরেট কমানোসহ করোনার মধ্যেও কর্মকর্তারা যথেষ্ট পরিমাণে পরিশ্রম করেন। এক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকেও তদারকি ভালো ছিল। তাই রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও মোটামুটি ভালো প্রবৃদ্ধি ছিল। কিন্তু আবারো লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তাই আগামীতে রাজস্ব আহরণে বড় ঘাটতির শঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এবার রাজস্ব আহরণে করোনার ধাক্কা লেগেছে এটা ঠিক। তবে প্রতি বছরই সক্ষমতার চেয়ে এনবিআরকে রাজস্ব আহরণে অতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়। এ কারণে কোনো বছরই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে না এনবিআর। তাই আগামী বাজেটকে আরো গ্রহণযোগ্য করতে এনবিআরকে বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা দিতে বলেন তিনি। একই সঙ্গে বেশকিছু সংস্কারমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতেও পরামর্শ দেন তিনি।

এনবিআরের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট থেকে ৪৩ হাজার ৯৩১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার রাজস্ব আহরণ হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৪২ শতাংশ বেশি। গত মার্চ পর্যন্ত এ খাতে রাজস্ব আহরণ হয়েছিল ৪২ হাজার ৮৯৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এছাড়া আমদানি পর্যায়ে মূসক বা ভ্যাট থেকে নয় মাসে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ২৬ হাজার ৫০১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি।

আয়কর খাত থেকে নয় মাসে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৫৫ হাজার ৫৭১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি। এছাড়া চলতি অর্থবছরের নয় মাসে আমদানি শুল্ক খাত থেকে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ২১ হাজার ৪৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। আমদানি পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক থেকে এ সময়ে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৬ হাজার ২৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কম। স্থানীয় পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক থেকে নয় মাসে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ২১ হাজার ৭৮৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি।

এছাড়াও গত নয় মাসে আবগারি শুল্ক থেকে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ২ হাজার ২১৯ কোটি টাকা। আর ভ্রমণ কর থেকে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ২৩২ কোটি ২২ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৭১ দশমিক ১২ শতাংশ কম। পাশাপাশি টার্নওভার ট্যাক্স থেকে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। - বণিক বার্তা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়