ফজলুল হক: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি সুতা তৈরির কারখানায় দু-দফায় হামলা ও ভাংচুর করেছে বহিরাগত বখাটেরা। এসময় কারখানার নিরাপত্তাকর্মী ও ফায়ার কর্মীসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তাদের মারধরে আহত হয়েছে আরো পাঁচজন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এলাকাবাসী, পুলিশ ও কারখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার উত্তর লস্করচালা এলাকার করতোয়া স্পিনিং মিলস্ লিমিটেড নামে সুতা তৈরির একটি কারখানা রয়েছে। ওই কারখানার ভিতরে মাটি ভরাটের কাজ চলছিল। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার লস্করচালা এলাকার ফজলুল হকের ছেলে সাইফুল ইসলাম, হাটুরিয়াচালা এলাকার ইছব উদ্দিনের ছেলে জাকির হোসেন, ঝেনজীচালা এলাকার হারেজ উদ্দিনের ছেলে টিটু মিয়ার নেতৃত্বে সাইফুল ইসলাম, বরকত আলী, সবুজ হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ বহিরাগত লোক কারখানায় ঢুকে মাটি ভরাটের কাজ কন্ধ করার জন্য লেবারদের ভয়ভীতি দেখায়। তাদের বাধা উপেক্ষা করে কাজ করতে গেলে তারা লেবারদের মারধর করে এবং কাজ বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়। পরে হামলাকারী বহিরাগতরা চলে গেলে লেবাররা আবারো মাটি ভরাটের কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে ওইদিন বিকেলে হামলাকারীরা দা, ছুরি, চাকু, লোহার রড, ষ্টেলের পাইপ ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কারখানার বাউন্ডারী ওয়াল টপকাইয়া ভিতরে ঢুকে এবং ভাংচুর শুরু করে। এ সময় কারখানার মেকানিক বায়েজিতের পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করলে তার পেটের ভুরি বেরিয়ে যায়। তাকে বাঁচাতে কারখানার ফায়ার কর্মী রাব্বি এগিয়ে গেলে তারা তাকেও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
এ সময় কারখানার কর্মচারী মনির হোসেন এগিয়ে গেলে লোহার রড দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। এতে তারও মাথা ফেটে যায়। এ সময় হামলাকারীরা আরো কয়েকজন কর্মচারীকে মারধর করে। তাদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা নানা ধরণের হুমকি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন ও কারখানার কর্তৃপক্ষ আহত রাব্বি ও মনিরকে উদ্ধার করে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এছাড়া বায়েজিতের অবস্থা আশংকাজনক হলে তাকে প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা ও মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনায় ওই কারখানার চিফ সিকিউরিটি অফিসার মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ওইদিন রাতে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই কারখানার স্টোর অফিসার ওমর ফারুক জানান, কারখানার ভিতরে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। ওইদিন সকালে ও বিকেলে দু-দফায় কারখানার ভিতরে হামলা ও ভাংচুর চালায়। এসময় তিনজনকে কুপিয়ে ও বাকীদের পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, ওই কারখানায় হামলা, ভাংচুর ও কুপিয়ে আহত হওয়ার ঘটনায় থানা একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।