শিরোনাম
◈ এলডিসি থেকে উত্তরণ: আরও তিন বছরের সময় চাইছে বাংলাদেশ ◈ জাপানে জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেসব সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী সরকার ◈ ১৭ বিয়ের ঘটনায় মামলা, সেই বন কর্মকর্তা বরখাস্ত ◈ বিএনপি নেতাকে না পেয়ে স্ত্রীকে কু.পিয়ে হ.ত্যা ◈ বাংলা‌দেশ হারা‌লো আফগানিস্তানকে, তা‌কি‌য়ে রই‌লো শ্রীলঙ্কার দিকে  ◈ রোজার আগে নির্বাচন দিয়ে পুরোনো কাজে ফিরবেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ ঋণের চাপে আত্মহত্যা, ঋণ করেই চল্লিশা : যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ ◈ একযোগে এনবিআরের ৫৫৫ কর্মকর্তাকে বদলি ◈ আবারও রেকর্ড গড়ল স্বর্ণের দাম, ভরিতে বেড়েছে ৩ হাজার ৬৭৫ টাকা ◈ ভারতের নেপাল নীতিতে 'রিসেট বাটন' চাপলেন মোদি, শিক্ষা বাংলাদেশের কাছ থেকে

প্রকাশিত : ১০ এপ্রিল, ২০২১, ০৪:৪৮ সকাল
আপডেট : ১০ এপ্রিল, ২০২১, ০৪:৪৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইমতিয়াজ মাহমুদ: মামুনুলের প্রেম ও ব্যক্তিগত জীবনযাপন আঘাতের লক্ষ্য হওয়ার কথা নয়, আপনার আঘাতের লক্ষ্য, অন্ধকারটি যেটি ওরা ‘আদর্শ’ নাম দিয়ে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়

ইমতিয়াজ মাহমুদ: আপনার দৃষ্টি যদি স্বচ্ছ হয়, বিচার বিবেচনা যদি এখনো গুলে খেয়ে না ফেলে থাকেন আর দেহে যদি একটি ফোঁটাও বাঙালি রক্ত অবশিষ্ট থাকে, তাইলে ওই লাল সবুজের কসম, একজন মামুনুল হকের প্রতি ক্রোধ জাগ্রত হওয়ার জন্য ওর পিতৃপরিচয়ই যথেষ্ট। তরুণদের অনেকেরই জানা নাও থাকতে পারে, মামুনুল হকের পিতা ছিলো নেজামি ইসলামী পার্টির নেতা, এই পার্টিটি আমাদের স্বাধীনতারবিরোধী ছিল এবং যুদ্ধের পুরো সময়টা আমাদের বিপক্ষে ছিল। না, একজনের পিতার অপরাধে তাকে আপনি দোষী ভাবতে পারেন না। কিন্তু মামুনুলের হিসেব আলাদা, কেননা সে কেবল যে তার পিতার চেতনা ধারণ করে সেটাই কেবল নয়, সেই চেতনা রূপ দেওয়াই হচ্ছে তার রাজনীতি।

মামুনুল একটি রাজনৈতিক দলের সধারণ সম্পাদক। এই দলের সভাপতি হচ্ছে বুড়ো রাজাকার মৌলানা ইসহাক, যে ছিল মালেক মন্ত্রীসভার সদস্য। যদি আপানর জানা না থাকে, তাইলে জেনে নিন এই মালেক মন্ত্রীসভাটা কি। এসবকিছু যদি বাদও দেন, তবুও শুধু হেফাজতে ইসলামের নেতা হিসেবে ও মৌলানা হিসাবে প্রতিদিন ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে এই লোক দেশে যে পরিমাণ পশ্চাৎপদতা ও অন্ধকার ছড়াচ্ছে সেগুলিই কি যথেষ্ট নয় তার বিরোধ করার জন্য? প্রতিদিন প্রতিবেলা ওরা নারীকে অবমাননা করে। আনুষ্ঠানিকভাবে দাবিনামা দাখিল করে সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছে নারী অধিকারের পক্ষে যেন কোন আইন পাশ না হয়। ওদের চোখে নারীর সামাজিক অবস্থান যে কি সেটা কি ওদের মুল গুরু অ্যাজ করে জানিয়ে যায়নি? সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায় ওরা সর্বত্র। সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে পাঠ্যবই থেকে হিন্দু লেখকদের লেখা সরাতে চায় এরা।  সাম্প্রদায়িকতার ব্যাপারে কোন লুকোচুরি এরা করে না।

