মঈন উদ্দীন: রাজশাহীতে কাফনের কাপড়ে মোড়ানোর পর জানাজার জন্য লোকজনকেও ডাকা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সব আয়োজন ভেস্তে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো শিশু মারুফ হাসানের (৭) লাশ শুক্রবার বেলা দেড়টায় উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুর বাবা শাহাজাহান আলী, সৎমা মুক্তা খাতুন, দুই চাচা আজিম ও কাজিম আলীকে থানায় নেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামে।
মারুফ হাসান উপজেলার বিনোদপুর গ্রামের শাহাজাহান আলীর দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে। শিশুর মায়ের অভিযোগ, বাবা ও সৎমা তাঁর ছেলেকে মেরে ফেলেছে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দাবি, শিশুটিকে জিনে মেরে ফেলেছে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালে শিশু মারুফ হাসানকে বাড়িতে সৎমায়ের কাছে রেখে শাহাজাহান আলী কাজের জন্য বাইরে যান। শিশুটি অস্বাভাবিক আচরণ করছে বলে সৎমা মুক্তা বেগম মুঠোফোনে তাঁর স্বামীকে জানান। স্বামীর পরামর্শে স্থানীয় কবিরাজের কাছ থেকে ফুঁক দেওয়া পানি শিশুর নাকে মুখে পানি ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এতে কোনো উন্নতি হয়নি।
একপর্যায়ে শিশুটি অচেতন হয়ে পড়ে। এ সময় চাচা ও প্রতিবেশীরাও ছুটে এসে শিশুর চেতনা ফেরানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে শিশুটি মারা যায়। স্থানীয় লোকজন বলেন, শাহাজাহান আলীর তিন স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর মারুফা বেগমকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন। তাঁদের প্রথম সন্তান মারুফ হাসানের জন্ম হয়। দুই বছর আগে মারুফার সঙ্গে শাহাজাহানের ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর মারুফ হাসান তার বাবার কাছে থাকত।
বাগমারা থানার এসআই রিপন কুমার জানান, ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। এখনো মামলা হয়নি। তবে শিশুর শরীরে আঘাতের চিহ্ন বা হত্যার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য উদ্ধার করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :