নাদিম মাহমুদ: ভদ্রলোকের নাম মুশতাক আহমেদ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় কাঁধে নিয়ে জেলে মারা গেছেন। আপনার হাতে যদি কিছু সময় থাকে, তাহলে এই আইডি (https://www.facebook.com/crocodilefarmer) থেকে ঘুরে আসুন। ২০১৯ থেকে ২০২০ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত নিজের ছবি ব্যতিত তার কোনো পোস্টেই লাইকের সংখ্যা ৪০ পার হয়নি। অধিকাংশ পোস্টই অন্যের ওয়াল থেকে শেয়ার করা। আমি জানি না, তার ফেসবুকে কতোজন ইনগেইজড। কিন্তু ফেসবুকে এমন লেখালেখির কারণে তার কাঁধে ডিএসএ ঝুঁলিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ সত্যি বেদনাদায়ক। তার এই মৃত্যুর দায় সরকার কখনোই এড়াতে পারে না। বরং মুশতাকদের চেয়ে শতশত পেজ থেকে প্রতিদিন গুজব ছড়াচ্ছে। ভ্যাকসিনের সূত্র দিচ্ছে, দাঁড়ি গোফ গজিয়ে ফেলছে। মাইকে গুজব ছড়িয়ে পিটিয়ে মানুষ মারছে।
বরং পত্রিকাগুলোর ফেসবুক পেজগুলোতে গিয়ে দেখেন কী ধরনের মন্তব্য ছুড়ছে। মুশতাকের মৃত্যু যদি স্বাভাবিকও হয়, এরপরও রাষ্ট্র এই মৃত্যুতে অনুতপ্ত হওয়া উচিত। ডিজিটাল আইনের অপব্যবহার শুরু থেকে হয়ে আসছে, যা অনাকাক্সিক্ষত। গণতান্ত্রিক সরকারকে সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা থাকা বাঞ্ছণীয়। সব পথ বন্ধ করলে গণতন্ত্রের শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হবে এটাই স্বাভাবিক।
কথা বলার সুযোগ করে না দিলে, সমালোচনা করার সুযোগ না দিলে নিজেদের ভুল-ভ্রান্তি বুঝা যায় না। সংশোধনের সুযোগ থাকে না। কথা বলতে দিন, সমালোচনা সহ্য করুন, প্রয়োজন হলে নিজেরা সেসব সমালোচনার জবাব দিন কাজে। ভিনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমরা যদি না হতে পারি, তাহলে কখনোই আমি অন্তত নিজেকে সভ্য নাগরিক মনে করি না। ঈষৎ সংক্ষেপিত। ফেসবুক থেকে