[২] আর ভিন্নমতের জন্যে মানুষ খুন করা এটা তো ওদের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি। ওরা সভা করে কর্মসূচি দিয়েছে, বক্তৃতা করে কর্মসূচি দিয়েছে নাস্তিকদের হত্যা করা হবে। ওদের স্পিরিচুয়াল নেতা মৌলানা শফি আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তৃতা করে বলেছে নাস্তিকদের হত্যা করা ওয়াজেব হয়ে গেছে। আমরা বলছি ওরা দেশকে অন্ধকারের দিকে টেনে নিয়ে যেতে চায়। এই যে বলছি ‘আমরা’ এই আমরা কয়জন জানেন? এমনিতে মনে হবে যে দেশ ভর্তি প্রগতিশীল স্বাধীনচেতা আধুনিক মানুষ। কিন্তু বাস্তবতা কি জানেন? এই মামুনুল বলেন বা বাবুনগরি বলেন এরা অন্ধকারের শক্তির একটা চেহারা বটে, কিন্তু এই অন্ধকার বাস করে দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের মনে। কেউ ওদের অন্ধ অনুসারী, আর একদল আছে যারা নিজেদেরকে চালাক মনে করে আর ভাবে ওদেরকে ব্যাবহার করে সুবিধা নিবে, আরেকদল আছে যারা মনে করে যে একটা পর্যায় পর্যন্ত বা লিমিটেড স্কেলে অন্ধকারকে রাজনৈতিক আদর্শ হিসাবে ব্যবহার করা জায়েজ আছে। আর বোকাদেরও একটা দল আছে, যারা মনে করে এদের ব্যাপারে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নাই। তাইলে আপনিই হিসাব করেন- এই বলছি অসাম্প্রদায়িক 'আমরা', যারা ওদের বিরোধ করি ওরা আসলে সংখ্যায় কতজনে এসে ঠেকলাম। খুব বেশি কি?

[৩] এসব কথা কেন বলছি। কারণ সম্প্রতি স্বাধীনতাবিরোধী আজিজুল হকের পুত্র মামুনুলকে একজন নারীর সাথে একটি রিসোর্টে পাওয়া নিয়ে অনেক বন্ধুকে খুব উৎসাহী দেখতে পাচ্ছি। এইটা দেখিয়ে ওরা বলতে চাইছেন যে, দেখ দেখ, মামুনুল কত খারাপ মানুষ ইত্যাদি। ঠিক আছে, আপনাদের কথা হয়তো ভুল নয়, এই একাউন্টেও হয়তো মামুনুল একজন খারাপ মানুষ। কিন্তু বন্ধুরা, আপনার আঘাতের লক্ষ্য তো মামুনুলের প্রেম ও ব্যক্তিগত জীবনযাপন হওয়ার কথা নয়। আপনার আঘাতের লক্ষ্য, অপছন্দের বিষয় ও বিরোধের জায়গা তো হওয়ার কথা সেই অন্ধকারটি যেটি ওরা ‘আদর্শ’ নাম দিয়ে আমাদের উপর চাপিয়ে দিতে চায়। আমি তো আঘাত করবো সেই অন্ধকারটিকে।

ওরা যখন আমাদের শিশুতোষ পাঠ্য বইতে মেয়ে শিশুটির গায়ে ওড়না আকারের অন্ধকারটি পরিয়ে দিল তাঁর বিরুদ্ধে তো আপনার প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র হবে বলে প্রত্যাশা করেছিলাম। তখন তো সেইভাবে প্রতিক্রিয়া করেননি। কেন করেননি? কিছু মনে করবেন না, প্রশ্নটা করতেই হচ্ছে। ওই রিসোর্টে যে ভদ্রমহিলা মামুনুলের সাথে ছিল, তিনি যদি মামুনুলের বিবাহিতা তরি হয়, প্রথমা দ্বিতীয়া বা তৃতীয়া যাই হক, তাইলে কি মামুনুলের বিরুদ্ধে আপনাদের আর কোন বক্তব্য থাকবে না? বলেন। না, শয়তান গাড্ডায় পড়েছে দেখতে ইয়ে লাগে। সেটা ঠিক আছে। কিন্তু মনে রাখবেন এইরকম গাড্ডায় পড়ে শয়তান মরে না- শয়তানকে দূর করতে হয় আলো দিয়ে। আলোর মিছিলের সাথে থাকেন, শয়তান দূর হবে চিরতরে। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়