শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০২১, ০৪:৪৫ সকাল
আপডেট : ২৯ মার্চ, ২০২১, ০৪:৪৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাস্টমস স্টেশন দিয়ে রপ্তানির তুলনায় আমদানি দ্বিগুণ

ডেস্ক রিপোর্ট: দেশে কাস্টমস স্টেশন দিয়ে রপ্তানির তুলনায় আমদানি পণ্যের পরিমাণ বাড়ছে। যদিও বেশিরভাগ কাস্টমস স্টেশন রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। কোনো স্টেশন দিয়ে বেশি পণ্য আমদানি হয়, আবার কোনো স্টেশন দিয়ে রপ্তানি বেশি হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশের ১৬টি কাস্টমস স্টেশন দিয়ে প্রায় ৪৭ হাজার ৯৮ লাখ টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে। আর রপ্তানি হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকার পণ্য। ওই অর্থবছর রপ্তানির তুলনায় কাস্টমস স্টেশন দিয়ে আমদানি পণ্যের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ।

সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে সোনামসজিদ, হিলি ও ভোমরা কাস্টমস স্টেশন দিয়ে। আর বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে সামিট অ্যালায়েন্স, আখাউড়া, বাংলাবান্ধা ও ভোমরা কাস্টমস স্টেশন দিয়ে। আর কাস্টম হাউসের মধ্যে ঢাকা কাস্টম হাউস দিয়ে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঘোষিত কাস্টম হাউস ও কাস্টমস স্টেশনের সংখ্যা ৩৩টি। এর মধ্যে ১৬টি কার্যকর ও ১৮টি অকার্যকর রয়েছে। কার্যকর স্টেশনের মধ্যে রয়েছে-ঢাকা কাস্টম হাউসের অধীন ঢাকা কাস্টম হাউস ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন। পানগাঁও কাস্টম হাউসের অধীন নারায়ণগঞ্জ ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন ও সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড। ঢাকা ভ্যাট উত্তর কমিশনারেটের অধীন গোবড়াকুড়া শুল্ক স্টেশন, কড়াইতলী শুল্ক স্টেশন, নাকুগাঁও শুল্ক স্টেশন ও বিজয়পুর শুল্ক স্টেশন। ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কমিশনারেটের অধীন জামালপুর ধানুয়া কামালপুর এলসি স্টেশন। চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের অধীন টেকনাফ শুল্ক স্টেশন, কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেটের অধীন আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন, বিবির বাজার স্থল শুল্ক স্টেশন ও বিলোনিয়া স্থল শুল্ক স্টেশন। রাজশাহী ভ্যাট কমিশনারেটের অধীন সোনামসজিদ শুল্ক স্টেশন, রহনপুর শুল্ক স্টেশন ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুল্ক স্টেশন।

অপরদিকে অকার্যকর ১৮টি কাস্টমস স্টেশন হলো-পাকশী শুল্ক স্টেশন, শিবগঞ্জ শুল্ক স্টেশন, প্রেমতলী (গোদাগাড়ী) শুল্ক স্টেশন, ধামরহাট শুল্ক স্টেশন, রাজশাহী শুল্ক স্টেশন, সিরাজগঞ্জ শুল্ক স্টেশন, ঈশ্বরদী শুল্ক স্টেশন, বগুড়া শুল্ক স্টেশন, সান্তাহার শুল্ক স্টেশন, আমনুরা রেলস্টেশন, আটাপাড়া শুল্ক স্টেশন, কড়িয়া শুল্ক স্টেশন, ভটুয়াপাড়া শুল্ক স্টেশন, চকচাঁদি শুল্ক স্টেশন, ভোলাহাট শুল্ক স্টেশন, মনাকাশা শুল্ক স্টেশন, কবিনগর শুল্ক স্টেশন ও মাঝার-দিয়া শুল্ক স্টেশন।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, কাস্টম হাউস ও কাস্টমস স্টেশন দিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছর প্রায় ৪৭ হাজার ৯৮ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে। আর ২৬ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। অর্থাৎ রপ্তানির তুলনায় প্রায় ২০ হাজার ৪০৩ কোটি টাকার বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে। এছাড়া ওই অর্থবছর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে আহরণ আট হাজার ৬৪১ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এক হাজার ১৩১ কোটি টাকা কম রাজস্ব আহরণ হয়েছে।

