শিরোনাম
◈ বউ পেটানোয় শীর্ষে খুলনা ও বরিশালের মানুষ: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (ভিডিও) ◈ ক‌ষ্টের জ‌য়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনা‌লে রিয়াল মা‌দ্রিদ ◈ দুপু‌রে এ‌শিয়ান কাপ বাছাই‌য়ে স্বাগ‌তিক মিয়ানমা‌রের বিরু‌দ্ধে লড়‌বে বাংলাদেশ নারী দল ◈ প্রথম ওয়ান‌ডে ম‌্যা‌চে মুশফিক-রিয়াদের জায়গায় খেলবেন লিটন দাস ও মিরাজ ◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়? ◈ ব্রিটিশদের ‘নাকানিচুবানি’ দিতে ইরানের এক দশকের ‘ছায়া যুদ্ধ’: যেভাবে চলছে যুক্তরাজ্যের ভেতরে গোপন তৎপরতা ◈ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ◈ এবার অঝোরে কাঁদলেন মিসাইল ম্যান কিম জং উন (ভিডিও) ◈ জুলাই নিয়ে ‘আপত্তিকর’ ফেসবুক পোস্ট: পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবরোধ-বিক্ষোভ ◈ নতুন উচ্চতায় রেমিট্যান্স: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের সর্বোচ্চ প্রবাহ

প্রকাশিত : ২৮ এপ্রিল, ২০২১, ০৫:০৮ সকাল
আপডেট : ২৮ এপ্রিল, ২০২১, ০৫:০৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দেশে করোনা সংক্রমিত শিশুদের জন্য নেই পর্যাপ্ত পিআইসিইউ

নিউজ ডেস্ক: দেশে শিশুদের জন্য বিশেষায়িত যে কয়টি হাসপাতাল আছে, তার মধ্যে অন্যতম ঢাকা শিশু হাসপাতাল। কভিড-১৯ আক্রান্ত শিশুদের জন্য এখানে রয়েছে নির্ধারিত একটি ওয়ার্ড। তবে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ শিশুদের জন্য হাসপাতালটিতে নেই কোনো নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ। গত মার্চ থেকে এ পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালটিতে মৃত্যু হয়েছে ১৮ শিশুর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণের পাশাপাশি তাদের অন্যান্য শারীরিক জটিলতাও ছিল। তবে এসব শিশুকে যদি যথাযথ আইসিইউ সুবিধা দেয়া যেত, তাহলে হয়তো তাদের অনেককেই বাঁচানো সম্ভব হতো।

শুধু এ হাসপাতালটিই নয়, দেশের সরকারি কোনো হাসপাতালেই করোনা সংক্রমিত শিশুদের জন্য পেডিয়াট্রিক আইসিইউ (পিআইসিইউ) সুবিধা নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশে পিআইসিইউর সংখ্যা মাত্র কয়েকটি। সরকারিভাবে এখনো কোনো হাসপাতালে শিশুদের জন্য পিআইসিইউ স্থাপনই হয়নি। তবে স্থানীয় উদ্যোগে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পিআইসিইউ স্থাপন করা হয়। আবার এ খাতে প্রশিক্ষিত জনবলও খুব কম। ঢামেক হাসপাতালের নিয়মিত আইসিইউতে শিশুদের কিছু সেবা দেয়া হয়। এছাড়া কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালেও এ সুবিধা আছে, তবে তা কভিড মহামারীর প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য।

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নানা অসংগতির কথা উঠে আসছে। সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ে প্রতিদিনই হাজারো মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রতিবেশী দেশ ভারত ভাইরাসটির নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে বিপর্যস্ত। সেখানে প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণের হার, মৃতের সংখ্যা। এ বিপর্যয়ে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। আর সেটি হলো, নতুন এ ধরনটি অনেক শিশুকে সংক্রমিত করছে।

দেশের স্বাস্থ্য খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার নতুন ধরনটি যদি বাংলাদেশে পৌঁছে, তবে তা শিশুদের জন্যও যথেষ্ট বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। প্রথমদিকে করোনাভাইরাসে শিশুরা তেমন আক্রান্ত হয়নি। তবে এবার শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা অনেক বেশি। আক্রান্তদের অনেকের অবস্থাই গুরুতর হয়ে পড়ছে। তাই এখনই করোনা সংক্রমিত শিশুদের চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. প্রবীর সরকার বণিক বার্তাকে বলেন, তাদের হাসপাতালের শিশু করোনা ইউনিটে ২০টি শয্যা রয়েছে। বেশির ভাগ সময়ই শয্যাগুলো খালি থাকে না। তিনি জানান, হাসপাতালটিতে করোনা সংক্রমিত শিশুদের জন্য কোনো আইসিইউ সুবিধা না থাকায় জটিল রোগীদের তারা ঢামেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

ঢাকা শিশু হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালটিতে গত বছরের এপ্রিল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ৪৬৮ জন শিশু করোনা রোগী সেবা নিয়েছে। ভবিষ্যতে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম আরো উন্নত করতে এসব রোগীকে বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করেছে হাসপাতালটি। তাদের তথ্যে উঠে এসেছে, শূন্য থেকে ৩০ দিন বয়সী ৬৩ জন কভিড-১৯ রোগী শিশু হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিয়েছে। ১ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছে ১২৩ জন। ১ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত ১৪৯ জন রোগী, ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত ৮৭ জন, ১০ বছরের বেশি বয়সী ৪৬ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। সংক্রমিত শিশুদের ৪৬ শতাংশ পুষ্টিহীনতায় ভুগছিল বলে হাসপাতালটির পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। এর মধ্যে ১ শতাংশ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে। তাদের মধ্যে গত মে থেকে এখন পর্যন্ত ২৯টি শিশু মারা গেছে।

এ বিষয়ে কথা হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক (অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিনের সঙ্গে। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, দেশে শিশুদের আক্রান্তের হার তেমন নয়। এর মধ্যে যারা আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের জন্য শিশু হাসপাতালই যথেষ্ট। একই সঙ্গে অন্যান্য কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালেও তাদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে যদি আক্রান্তের হার ও শিশুদের অবস্থা শোচনীয় হয়, তখন ভিন্ন ব্যবস্থা চিন্তা করা হবে।

করোনা রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত একাধিক চিকিৎসক বণিক বার্তাকে বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ে শিশুদের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার হার ছিল খুবই কম। শিশুদের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবেই এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ শক্ত। তবে এবার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অনেক শিশুও সংক্রমিত হচ্ছে। এখন শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে ‘মাল্টিসিস্টেম ইনফ্লামেটরি সিন্ড্রোম ইন চিলড্রেনে (এমআইএসসি)’। তাই শিশুদের মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র নেয়ার কথা বলছেন তারা। এখন পর্যন্ত বিশ্বে যেসব টিকা এসেছে, তার কোনোটিই শিশুদের জন্য প্রযোজ্য নয়। সেজন্য এ সংক্রমণ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে বাড়তি সতর্কতা নেয়ার পরামর্শও দিয়েছেন চিকিৎসকরা। - বণিক বার্তা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়