গাজী নাসিরউদ্দিন আহমেদ: গত বছর করোনা ভাইরাস যখন এলো তখন বহু গবেষক প্রজেকশনের নামে প্রপাগাণ্ডায় নামলেন। লাখ লাখ লোক মারা যাবে। অর্থনীতি যখন স্থবির হয়ে পড়লো কতিপয় অর্থনীতি গবেষক দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করলেন। এরা কেউ মহামারীর অর্থনীতি বোঝেন বলেন আমরা জানি না। প্রবৃদ্ধি যে কমবে তা তো আমার ভাগ্নি নোরাও বলতে পারবে। গবেষক হতে হয় না। তো সেকেন্ড ওয়েভ আসছে। আরেকটা বড় ধাক্কা ইকোনোমির ওপর। এই ঢেউ আরো বিস্তৃত হতে পারে। যতো যাই বলি, জনসংখ্যার অর্ধেক ভ্যাকসিনেটেড না হওয়া পর্যন্ত অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরবে না।
বাংলাদেশের অর্থনীতির উত্থান কিন্তু বিপুল সরকারি বিনিয়োগের হাত ধরে। এবারের বাজেটে কর ব্যবস্থা থেকে লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরার কোনো দরকার নেই। এডিপি বরাদ্দ বেশি রাখেন। খরচও বেশি করেন। সামাজিক নিরাপত্তার জরুরি আওতা বাড়ান। বাজেট ঘাটতি বাড়বে। বাড়ুক। আমাদের অর্থনীতি এই ঘাটতি নিতে পারবে। সেদিন এক অর্থনীতি গবেষকের সঙ্গে এসব নিয়ে কথা হচ্ছিলো। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করলেন যে, আমাদের অর্থনীতি এখন অনেক শক্তপোক্ত। আমাদের অর্থনীতি নিয়ে আমার উচ্ছ্বাস নেই। কিন্তু বিশ্বাস আছে। কয়েক বছর আগে একটা প্রপাগাণ্ডা ছড়ানো হয়েছিলো, সরকার নাকি কর্মচারীদের বেতন দিতে পারবে না। সম্প্রতি কয়েকটি জরিপ বলেছে, আমাদের দরিদ্রের সংখ্যা নাকি ২০ শতাংশের মতো বেড়েছে। এটা আসলে সাময়িক দারিদ্র্য। গত বছরের লকডাউনের সময় বিআইডিএসের একটি জরিপে দেখা গেছে, সে সময়টা যতো শতাংশ মানুষের আয় নাই হয়ে গেছিল লকডাউন তুলে দেওয়ার পরের মাসেই তা ভি শেইপে ঘুরে যায়।
দারিদ্র্য এমন একটি কমপ্লেক্স অবস্থা র্যাপিড জরিপ করে তাকে বোঝা সম্ভব না। ওই অর্থনীতি গবেষককে কৌট করে বলছি, সানেম, পিপিআরসি, ব্র্যাকের জরিপ যে নতুন দারিদ্র্যের কথা বলেছে তা প্রকৃতপক্ষে সাময়িক দারিদ্র্যের চেয়ে বেশি কিছু কি না তা বুঝতে এক্সটেনসিভ গবেষণা দরকার। তবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, মহামারিকালে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির ব্যাপকভাবে পরিবর্তন দরকার। এই বছরও আমরা ডিফেন্সিভ মুডেই খেলি। ফেসবুক থেকে