আরও দেখা যায়, কাস্টম হাউসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছে ঢাকা কাস্টম হাউস দিয়ে। এই কাস্টম হাউস দিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছর ২৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো-মোবাইল ফোন, নেটওয়ার্কিং যন্ত্রপাতি, বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন ও কম্পিউটার সফটওয়্যার। আর ২৩ হাজার দুই কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো-তৈরি পোশাক, শাকসবজি, ওষুধ ও চামড়া। আইসিডি কাস্টম হাউস দিয়ে ছয় হাজার ৯৭০ কোটি টাকার পণ্য আমদানি ও ১১ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রসাধনী, গাড়ি, কাপড়, তৈরি পোশাক, জুতা, সিগারেট পেপার, আয়রন ও স্টিল, বেস মেটাল, খেলনা, আসবাবপত্র ও মেশিনারিজ। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে-মসলা, অ্যারোমেটিক রাইস, মাস্টার্ডঅয়েল, বিস্কুট, চানাচুর, আম, মিল্ক পিকেল, বেভারজ, স্প্রিট, ভিনেগার, তামাক, ওষুধ, কাপড় ও টি-শার্ট।

কাস্টমস স্টেশনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে সোনামসজিদ শুল্ক স্টেশন দিয়ে। ওই অর্থবছর এ স্টেশন দিয়ে দুই হাজার ৫৫৬ কোটি টাকার পণ্য আমদানি ও ১২৪ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আমদানি করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে-তাজা ফল, পেঁয়াজ, জিরা, মেথি, মৌরি, সয়াবিন, ভুসি, গম, চাল, ভুট্টা, পোলট্রি ফিড, পাথর, মরিচ, ফ্লাইঅ্যাশ, আদা, রসুন ইত্যাদি। রপ্তানি করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে-তৈরি পোশাক, জুট ব্যাগ, জুট ইয়ার্ন, প্লাস্টিক পণ্য, গার্মেন্ট (জুট) ইত্যাদি।

দিনাজপুরের হিলি শুল্ক স্টেশন দিয়ে তিন হাজার ৯৬১ কোটি টাকার পণ্য আমদানি ও ১৩ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আমদানি করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে-গম, ভুট্টা, পেঁয়াজ, চাল, খৈল, কাঁচামরিচ, পাথর, সয়াবিন, সুপারি, ভুট্টাবীজ ও পার্টস। রপ্তানি করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে-ক্রুড রাইস ব্রানঅয়েল, ওয়াটার পাম্প। দর্শনা স্থল শুল্ক স্টেশনে ৬৪৭ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে-স্টোন বোল্ডার স্টোন চিপস, সয়াবিন ভুসি, খৈল ও ফ্লাইঅ্যাশ। বাংলাবান্ধা শুল্ক স্টেশন দিয়ে ৪২৮ কোটি টাকার পণ্য আমদানি ও ৩০৮ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে-বোল্ডার স্টোন, ক্রাশ স্টোন, মশুর ডাল ও চিরতা। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে-সফট ড্রিংকস, কাঁচা পাট, ঝুট কাপড়, কস্টিক সোডা, হোয়াইট পেপার, কার্বনেট বেভারেজ ও ব্যাটারি।

সাতক্ষীরার ভোমরা শুল্ক স্টেশনে তিন হাজার ২৪৩ কোটি টাকার পণ্য আমদানি ও এক হাজার ৯০০ টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে-তাজা ফল, তেঁতুল, হিমায়িত মাছ ও শুকনা মাছ, পেঁয়াজ, মিষ্টি মরিচ, ক্যাপসিকাম, আগরবাতি, রসুন, আদা, জিরা, পানপাতা, অ্যালুমিনিয়াম, পটাসিয়াম, চাল, শুকনা মরিচ, স্টোন, স্টোন চিপস, স্যান্ডস্টোন, ওয়েল কেক, কয়লা ইত্যাদি। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে জুট ইয়ার্ন, কুঁড়ার তেল, খাদ্যপণ্য, প্লাস্টিক, মধু, কাপড়, ফিশিং নেট, কুঁড়ার খৈল, নারিকেলের শলা, পাম তেল, সয়াবিন তেল ইত্যাদি।

