মিনহাজুল আবেদীন: [২] ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হচ্ছে যাকাত। রমজান মাসেই সাধারণত মানুষ যাকাত প্রদান করে। হযরত মুহাম্মদ (সা:) যখন ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে মদিনায় গিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা চালু করেন। তখন রাষ্ট্রে যাকাত ব্যবস্থা চালু হয়। বিবিসি
[৩] যাকাতের পরিমাণ কিভাবে নির্ধারণ করবেন? স্বর্ণের নিসাব হলো বিশ মিছকাল তথা ৭.৫ ভরি বা তোলা সমান (৮৭.৫১৪ গ্রাম প্রায়)। আর রূপার নিসাব হলো দুইশত দিরহাম তথা ৫২.৫ ভরি বা তোলা (৬১২.৬০২ গ্রাম প্রায়)। অন্যান্য ব্যবসার ক্ষেত্রে নিসাব হলো স্বর্ণ বা রূপার উক্ত পরিমানের মূল্যের সঙ্গে মিলানো, দুইশত দিরহাম রূপার যে বিক্রয় মূল্য সে পরিমাণ যদি কারো ব্যবসায়ী সম্পদ থাকে তাহলে সেই ব্যবসার মালের ওপর যাকাত ফরজ হবে। (আল বাদায়ে ২/১০০, দুররুল মুখতার ৩/২২৪, ফাতওয়া শামী ৩/২২৪)
[৪] স্বর্ণ রূপা বিক্রয় মূল্য হিসাবে যাকাত দিতে হবে: কারো নিকট যদি স্বর্ণ বা রূপার অলংকার থাকে তাহলে তা বর্তমান বাজারে বিক্রয় করতে গেলে যে মূল্য পাওয়া যাবে সেই মূল্যের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দেয়া আবশ্যক। (ফাতওয়া মাহমুদীয়া: ১৩/৯৬, দারুল উলুম: ৬/১০৮বাদায়ে ২/১১০, তাতারখানিয়া ৩/১৬৫, হিন্দিয়া ১/১৮০)
[৫] ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যাকাত ফান্ডের পরিচালক মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ বলেন, হাতে গচ্ছিত নগদ অর্থ, শেয়ার সার্টিফিকেট, প্রাইজবন্ড ও সার্টিফিকেটসমূহ, স্বর্ণ-রৌপ্য, মূল্যবান ধাতু ও সোনা-রুপার অলংকার, বাণিজ্যিক সম্পদ ও শিল্পজাত ব্যবসায় প্রতিশ্রুত লভ্যাংশ, উৎপাদিত কৃষিজাত ফসল, পশু সম্পদের মধ্যে ৪০টির বেশি ছাগল বা ভেড়া, ৩০টির বেশি গরু-মহিষ ও অন্যান্য গবাদি পশু, খনিজ দ্রব্য, প্রভিডেন্ট ফাণ্ড এই সব কিছুর ওপর যাকাত দিতে হবে। কিন্তু সেটা হিসাব অনুসারে দিতে হবে।
[৬] তিনি বলেন, নিসাবের মালিক হবার এক বছর পূর্তির পর যাকাত ফরয হয়। তবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিধানে যাকাত দিতে হবে না এমন জিনিসের তালিকায় রয়েছে জমি, কল-কারখানা, ওয়্যার হাউজ, গুদাম, দোকান, বাড়ি, পোশাক, এক বছরের কম বয়সী গবাদি পশু, চলাচলের যন্ত্র ও গাড়ি, সরকারি মালিকানাধীন নগদ অর্থ, স্বর্ণ-রৌপ্য। এই সম্পদের যাকাত দিতে হয় না।
[৭] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার বলেন, কোনও ব্যক্তির মোট সম্পত্তি যার অর্থ নির্ধারণ করা যায়, সেটি যদি এক বছরের বেশি সময় ধরে তার অধিকারে থাকে, তাহলে সেই সম্পদ ও সম্পত্তির ওপর যাকাত দিতে হবে। এই সম্পদের আড়াই শতাংশ হচ্ছে তার যাকাত।
[৮] তিনি বলেন, যাকাত প্রাপ্তিরা হচ্ছেন, ভিক্ষুক, মিসকিন ঋণগ্রস্ত, যাকাত আদায়কারী কর্মচারী, নওমুসলিম, আল্লাহর পথে এবং মুসাফির। সম্পাদনা: মেহেদী হাসান
আপনার মতামত লিখুন :