আতাউর অপু: করোনা মহামারির এই দুঃসময়ে রাইড শেয়ারিং সেবা নেওয়ার সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। সঙ্গে অন্যান্য নিরাপত্তার বিষয়েও সতর্ক থাকা উচিত। রাইড শেয়ারিং নিয়ে স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বারডেম হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জাফর এ লতিফ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশ পরিদর্শক আরিফ ফয়সাল।
গাড়ির ভেতরে মাস্ক পরুন
অনেকে উবার, পাঠাও ইত্যাদি রাইড সার্ভিসের গাড়িতে উঠে মাস্ক খুলে ফেলেন। মনে করেন গাড়ির ভেতরে থাকলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম। কিন্তু গাড়ির ভিতরেও করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সমান। উবার কিংবা পাঠাওয়ের চালক করোনায় আক্রান্ত থাকতে পারেন। সে ক্ষেত্রে রাইড শেয়ারে স্বাস্থ্যবিষয়ক সতর্কতা মেনে চলা খুব জরুরি।
চালককে মাস্ক পরতে বলুন
রাইড শেয়ার গাড়ি অথবা মোটরসাইকেল চালকদের অনেক সময় মাস্ক পরতে অবহেলা করতে দেখা যায়। তার মুখে মাস্ক না থাকলে, তাকে পরতে বলুন। মাস্ক পরতে অনীহা জানালে তার রাইড শেয়ারিং সেবা বর্জন করুন।
বসার স্থান ডিসইনফেক্টেড করুন
গাড়ি বা মোটরসাইকেলে বসার আগে ডিসইনফেক্টেড স্প্রে [জীবাণুনাশক স্প্রে] দিয়ে বসার স্থান ও আশপাশ যথাসম্ভব জীবাণুমুক্ত করে নিন। এ জন্য ব্যাগে একটি জীবাণুনাশক স্প্রে রাখতে পারেন। আপনার আগে অনেকেই রাইড শেয়ারিংয়ের সেবা নিয়েছে। সুতরাং সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
হেলমেট ব্যবহারে সতর্কতা
রাইড শেয়ারিং বাইকগুলোতে একটি হেলমেট অনেককে ব্যবহার করতে হয়। এতে অনেকের চুল ও ঘাড়ের ত্বকে সমস্যা হয়। হেলমেট ব্যবহার করলে এতে ব্যবহারকারীর ঘাম লেগে থাকে। পরে অন্যজন ব্যবহার করলে সেই ঘামের সংস্পর্শে ত্বকে বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। হতে পারে চুলে খুশকি। করোনাকালে যেখানে স্পর্শ থেকে দূরে থাকতে উত্সাহিত করছেন বিশেষজ্ঞরা, সেখানে বারবার হাতবদলের হেলমেট ব্যবহার ক্ষতির কারণ হতেই পারে। এ জন্য দরকার হলে মাথায় একটি রুমাল অথবা প্লাস্টিক জাতীয় কিছু লাগিয়ে হেলমেট ব্যবহার করুন। চাইলে হেলমেটেও জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন।
হাত স্যানিটাইজ করুন
রাইড শেয়ারিং গাড়িতে অবস্থান করার সময় একটু পর পর হাত স্যানিটাইজ করুন। কারণ এসব গাড়িতে দিনে অনেক যাত্রী ওঠানামা করে। এ ছাড়া অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে টাকা লেনদেনের পর ও গাড়ি থেকে বের হওয়ার পর হাত স্যানিটাইজ করে নিন।
নিরাপত্তাবিষয়ক সতর্কতা
চুক্তিভিত্তিক রাইড শেয়ারে ওঠা এড়িয়ে চলুন।করোনার প্রকোপে মানুষের আর্থিক সংকট বেড়েছে। আগামী দিনেও থাকবে এই সমস্যা। লকডাউনে বন্ধ রয়েছে রাইড শেয়ারিংয়ের প্রাতিষ্ঠানিক সেবা। কিন্তু করোনাকালেও রাস্তাঘাটে চুক্তিভিত্তিক বাইক রাইড শেয়ার করছেন অনেকে। কম টাকার জন্য যাত্রীরাও অনায়াসে উঠে যাচ্ছেন বাইকে। অযথা হয়রানি ও বিপদ এড়াতে চুক্তিভিত্তিক বাইক কিংবা গাড়ি এড়িয়ে চলুন। কারণ চুক্তিভিত্তিক রাইডগুলোর কোনো কর্তৃপক্ষ থাকে না। এতে অনেকেই বিভিন্ন রকমের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। ইদানিং কিছু ঘটনায় হতাহত ও ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। এ রকম অপ্রীতিকর ঘটনায় রাইডারদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ নেহাত কম নয়। চুক্তিভিত্তিক রাইডে না ওঠাই ভালো।
রাইড শেয়ারিংয়ের নম্বর ও ঠিকানা
একটু রাত করে যদি এসব রাইডসেবা নিয়ে থাকেন, তাহলে কাছের কোনো মানুষকে চালক ও গাড়ির অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রাখুন। সঙ্গে গুগল লোকেশন শেয়ার করুন তার সঙ্গে। এতে আপনি কোন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন তা সহজে আপনার কাছের মানুষ বুঝতে পারবে। জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ মনে রাখুন। রাস্তায় কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে কল করুন।