তামাবিল এলসি স্টেশন দিয়ে ১৭২ কোটি টাকার বোল্ডার স্টোন, চুনাপাথর, কয়লা, আদা, টমেটো আমদানি এবং ১৩ কোটি টাকার প্রাণ ডেইরি, ডিউরেবল, প্লাস্টিক সামগ্রী, টিস্যু পেপার রপ্তানি, জকিগঞ্জ এলসি স্টেশন দিয়ে ২১ কোটি টাকার আদা, কমলা, সাতকরা, শুঁটকি আমদানি, শেওলা এলসি স্টেশন দিয়ে ৭২ কোটি টাকার কয়লা, আদা, কমলা, আপেল, সাতকড়া, চুনাপাথর ও চাল আমদানি, ১২৯ কোটি টাকার খাদ্য ও প্লাস্টিক সামগ্রী, সিমেন্ট, মশারির কাপড়, টিসু পেপার রপ্তানি, বড়ছড়া এলসি স্টেশন, বাগলি এলসি স্টেশন ও চারাগাঁও এলসি স্টেশন দিয়ে ১০৩ কোটি টাকার কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি হয়েছে। চাতলাপুর এলসি স্টেশন দিয়ে সাতকরা, আদা, আনার, কমলা ও আপেল আমদানি এবং পিভিস ডোর, সিমেন্ট, প্লাস্টিক সামগ্রী রপ্তানি, জুড়ি বেতুলী এলসি স্টেশন দিয়ে কমলা, সাতকরা, আপেল ও আনার আমদানি এবং প্লাস্টিক সামগ্রী রপ্তানি, বাল্লা এলসি স্টেশন দিয়ে আদা, সাতকরা, বাঁশ আমদানি এবং প্লাস্টিক, প্লাস্টিক খাদ্যসামগ্রী ও সিমেন্ট রপ্তানি করা হয়েছে। ছাতক, চেলা, ইছামতী ও ভোলাগঞ্জ এলসি স্টেশন দিয়ে চুনাপাথর আমদানি করা হয়েছে।

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন দিয়ে ৫৫৭ কোটি টাকার ফ্লাইঅ্যাশ আমদানি, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড দিয়ে ১০২ কোটি টাকার ফ্ল্যাট রোল্ড প্রোডাক্ট আমদানি ও ৩৬৭ কোটি টাকার তৈরি পোশাক রপ্তানি, গোবড়াকুড়া, কড়াইতলী ও নাকুগাঁও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও কয়লা আমদানি এবং সিমেন্ট, পামঅয়েল, পার্টিকেল বোর্ড রপ্তানি, ধানুয়া কামালপুর এলসি স্টেশন দিয়ে সুপারি, আদা, আঙ্গুর, আনার ও তেঁতুল আমদানি এবং সিমেন্ট, তুলা, নেট, শাড়ি, প্লাস্টিক ও দরজা রপ্তানি করা হয়েছে।

টেকনাফ শুল্ক স্টেশন দিয়ে ৬১২ কোটি টাকার মাছ, শুঁটকি, কাঠ, বরই, আচার, তেঁতুল, বাঁশ, হলুদ, বেত, আদা, সুপারি ও পেঁয়াজ আমদানি এবং ২১ কোটি টাকার গেঞ্জি, কাপড়, মাছ, প্লাস্টিক পণ্য, অ্যালুমিনিয়াম পণ্য, বিস্কুট, সফট ড্রিংকস, চানাচুর, চিপস, আলু ও পানির ট্রাংক রপ্তানি করা হয়েছে। আখাউড়া শুল্ক স্টেশন দিয়ে শুঁটকি আমদানি, ৩১৩ কোটি টাকার সিমেন্ট, পাথর, মাছ, শুঁটকি, প্লাস্টিক ও মেলামাইন সামগ্রী, চুন, লেমিনেটেড ফয়েল, তৈরি পোশাক, আসবাবপত্র, সফট ড্রিংকস, খাদ্যসামগ্রী, তুলা, পাটের সুতলি ইত্যাদি রপ্তানি করা হয়েছে। বিবিরবাজার স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে টোমেটো, পান, মরিচ, সিএনজি পার্টস, বেল, তেঁতুল ও আনারস আমদানি এবং সিমেন্ট, পাথর, সাবান, প্লাস্টিক, টিন, রড, টাইলস ও ড্রিংকস রপ্তানি করা হয়েছে। বিলোনিয়া স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে সিমেন্ট, পাথর, কয়লা, খৈল, ঢেউটিন, পিভিসি ডোর রপ্তানি, রহনপুর শুল্ক স্টেশন দিয়ে বোল্ডার স্টোন, স্টোন চিপস ও ফ্লাইঅ্যাশ আমদানি করা হয়েছে। সূত্র: শেয়ার বিজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়