নূর হোসেন: [২] জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
[৩] শনিবার সকাল এগারটায় শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থান শেষে হলের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। বিকেলে ফের তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
[৪] বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ঘুরে ১৬টি হলের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ দেখা যায়। মেনে নেয়া দাবি দুটি হলো-আহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ফটক নির্মাণ করা। ঢাকা ট্রিবিউন
[৫] এর আগে শুক্রবার বিকেল থেকে রাত আনুমানিক ১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাস সংলগ্ন গেরুয়ার স্থানীয় লোকজনের সাথে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের চলে দফায় দফায় সংঘর্ষ।
[৬] ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রদের ৪ টি মোটরবাইক এবং গেরুয়া বাজারের বেশকিছু দোকানপাট ভাংচুর করা হয়।
[৭] এ সময় আহত শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয় এবং গুরুতর আহতদেরকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্থানীয়রা দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর চাঁদা দাবি করাকে কেন্দ্র করে বেশকিছুদিন আগে থেকেই স্থানীয় নজরুল ইসলামের সাথে ছাত্রলীগের বাদানুবাদ চলে। বাদানুবাদকে কেন্দ্র করে ঘটনা সংঘর্ষে গড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
[৮] এক পর্যায়ে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হলেও শনিবার সকালে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের পাদদেশে জড়ো হয়। এসময় ছাত্রদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় শনিবারের মধ্যেই হল খুলে সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের উপর সন্ত্রাসী হামলার উপযুক্ত বিচার করা, আহত ছাত্রদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করাসহ প্রক্টরের বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করার দাবি জানায়। এসময় দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থান শেষে হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে।
[৯] এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিস থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হামলায় আহতাদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করাসহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে মিছিল, জমায়েত এবং হলের তালা ভাঙাকে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের পরিপন্থি বলে উল্লেখ করে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী হল খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে সিন্ডিকেটের সভায় জানানো হয়।
[১০] হলে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যেকোনো মূল্যে তারা হলে অবস্থান করবেন। ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী এলাকাকে কোনোভাবেই নিরাপদ মনে করেন না বলে জানান তারা।
[১১] এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জাবি ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্ট। বিবৃতিতে শিক্ষার্থীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে আবাসিক হল খুলে দেয়ার দাবি জানানো হয়। সম্পাদনা: জেরিন