সুজন কৈরী: সাভারের ক্লুলেস ফাতেমা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব-৪। হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নওগাঁর রবিউল মির্জা ও গাইবান্ধার কামরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার সাভার মডেল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার র্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি জিয়াউর রহমান চৌধুরী জানান, গত ৭ এপ্রিল ফাতেমা বেগমকে (৬১) সাভারের বিরুলিয়ায় তার নিজ বাসায় অজ্ঞাতনামা দুর্বত্তরা হত্যা করে পালিয়ে যায়। ৯ এপ্রিল নিহতের ছেলে বাসায় এসে মাকে দেখতে না পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে বাথরুমের পাশে তার মায়ের পচা-গলিত মরদেহ দেখতে পান। পরে সাভার মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করা হলে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব-৪ চাঞ্চল্যকর মামলাটি মূল রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা তথ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি এবং হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন তারা ভিকটিমের বাসার পাশেই আরেকটি বাসায় রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন। ভিকটিমকে গোসলখানায় যেতে দেখে তারা বাসায় ঢুকে চুরি করার চেষ্টা করলে ভিকটিম বাধা দেন। পরে গ্রেপ্তারকৃতরা পা দিয়ে সজোরে আঘাত করে ভিকটিমকে অজ্ঞান করে ফেলেন। ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যাওয়ার ভয়ে গ্রেপ্তারকৃতরা ভিকটিমকে বাথরুমেই হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী রবিউল ভিকটিমের ঘর থেকে একটি কোদাল এনে ভিকটিমের হাতে, মুখে, ও গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে বাথরুমের পাশে ফেলে রাখেন। এ ঘটনায় যাতে কেউ সন্দেহ না করতে পারে সেজন্য তিনি পাশের বাসায় আগের মতো রাজমিস্ত্রির কাজ করতে থাকেন। অন্যদিকে কামরুল হত্যাকাণ্ডের পর নিজ জেলা গাইবান্ধায় গিয়ে আত্মগোপন করেন। পরে তিনি ঢাকায় ফিরলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রবিউল নিহত নারীর বাসা নির্মাণের সময় রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেছিলেন। সে সূত্রে তিনি ভিকটিমের পূর্ব পরিচিত। গ্রেপ্তারকৃতদের সাভার মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :